শনিবার, ৬ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

সিলেটে রিপোর্ট নিয়ে ভোগান্তি

টেস্টে লাগে পাঁচ দিন নেগেটিভ রিপোর্ট মেলে না ১০ দিনেও

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

ঈদের পর থেকে সারা দেশের মতো সিলেটেও বেড়ে গেছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সামান্য উপসর্গ দেখা দিলেই মানুষ ভিড় করছেন নমুনা পরীক্ষার জন্য। শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতাল ও সিলেটের বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন শত শত মানুষ টেস্টের জন্য তাদের নমুনা প্রদান করছেন। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের ল্যাবে প্রতিদিন ১৮৮টি নমুনা পরীক্ষার সক্ষমতা থাকলেও নমুনা আসছে পাঁচশ’য়ের উপরে। নমুনা জমে যাওয়ায় টেস্টে হচ্ছে বিলম্ব। টেস্টের পর পজেটিভ রোগীদের সঙ্গে সঙ্গেই জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে তাদের রিপোর্ট। কিন্তু বিপাকে পড়ছেন নেগেটিভ রিপোর্ট আসা রোগীরা। সপ্তাহ ১০ দিন চলে গেলেও তারা জানতে পারছেন না তাদের রিপোর্ট। করোনার উপসর্গ নিয়ে ছুটিতে থাকা অনেক চাকরিজীবী রিপোর্ট না পাওয়ায় কর্মস্থলেও যোগ দিতে পারছেন না। গত ৩০ মে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে নমুনা প্রদান করেন সিলেট নগরীর শাপলাবাগের এক ব্যাংক কর্মকর্তা। তিনি সর্দি, জ¦র ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। করোনার উপসর্গ থাকায় তিনি ব্যাংক থেকে ছুটি নিয়ে বাসায় আইসোলেশনে রয়েছেন। গত এক সপ্তাহেও তিনি জানতে পারেননি পরীক্ষায় তার রিপোর্ট কী এসেছে? গত কয়েক দিনে তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলেও করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট না থাকায় তিনি পুনরায় কর্মস্থলে যোগ দিতেও পারছেন না। এদিকে, ওসমানী মেডিকেল কলেজের ল্যাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে তার পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ এসেছে। কিন্তু রিপোর্টের ব্যাপারে তাকে এখনো কিছুই জানানো হয়নি। ওই ব্যাংক কর্মকর্তার মতো প্রতিদিন নেগেটিভ রিপোর্ট আসা রোগীরা তাদের রিপোর্ট পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে সপ্তাহ ১০ দিন পর ঢাকা স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে এসএমএস পাঠিয়ে নেগেটিভ রিপোর্টের তথ্য দেওয়া হচ্ছে।  এ ব্যাপারে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও করোনা পরীক্ষার ল্যাব প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. ময়নুল হক জানান, ‘ওসমানীর ল্যাবে প্রতিদিন ১৮৮টি নমুনা পরীক্ষার সক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু প্রতিদিন নমুনা আসছে পাঁচশয়ের মতো। বর্তমানে ল্যাবে জমা রয়েছে প্রায় ১২শ’ নমুনা। এগুলো পরীক্ষা করতে আরও এক সপ্তাহ প্রয়োজন। তাই নমুনা সংগ্রহের পর টেস্ট করতে দু’-তিন দিন সময় লাগছে।’ তিনি আরও জানান, ‘ওসমানীর ল্যাবে নমুনা জট সৃষ্টি হওয়ায় এখন পরীক্ষার জন্য ঢাকায় নমুনা পাঠাতে হচ্ছে। ঢাকা থেকে টেস্ট হয়ে রিপোর্ট আসতে কয়েক দিন সময় লেগে যায়।’ নেগেটিভ রিপোর্ট প্রাপ্তিতে বিলম্ব হওয়া প্রসঙ্গে ডা. ময়নুল হক জানান, ‘টেস্টের পর পজেটিভ রিপোর্ট সঙ্গে সঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হয়। পরের দিন নেগেটিভ রিপোর্টের তালিকা তৈরি করে স্বাস্থ্য অধিদফতর, সিভিল সার্জন অফিস, শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতাল ও সব উপজেলায় পাঠানো হয়। সেখান থেকে সংশ্লিষ্টরা যোগাযোগ করে নেগেটিভ রিপোর্ট সংগ্রহ করতে হয়। ল্যাব থেকে কাউকে নেগেটিভ রিপোর্ট জানানো হয় না।

তবে কারও বিশেষ কোনো প্রয়োজন হলে নেগেটিভ রিপোর্টের সার্টিফিকেট সরবরাহ করা হয়।’

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর