বরিশালের ঈদ বাজারে দোকান খোলা-বন্ধের খেলা চলছে। স্বাস্থ্য বিধি না মানায় জেলা প্রশাসন গতকাল থেকে মুদি এবং ওষুধ ব্যতীত বরিশালের সব ঈদ বাজার বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু এই নির্দেশ উপেক্ষা করে নগরীর চকবাজার, কাঠপট্টি, পদ্মাবতি ও বাজার রোডে ভিন্ন কৌশলে চলছে কেনাবেচা। সাটারের সামনে লোক দাঁড় করিয়ে ক্রেতাকে ভিতরে ঢুকিয়ে ফের সাটার আটকে দোকানে চলে বেচাকেনা। এরই মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালাচ্ছে, সতর্ক করছে, করছে জরিমানাও। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় স্বাস্থ্য বিধি মানার শর্তে ১০ মে থেকে ঈদ কেন্দ্রিক দোকান খোলার অনুমতি দেয়। কিন্তু ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিলে এতে অনুপ্রাণিত হয়ে বরিশাল সিটি মেয়রের অনুরোধে বরিশালের ব্যবসায়ীরাও দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন। দুই দিন দোকান বন্ধ থাকলেও তৃতীয় দিনে এসে গত ১৩ মে সব দোকান খুলে দেয় ব্যবসায়ীরা।

মার্কেট-দোকান খোলায় ঈদ বাজারে কেনাকাটায় হুমড়ি খেয়ে পড়েন ক্রেতা। এতে চরমভাবে লঙ্ঘিত হয় স্বাস্থ্য বিধি। শারীরিক দূরত্ব রক্ষাসহ স্বাস্থ্য বিধি একেবারেই মানছিলেন না ক্রেতা-বিক্রেতা কেউই। এতে করোনা সংক্রমণ ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেওয়ায় বাধ্য হয়ে ফের দোকান বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় জেলা প্রশাসন। গত সোমবার রাতে এক গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে গতকাল থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত মুদি ও ফার্মেসি ব্যতীত বরিশালে ঈদ কেন্দ্রিক সব দোকান-মার্কেট বন্ধের নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান। এই নির্দেশের পর নগরীর প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্র চকবাজার, কাঠপট্টি ও পদ্মাবতিসহ আশপাশের এলাকার বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ করা হলেও ফাঁকফোকর গলে কিছু দোকান কৌশলে খুলছে। দোকানের সামনে কর্মচারী দাঁড় করিয়ে সাটার খুলে ক্রেতাকে ভিতরে ঢুকিয়ে চলে অনেক দোকানের বেচাকেনা। প্রশাসনের গাড়ির শব্দ পেলেই বন্ধ হয়ে যায় দোকানের সাটার।

দোকান বন্ধের সরকারি নির্দেশ বাস্তবায়নে সেনাবাহিনী ও র‌্যাবের সহায়তায় নগরীর প্রধান প্রধান ঈদ বাজারে নজরদারি করেছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাজমুল হুদার ভ্রাম্যমাণ আদালত। বরিশাল নগরীর এবং জেলার তিন উপজেলায় পরিচালিত ছয়টি পৃথক ভ্রাম্যমাণ আদালত ৩৩টি মামলার বিপরীতে ৫৭ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছে। জনস্বার্থে এই অভিযান চলবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাজমুল হুদা, রুমানা আফরোজ, শাহাদাৎ হোসেন, রাসেল ইকবাল, রুম্পা ঘোষ ও আলী সুজা।