মঙ্গলবার, ১৯ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনায় বিদ্যুতের ভুতুড়ে বিল আসছে রাজশাহীতে

চরম ভোগান্তিতে নগরবাসী, প্রতিকার নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীর নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (নেসকো) এপ্রিল মাসের বিদ্যুৎ বিল নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী। মিটার রিডিং না দেখে অফিস থেকে মনগড়া বিদ্যুতের বিল করার জন্য হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে গ্রাহকদের। প্রতিনিয়ত এমন ঘটনা ঘটলেও কোনো সুরাহা হচ্ছে না। গ্রাহকরা একের পর এক অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। নগরীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও বিল করা হয়েছে কয়েকগুণ। নেসকো কর্তৃপক্ষ বলছেন, মুদ্রণ প্রমাদের কারণে এমন ভুল হয়েছে। নেসকো অফিসের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, রাজশাহীতে নেসকোর অধীনে প্রায় দুই লাখ গ্রাহক আছেন। এর মধ্যে অনেক গ্রাহক এপ্রিল মাসের বিল বিষয়ে অভিযোগ দিয়েছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এবার গ্রাহকদের বিদ্যুতের বিল বেশি করা হয়েছে। বিদ্যুৎ বিল দেওয়া হলেও মিটার রিডিং দেখা হয়নি। অফিসে বসে মনগড়াভাবে তৈরি করা বিদ্যুৎ বিল গ্রাহকরা পেয়েছেন। এতে দেখা গেছে মার্চ মাসে যে গ্রাহকের এক হাজার টাকা বিল এসেছে, এপ্রিল মাসে তা দাঁড়িয়েছে দেড় হাজার টাকায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর শিক্ষা স্কুল অ্যান্ড কলেজ লকডাউনের আগে থেকে বন্ধ আছে। স্কুলে জ¦লে না লাইট, ঘোরে না ফ্যান। এরপরও মার্চ মাসে এই প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ বিল দেওয়া হয়েছে ৫ হাজার ২০০ টাকা, পরের মাস এপ্রিলে বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ এসে দাঁড়িয়েছে ৬৯ হাজার ১৮০ টাকা। এর আগে ফেব্রুয়ারিতে বিল দেওয়া হয়েছিল ৪ হাজার ৩০০ টাকা। এ ছাড়া নগরীর তালাইমারী এলাকার গ্রিন ফিল্ড স্কুলে এপ্রিল মাসের বিল দেওয়া হয়েছে একটি মিটারে ২৭ টাকা ও অপর একটি মিটারে ২৯ টাকা। যদিও এ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এই পরিমাণ বিল আসার পর দ্রুত পরিশোধ করা হয়েছে।

এ ছাড়া নগরীর ষষ্টিতলা মসজিদের সামনের বাড়ির মালিক জাহিদ হোসেনের বাড়িতে মার্চ মাসে বিল আসে দেড় হাজার টাকা। কিন্তু এপ্রিল মাসের বিল দেওয়া হয়েছে সাড়ে তিন হাজার টাকা। তিনি তার ওই বাড়িটি ছাত্রাবাস হিসাবে ব্যবহার করেন। মার্চ মাসের আগেই শিক্ষার্থীরা চলে গেছেন, যার কারণে সন্ধ্যার লাইটটিও জ¦লে না তার বাসায়। তারপরও এই বিল দেখে তিনি হতবাক।

নগরীর শিক্ষা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ইব্রাহীম হোসেন জানান, বিদ্যুৎ বিল কমবেশি হতে পারে। কিন্তু এত কমবেশি মেনে নেওয়ার মতো নয়। তিনি জানান, ফেব্রুয়ারিতে নেসকো বিল স্বাভাবিকের চেয়ে এক হাজার টাকা বেশি দেয়। পরের মাস মার্চে আবারও এক হাজার বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু এপ্রিলে এসে ৬৯ হাজার ১৮০ টাকা কী করে মেনে নেওয়া যায়?

একই কথা জানান ষষ্টিতলার জাহিদ হাসান। তিনি অভিযোগ করেন, বাসার ভিতর মিটার। যদি বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন মিটার রিডিং দেখতে আসেন তাহলে তাদের ডাকতে হবে। কিন্তু গত চার মাসে নেসকো অফিস থেকে কেউ মিটার রিডিং দেখতে আসেননি। অফিস থেকেই মনগড়াভাবে বিল দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

নেসকোর নির্বাহী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম জানান, করোনাভাইরাসের কারণে আগের মাসের বিল দেখে সমন্বয় করে বিল করা হয়। কিন্তু এত কমবেশি হওয়ার কোনো কারণ নেই। যেটা হয়েছে সেটা মুদ্রণ প্রমাদ। তিনি বলেন, যাদের বিল বেশি এসেছে তারা অফিসে যোগাযোগ করলে বিল ঠিক করে দেওয়া হবে।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর