শনিবার, ৬ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

ঝুঁকিতে চসিকের কাউন্সিলর প্রার্থীরা

করোনা ভাইরাস
মারা গেছেন বর্তমান কাউন্সিলরসহ ৩ জন আক্রান্ত অনেকেই

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

ঝুঁকিতে চসিকের কাউন্সিলর প্রার্থীরা

করোনা পরিস্থিতি জেনেও এলাকার মানুষের সেবায় নিয়োজিত ছিলেন সব সময়। জনপ্রতিনিধি হিসেবে করোনায় অসহায় সাধারণ মানুষদের পাশে দাঁড়ান। একজন প্রার্থী হওয়ার পাশাপাশি নিয়মিত ভোটারদের খোঁজ-খবরও নিচ্ছেন সব সময়। করোনা আতঙ্ক ও ঝুঁকির মধ্যেও চসিকের কাউন্সিলর প্রার্থীদের অনেকেই মাঠে কাজ করছেন। এ অবস্থায় বর্তমান কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত মহিলা আসনের কাউন্সিলর প্রার্থীসহ তিনজন করোনায় মারা গেছেন। অনেকেই বলছেন, যতটুকু সম্ভব দূরত্ব বজায় রেখেই কাজ করে যেতে হবে। এতে অনেকেই মাঠে আছেন, আবার অনেকেই নেই। তবুও আক্রান্ত হলেও মাঠে থাকবেন বলে জানান বর্তমান কাউন্সিলরসহ অনেক কাউন্সিলর প্রার্থী।  নির্বাচন কমিশন ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতির কারণে স্থগিত হওয়া গত ২৯ মার্চ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) নির্বাচনে নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে সংরক্ষিত আসনে ৫৬ জন এবং সাধারণ ওয়ার্ডে (পুরুষ) ১৬১ জন কাউন্সিলর প্রার্থী ছিলেন। এর মধ্যে মেয়র পদেও ছিলেন আওয়ামীলী-বিএনপিসহ ৬ জন প্রার্থী। নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থীরা ব্যাপক প্রচার-প্রচারণাও চালিয়েছেন। হঠাৎ করোনা পরিস্থিতির অবনতির দিকে গেলে নির্বাচন কমিশন চসিক নির্বাচন স্থগিত করে দেন। এরপর থেকেই সাধারণ ভোটাররাসহ গরিব-অসহায় মানুষদের পাশে ছিলেন স্ব স্ব ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলরসহ অধিকাংশ কাউন্সিলর প্রার্থী। দিন যতই বাড়ছে চট্টগ্রামে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে। এতে সাধারণ মানুষের সেবা করতে গিয়ে বর্তমান কাউন্সিলরসহ তিনজন প্রার্থী নানা উপসর্গ নিয়ে মারা গেলেন। তারা হলেন- কাউন্সিলর প্রার্থী হাসান মুরাদ, বর্তমান কাউন্সিলর মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী ও বিএনপির মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী শাহেদা বেগম। আক্রান্ত হয়েছেন বেশ কয়েকজন কাউন্সিলরও। আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছেন ৩৩ নং ওয়ার্ডের পরিবারের সদস্যরাসহ হাসান মুরাদ বিপ্লব, ৩৭ নং ওয়ার্ডের শফিউল আলম, মোরশেদ আকতার, মোরশেদ হোসেন, ২০ দেয়ান বাজার ওয়ার্ডের প্রার্থী রফিকুল ইসলাম বাপ্পীসহ আরও বেশ কয়েকজন। কাউন্সিলর প্রার্থীদের নিহত পরিবারের সদস্যরা বলছেন, ঝুঁকি নিয়েও এলাকার গরিব অসহায়দের পাশে থেকে নিয়মিত ত্রাণ সামগ্রীসহ নানাবিধ খোঁজখবর নিতেন। একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে সঠিক দূরত্ব বজায় রাখাও সম্ভব হয়নি। কোনো না কোনোভাবেই করোনা আক্রান্ত কারও ছোঁয়াতেই আক্রান্ত হন তারা। চসিকের ৭ নং পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ও বর্তমান কাউন্সিলর মো. মোবারক আলী বলেন, চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন স্থগিত হলেও প্রার্থীরা প্রতিটি ওয়ার্ডেই কাজ করে যাচ্ছেন। প্রতিটি এলাকায় গরিব-অসহায় মানুষদের পাশে থেকেই নিয়মিত সরকারি ও ব্যক্তিগতভাবে ত্রাণসামগ্রী ও করোনায় নিরাপত্তাজনিত জিনিসপত্রগুলো সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে করে অনেকেই ইতোমধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন এবং বর্তমান কাউন্সিলরসহ প্রার্থী মারা গেছেন। চসিক সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ মে চসিকের ৩০ নম্বর পূর্ব মাদারবাড়ি ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী (৫২) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আক্রান্ত হয়ে তিনি ঢাকার আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

গত ২৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বাকলিয়া এলাকার ১৭, ১৮ ও ১৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থী শাহেদা বেগমও (৫৫) করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তিনি নগর বিএনপির সদস্য ও নগর মহিলা দলের সহ-সভাপতি ছিলেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর