করোনার এই দুঃসময়ে সিলেটে সেবা দেওয়া থেকে নিজেদের গুটিয়ে রেখেছে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক। সামান্য জ্বর, কাশি বা শ্বাসকষ্ট দেখলেই রোগীদের ফিরিয়ে দিচ্ছেন হাসপাতাল থেকে। হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ঘুরতে ঘুরতে অ্যাম্বুলেন্সে অথবা বাসায় ফিরে বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছেন রোগীরা। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ। হাসপাতালে ঘুরতে ঘুরতে চিকিৎসা না পেয়ে দুই নারী মারা যাওয়ার ঘটনার পর এবার কিছুটা কঠোর হতে যাচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। চিকিৎসা না দিয়ে রোগী ফিরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় বেসরকারি ৬টি হাসপাতাল ও ক্লিনিককে লিখিতভাবে সতর্ক করা হয়েছে। এরপর ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সিলেট স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান। কভিড-১৯সহ বা এর উপসর্গ থাকা সকল রোগীকে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তির নির্দেশ দিয়েছে সরকার। কিন্তু সেই নির্দেশ মানছে না সিলেটের কোন বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক। গত ৩১ মে রাতে সিলেট নগরীর কাজিরবাজার মোগলটুলার শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত মনোয়ারা বেগম নামের এক নারীকে নিয়ে ৬টি হাসপাতালে ঘুরেন তার স্বজনরা। কিন্তু কোনো হাসপাতালই তাকে চিকিৎসা দেয়নি। অবশেষে অ্যাম্বুলেন্সেই মারা যান ওই নারী। একই রাতে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল কালিঘাট এলাকার এক নারীকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় নিয়ে আসা হয় সিলেটে। কিন্তু ৭টি হাসপাতাল ঘুরে ওই নারীও কোনো চিকিৎসা পাননি। পরে অ্যাম্বুলেন্সেই তিনি মারা যান। দেশের সব সরকারি-বেসরকারি সব হাসপাতালে কভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার সরকারি নির্দেশনা থাকলেও সিলেটে সামান্য জ্বর বা শ্বাসকষ্ট থাকলেই চিকিৎসা দেয়া বিরত থাকছে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলো। এদিকে, গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ প্রতিদিনে ‘ছয় হাসপাতাল ঘুরে এ্যাম্বুলেন্সেই মারা গেলেন নারী’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। ওই সংবাদ প্রকাশের পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট অফিস থেকে অভিযুক্ত হাসপাতালগুলোকে লিখিতভাবে সতর্ক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে সিলেট স্বাস্থ্য অফিসের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান জানান, ‘পত্রিকায় সংবাদ দেখে অভিযুক্ত হাসপাতালগুলোকে সতর্ক করা হয়েছে। পরবর্তীতে এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’