শিরোনাম
বুধবার, ১০ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

কঠোর অ্যাকশনে সিসিক

দুটি মার্কেট বন্ধে মেয়রের নির্দেশ

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সিলেটে একদিকে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। আর অন্যদিকে বাড়ছে মানুষের বেপরোয়া চলাচল। কোথাও কেউ মানছে না স্বাস্থ্যবিধি। ফলে দিন দিন চরম অবনতির দিকেই যাচ্ছে সিলেটের করোনা পরিস্থিতি। সিলেটে প্রতি তিনজনের নমুনা পরীক্ষায় মিলছে একজন আক্রান্ত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন রাস্তাঘাট ও মার্কেটে মানুষের বেপরোয়া চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে সামনে তৈরি হবে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি। এই অবস্থায় নগরীতে কঠোর অ্যাকশনে নেমেছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)। রাস্তা ও ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদের পাশাপাশি নগরীর সবচেয়ে ব্যস্ততম দুটি মার্কেট বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। ঈদের আগে লকডাউন শিথিলের পরই সিলেটের রাস্তাঘাটে মানুষের ঢল নামে। খুলে দেওয়া হয় সবধরনের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান। এতে দোকানপাট ও মার্কেটগুলোতে বাড়তে থাকে ভিড়। এরপর থেকে আশঙ্কাজনকভাবে করোনা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে থাকে। ঈদের পর থেকে প্রতিদিন শুধু সিলেট জেলায় অর্ধশতাধিক লোক করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হতে থাকেন। মানুষের বেপরোয়া চলাচলের কারণে ঝুঁকিতে পড়ে পুরো নগরী। লকডাউনের শুরুতে প্রশাসনের কড়াকড়ি ও নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও ধীরে ধীরে সবকিছু শিথিল হয়ে পড়ে। কমে যায় প্রশাসনের নজরদারি। ফলে মানুষও হয়ে ওঠেন বেপরোয়া। বিশেষ করে, প্রতিদিন নগরীর বন্দরবাজার এলাকা হয়ে ওঠে সবচেয়ে ব্যস্ততম। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ওই এলাকায় লেগে থাকে দীর্ঘ যানজট। বন্দরবাজারের আশপাশের মার্কেট আর ফুটপাতে সারা দিনই লেগে থাকে ক্রেতাদের ভিড়। আর এতেই বাড়তে থাকে সংক্রমণ। এমতাবস্থায় গতকাল সকালে অ্যাকশনে নামে সিলেট সিটি করপোরেশন। মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয় বন্দরবাজারের হাসান মার্কেট ও লালদিঘী হকার্স মার্কেটে। গিঞ্জি আকারের এই দুটি মার্কেটে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার মতো কোনো পরিবেশ নেই।

 স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো গরজ দেখাচ্ছেন না। এ অবস্থা দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে মার্কেট দুটি এক সপ্তাহ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। নির্দেশ অমান্য করে কেউ দোকান খুললে তার ট্রেড লাইসেন্স বাতিলসহ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ারও ঘোষণা দেন তিনি। মেয়রের এই নির্দেশের পর গতকাল বিকাল থেকেই বন্ধ হয়ে যায় মার্কেট দুটি। এরপর মেয়র আরিফের নির্দেশে নগরীর বন্দরবাজার ও জিন্দাবাজার এলাকার রাস্তা ও ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদ করা হয়।

এ ব্যাপারে সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, হাসান মার্কেট ও লালদিঘী হকার্স মার্কেট দুটিতে স্বাস্থ্যবিধি মানার মতো কোনো পরিবেশই নেই। কিন্তু প্রতিদিন মার্কেট দুটিতে মানুষ ভিড় করছেন। এতে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে। দুটি মার্কেটের জন্য পুরো নগরীর মানুষকে হুমকির মুখে ফেলা যায় না। তাই বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফুটপাত থেকেও হকার উচ্ছেদ করা হয়েছে। এখন থেকে যারাই স্বাস্থ্যবিধি মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে সিটি করপোরেশন কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে, সিলেটে আশঙ্কাজনকভাবে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে বিভাগীয় স্বাস্থ্য অফিসের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান বলেন, ঈদের সময় কিছু মার্কেট খোলা থাকায় কেনাকাটা করতে মানুষ ভিড় করেছেন। পুরো নগরীতেই উৎসবের আমেজ ছিল। এই সময়ই করোনার সংক্রমণ বেড়েছে। এখনো মানুষ বেপরোয়াভাবে চলাচল করছেন। এগুলো থামানো না গেলে সামনে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর