বৃহস্পতিবার, ১১ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা
নমুনা পরীক্ষা

রিপোর্ট পাওয়ার আগেই সুস্থ হয়ে যান আক্রান্তরা

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

করোনার উপসর্গ দেখা দেওয়ায় ৩১ মে পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়েছিলেন সিলেটের এক সরকারি কর্মকর্তা। ৮ জুন এসেছে তার রিপোর্ট। নমুনা পরীক্ষায় তার শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ফোনে যখন তাকে পজেটিভ রিপোর্টের কথা জানানো হয় তখন তিনি সুস্থ হওয়ার পথে। অর্থাৎ করোনা আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হওয়ার সময় ওই কর্মকর্তা জানতে পারেন তার রিপোর্ট পজেটিভ ছিল। উপসর্গ বেশি থাকায় তিনি ছুটি নিয়ে বাসায় আইসোলেশনে ছিলেন। ফলে তার কাছ থেকে অন্য কেউ সংক্রমিত হননি। তবে ব্যতিক্রম ঘটনাও ঘটছে অনেক। এই সরকারি কর্মকর্তার মতো এখন সিলেটে করোনার রিপোর্ট পেতে প্রায় সবারই সময় লাগছে এক সপ্তাহ থেকে ১০ দিন। একটিমাত্র পিসিআর মেশিন দিয়ে নমুনা পরীক্ষা করতে গিয়ে সংশ্লিষ্টদেরও হিমশিম খেতে হচ্ছে। যার ফলে সঠিক সময়ে সংশ্লিষ্টদের রিপোর্ট জানাতে পারছেন না। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের ল্যাবে সিলেট জেলার সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষা হয়ে থাকে। ওই ল্যাবে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ১৮৮টি নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব। কিন্তু প্রতিদিন সিলেট মহানগরী ও জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসছে প্রায় পাঁচশ নমুনা। এতে ওসমানী মেডিকেল কলেজের ল্যাবে জমতে থাকে নমুনা।

মাঝে মধ্যে ঢাকায় নমুনা পাঠিয়েও পরীক্ষা করানো হচ্ছে। কিন্তু ঢাকার ল্যাবগুলোতেও নমুনা জট থাকায় রিপোর্ট আসতে অন্তত এক সপ্তাহ সময় লাগছে।

এদিকে, সিলেট নগরীর মধ্যে কেবলমাত্র শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে নমুনা সংগ্রহ করায় প্রতিদিন সেখানেও ভিড় করছেন করোনার উপসর্গ থাকা রোগীরা। রোগীদের চাপে নমুনা পরীক্ষার ক্ষেত্রেও নিশ্চিত করা যাচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। ফলে নমুনা পরীক্ষা করাতে এসে অনেক নেগেটিভ রোগীও আক্রান্ত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া রোগীদের চাপের কারণে অনেকে হাসপাতালে এসেও পরীক্ষার জন্য নমুনা দিতে না পেরে ফেরত যেতে হচ্ছে।

এ ব্যাপারে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও করোনা পরীক্ষার ল্যাবের প্রধান অধ্যাপক ডা. ময়নুল হক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, ‘প্রতিদিন যেভাবে নমুনা আসছে এতে ওসমানী মেডিকেল কলেজের একটি ল্যাব দিয়ে কোনোভাবেই পরীক্ষার চাপ কমানো সম্ভব হচ্ছে না। প্রতিদিন ল্যাবে সর্বোচ্চ ১৮৮টি নমুনা পরীক্ষা সম্ভব। কিন্তু নমুনা আসছে এর দ্বিগুণের চেয়ে বেশি। এতে রোগীদের দ্রুত রিপোর্ট দেওয়া যাচ্ছে না।’

এদিকে, ওসমানী মেডিকেল কলেজ ছাড়াও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আরেকটি ল্যাব দিয়ে সুনামগঞ্জ জেলার সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। তবে, সিলেট বক্ষব্যাধি হাসপাতাল, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জে আরও চারটি ল্যাব স্থাপনের জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরে আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য অফিসের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান। তিনি জানান, সুনামগঞ্জে ল্যাব স্থাপন হলে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে সিলেটের নমুনা পরীক্ষা করা যাবে। আর বক্ষব্যাধি হাসপাতাল বা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একটি ল্যাবে মৌলভীবাজারের নমুনা পরীক্ষা হলে সিলেট বিভাগের নমুনা আর ঢাকায় পাঠাতে হবে না। এতে পরীক্ষার রিপোর্টও দ্রুত দেওয়া সম্ভব হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর