শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ২১ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

চাহিদা না থাকা সত্ত্বেও বিদ্যুৎ কেন্দ্র, সংকট বাড়িয়েছে : টিআইবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

সঠিক পরিকল্পনার ঘাটতি এবং চাহিদা না থাকার পরও শুধুমাত্র ব্যবসায়িক কারণে একের পর এক কয়লা ও তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের ফলে জ্বালানি খাতে সংকট আরও প্রকট হয়েছে- এ কথা বলেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। গতকাল এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, এমন স্ববিরোধী অবস্থান থেকে সরে এসে জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত প্যারিস চুক্তির আলোকে সরকার প্রতিশ্রুত ২০৫০ সাল নাগাদ পরিবেশবান্ধব এবং আর্থিকভাবে সাশ্রয়ী নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিশ্চিতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। অলস বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে ভর্তুকি প্রদান করাকে কৃষকের জন্য নির্ধারিত ভর্তুকির চেয়ে প্রাধান্য দেওয়া চরম বৈষম্যমূলক।

এর ফলে কৃষকরা যেমন বঞ্চিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে তেমনি ধনাঢ্য অযাচিত ভর্তুকির বোঝাও বাস্তবে কৃষকসহ সাধারণ মানুষকে বইতে হবে। এ জন্য এ ধরনের গণবিরোধী পদক্ষেপ থেকে সরে এসে বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে ভর্তুকি প্রদান বন্ধ করতে হবে। একই সঙ্গে দ্রুত বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহ আইন-২০১০ বাতিল করতে হবে এবং পাওয়ার সিস্টেম মাস্টার প্লান-২০১৬-কে নতুন করে ঢেলে সাজাতে হবে।

ড. ইফতেখারুজ্জামানের মতে, সরকারের বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্য এবং নির্ভরযোগ্য আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশের বিদ্যুৎ সক্ষমতার একটি বড় অংশ অব্যবহৃত থাকায় বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভাড়া ও ভর্তুকি হিসেবে রাষ্ট্রের গগনচুম্বী অপচয়ের বোঝা জনগণের সামর্থ্যরে বাইরে চলে গেছে। তিনি রেন্টাল বিদ্যুৎ পদ্ধতি যত শিগগির সম্ভব বাতিলসহ ‘পাওয়ার সিস্টেম মাস্টার প্ল্যান-২০১৬’ কে নতুন করে ঢেলে সাজানোর আহ্বান জানান।

টিআইবি জানায়, দেশের বিদ্যুৎ সক্ষমতার একটি বড় অংশ বর্তমানে অলস বসে থাকায় ২০২০ সালের এপ্রিল-জুন পর্যন্ত এ খাতে মোট ১৫ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হবে। সম্প্রতি লন্ডনভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিকস ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালিসিস (আইইইএফএ)-এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, চাহিদার চেয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্র বেশি স্থাপন করায় সরকারকে ৫৭ শতাংশ বিদ্যুৎ কেন্দ্র অলস বসিয়ে রাখতে হচ্ছে। কভিড-১৯ উদ্ভূত পরিস্থিতি আরও দীর্ঘ হলে অব্যবহৃত বিদ্যুৎ সক্ষমতার অপচয়বাবদ এপ্রিল-ডিসেম্বর পর্যন্ত ক্ষতির পরিমাণ ৩৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকায় দাঁড়াবে। এমতাবস্থায় বিদ্যুৎ বিভাগ ইতিমধ্যে সরকারের কাছে ১৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ চাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অন্যদিকে, সরকারের পাওয়ার সেল জ্বালানি খাতে ভর্তুকি অব্যাহত রাখার স্বার্থে সেচের জন্য কৃষককে প্রদেয় ভর্তুকির টাকা কৃষি মন্ত্রণালয়কে না দিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগকে প্রদানের যে সুপারিশ করেছে তা অন্যায্য।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর