শিরোনাম
শুক্রবার, ১৫ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

কোয়ারেন্টাইনের নামে চাঁদাবাজি

বেনাপোল চেকপোস্টে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা আদায়

বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি

কোয়ারেন্টাইনের নামে চাঁদাবাজি

যশোরের বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন দিয়ে ভারতে আটকে পড়া পাসপোর্টধারী যাত্রীদের নিয়ে কোয়ারেন্টাইন বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে সীমান্তের শক্তিশালী একটি চক্র। চেকপোস্টে কর্মরত আনসার, স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তা ও স্থানীয় কিছু সাংবাদিক এই চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। ভুক্তভোগীদের নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন থেকে অব্যাহতি পাওয়ার লোভ দেখিয়ে পাসপোর্টপ্রতি ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে চক্রটি। স্থানীয় সাংবাদিক, দায়িত্বরত আনসার সদস্য ও স্বাস্থ্য অধিদফতর কর্মীদের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা শক্তিশালী চক্রটি প্রতিদিন ভারতফেরত পাসপোর্টধারী যাত্রীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। বেনাপোল ইমিগ্রেশন দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ৬ এপ্রিল থেকে ১২ মে পর্যন্ত বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকার শর্তে বাংলাদেশে ফিরেছেন ৩ হাজার ৩৫৪ জন বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী যাত্রী। তাদের প্রাথমিক পর্যায়ে পৌর বিয়েবাড়ি এবং পরে ঝিকরগাছার গাজীর দরগা মাদ্রাসায় অস্থায়ীভাবে নির্মিত প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে পুলিশ, আনসার ও সেনা তত্ত্বাবধানে রাখা হয়। ভারতফেরতদের কোয়ারেন্টাইনের সার্বিক তদারক করছে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা  স্বাস্থ্য অধিদফতর। প্রাথমিক পর্যায়ে নিয়ম মেনে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের কার্যক্রম পরিচালিত হলেও বর্তমানে সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে ভারতফেরত যাত্রীদের নিমিত্তে গঠিত ব্যাবস্থপনা কমিটির কার্যক্রম। কর্তব্যরতদের বিরুদ্ধে উঠেছে অর্থবাণিজ্যের অভিযোগ। টাকার বিনিময়ে পাঠানো হচ্ছে হোম কোয়ারেন্টাইনে। আনসার সদস্য তৈয়ব, স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সহযোগী আইয়ুব আলী, উপজেলা স্বাস্থ্য অধিদফতরের মেডিকেল অফিসার ডা. আবু তাহের ও স্বাস্থ্য সহকারী শাহানাজের বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে হোম কোয়ারেন্টাইন ছাড়পত্র ইস্যু করার অভিযোগ মিলেছে। যদিও তারা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। সরেজমিন বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনে গিয়ে নানা অনিয়মের চিত্র ধরে পড়ে। সরকারি নির্দেশনার দোহাই দিয়ে এক কর্মকর্তা বলেন, ‘৬৫ বছরের ওপরের ব্যক্তিদের যেমন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখার নিয়ম নেই, তেমনি ক্যান্সারের রোগীসহ গুরুতর রোগীদের কোয়ারেন্টাইনে রাখার নিয়ম নেই।’ প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের একটি সূত্র থেকে জানা গেছে ভারতফেরত পাসপোর্টধারী যাত্রীদের অর্ধেক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে আছেন। বাকি অর্ধেক টাকার বিনিময়ে হোম কোয়ারেন্টাইনে চলে গেছেন। বেনাপোল পৌর বিয়েবাড়িতে থাকা ভারতফেরত পাসপোর্টধারী যাত্রীদের রয়েছে কর্মরতদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কর্মকর্তা ডা. ইউছুফ আলী মুঠোফোনে জানান, দ্রুত সমস্যা সমাধানে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা বিষয়ে শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পুলক কুমার ম-ল বলেন, ‘ইতিমধ্যে বিষয়টি অবগত হয়ে উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশনা দিয়েছি। দ্রুত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে দুর্নীতিগ্রস্তদের আইনের আওতায় আনা হবে।

সর্বশেষ খবর