মঙ্গলবার, ৯ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

খুলনায় বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবায় বেহাল দশা

চাকরিচ্যুত দুই-তৃতীয়াংশ স্বাস্থ্যকর্মী

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

করোনা পরিস্থিতিতে খুলনায় বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা ভেঙে পড়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের জরুরি রোগীদের ভর্তি নিচ্ছে না অনেক হাসপাতাল। পাশাপাশি ব্যয়ভার কমাতে দুই-তৃতীয়াংশ কর্মচারী ও স্বাস্থ্যকর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘বেসরকারি হাসপাতালে সেবা পাওয়া যাবে না’-এই ভাবনায় একদিকে সেখানে রোগীরা আসা কমিয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে রোগী কমতে থাকায় স্বাস্থ্যকর্মীদের বেতনসহ আনুষঙ্গিক ব্যয়ভার নিয়ে মহাসংকটে পড়েছে ক্লিনিকগুলো। জানা যায়, খুলনার বেসরকারি হাসপাতাল অধিকাংশ ক্ষেত্রে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক বা অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের ওপর ভরসা করে পরিচালিত হয়। কিন্তু করোনায় চিকিৎসকরা ব্যক্তিগত সুরক্ষার অজুহাতে প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধ করে দেওয়ায় বড় ধাক্কা লেগেছে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবায়। খুলনার প্রাইভেট মেডিকেল প্র্যাকটিশনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. গাজী মিজানুর রহমান বলেন, বেসরকারি হাসপাতালে রোগী কমেছে ১০ ভাগের ৯ ভাগ। এতে চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের বেতনসহ ব্যয়ভার বহন করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। ফলে অনেক প্রতিষ্ঠানই ইনডোর, আউটডোর, ডায়াগনস্টিক, অপারেশন কার্যক্রম সীমিত করেছে। পাশাপাশি অর্থনৈতিক সংকটে কর্মচারীদের ধরে রাখতে পারছে না। তবে এ সংকটের পেছনে স্বাস্থ্য খাতে অব্যবস্থাপনা ও দূরদর্শিতার অভাবকে দায়ী করেছেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন বিএমএ খুলনার সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম। তিনি বলেন, খুলনার প্রাইভেট হাসপাতালগুলো এখন রোগীশূন্য, চিকিৎসকশূন্য। তারা শুধু একটা কাঠামো নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

তিনি মনে করেন, চিকিৎসকের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামের (পিপিই) স্বল্পতা এবং সাধারণ রোগীরা যে করোনা আক্রান্ত নন, তা নিশ্চিত না হওয়ার কারণেই মূলত চিকিৎসা ব্যবস্থায় এ সংকট দেখা দিয়েছে। আর চিকিৎসাসেবার এ অবস্থায় শঙ্কিত হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ।

অন্যদিকে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবায় চিকিৎসকদের মনোবল ফিরিয়ে আনতে পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদী নেওয়াজ। তিনি বলেন, দেশের ৬০ ভাগ মানুষ এখনো চিকিৎসা নেয় বেসরকারি হাসপাতালে। সেক্ষেত্রে সরকারি স্বাস্থ্যসেবার মতোই বেসরকারি পর্যায়ে চিকিৎসকের প্রণোদনার ব্যবস্থা করা গেলে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর