মঙ্গলবার, ১৯ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

সিলেটে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ঈদবাজার

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সিলেটে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ঈদবাজার

করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে সিলেট বিভাগের মধ্যে সিলেট জেলা ছিল পেছনের সারিতে। কিন্তু ১০ মের পর থেকে ক্রমেই সামনের দিকে আসতে শুরু করে। বর্তমানে করোনা আক্রান্তে শীর্ষে সিলেট জেলা। মূলত বিপণিবিতান, দোকানপাট খুলতে শুরু করায় সিলেট জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এই বিষয়টি আঁচ করতে পেরে সিলেটে ব্যবসায়ী নেতারা ঈদ সামনে রেখে দোকানপাট ও মার্কেট না খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু কয়েকটি মার্কেট সেই সিদ্ধান্ত না মেনে দোকান খুলেছে। এসব মার্কেটে বাড়ছে ভিড়। ফলে করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় আতঙ্ক বিরাজ করছে সচেতন মানুষের মধ্যে। জানা গেছে, সরকার সারা দেশে ১০ মে থেকে বিপণিবিতান, মার্কেট সীমিত পরিসরে খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৮ মে সিলেটে ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। ওই বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়, সিলেটে করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে ঈদের আগে মার্কেট বা বিপণিবিতান খোলা হবে না। সে সিদ্ধান্তে সিংহভাগই বিপণিবিতানই বন্ধ রাখা হয়। কিন্তু নগরীর বন্দরবাজারের হাসান মার্কেট ও লালদীঘি (পুরনো) হকার্স মার্কেট সিদ্ধান্ত অমান্য করে দোকানপাট খুলে দেয়। এতে তীব্র সমালোচনার মুখে মার্কেট দুটির কর্তৃপক্ষ। ১৪ মে এ মার্কেট দুটির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন মেয়র আরিফ। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৫ মে থেকে এগুলো বন্ধ রাখা হয়। কিন্তু গতকাল থেকে ফের এসব মার্কেট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া নগরীর মার্কেটের বাইরের বেশ কিছু সংখ্যক কাপড় ও জুতার দোকানও খোলা হচ্ছে নিয়মিত। নগরী ঘুরে দেখা গেছে, সিলেট জেলা লকডাউনে থাকলেও সড়কে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ছোট আকারের যানবাহন চলাচল করছে। রাস্তাঘাটেও বিপুলসংখ্যক মানুষের আনাগোনা। বিশেষ করে খোলা রাখা মার্কেটগুলোতে মানুষের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মানার চিত্র চোখে পড়েনি। বেশিরভাগ ক্রেতা-বিক্রেতাই মাস্ক ও গ্লাভস ছাড়াই বেচাকেনা করছেন। এ ছাড়া মার্কেট ও দোকানপাটে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবহারও দেখা যায়নি। এই অবস্থায় সিলেটে করোনার সংক্রমণ ভয়াল রূপ ধারণ করার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। স্বাস্থ্য অধিদফতর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে সিলেটে করোনাক্রান্তের হার বাড়তে শুরু করেছে। এর কারণ মার্কেটে, হাটবাজারে লোকসমাগম ও মানুষের অসচেতনতা। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে সিলেটকে চরম মূল্য দিতে হবে।’ এদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি তদারকি করা হচ্ছে। গতকালও নগরীর জিন্দাবাজার ও বন্দরবাজারে ছয়টি দোকান মালিককে স্বাস্থ্যবিধি না মানায় ১০ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়। এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের কয়েকটি টিম মাঠে কাজ করছে। স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে কিনা, তা কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। কেউ অমান্য করলে করা হচ্ছে জরিমানা। এই তৎপরতা অব্যাহত থাকবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর