শুক্রবার, ১২ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

সমন্বয়হীনতায় করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ পরিণতির দিকে

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

সমন্বয়হীনতায় করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ পরিণতির দিকে

সমন্বয়হীনতায় রংপুরে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ পরিণতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। করোনা পরীক্ষা, ফলাফল প্রকাশে দীর্ঘ সূত্রতা, আক্রান্ত ব্যক্তির বাসভবন কিংবা প্রতিষ্ঠানে লকডাউন সময়মতো না হওয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্থানীয় সুধীমহল এর জন্য  স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, সিভিল সার্জন ও সিটি করপোরেশনের সমন্বয়হীনতাকেই দায়ী করছেন।  রংপুরে নিজে করোনা পজেটিভ হয়েও চার দিন ধরে রোগী দেখেছেন আহসান হাবিব (এমবিবিএস) নামে এক ডাক্তার। নগরীর চাউল আমোদ রোডে অবস্থিত তার চেম্বারটি অবশেষে গতকাল দুপুরে সিটি করপোরেশনের লোকজন এসে লকডাউন করে দেয়। তবে লকডাউনের আগে ওই ডাক্তার চেম্বার ছেড়ে পালিয়ে যান। এখানে সচেতন নাগরিকের প্রশ্ন একজন ডাক্তার করোনা পজেটিভ হয়ে কীভাবে চার দিন রোগী দেখলেন আবার স্বাস্থ্য বিভাগকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে পালিয়ে গেলেন। এদিকে এক ফটো সাংবাদিক করোনা নমুনা পরীক্ষা করিয়েছেন গত ৭ জুন। ১০ জুন তার রিপোর্ট পজেটিভ আসে। নমুনা পরীক্ষার পর তিন দিন তিনি শহরে বিভিন্ন প্রোগ্রামের ছবি তুলেছেন। তার সংস্পর্শে এসে কতজন সংক্রমিত হয়েছেন এটা হয়তো আর কদিন পরে জানা যাবে। তার সহকর্মীদের অভিমত, সময়মতো পরীক্ষার ফলাফল পাওয়া গেলে তার সংস্পর্শে আসা লোকজনের সংক্রমণের সংখ্যা কম হতো। এদিকে নগরীর কামালকাছনা এলাকার করোনা উপসর্গের এক রোগীর স্বজনরা অভিযোগ করেন, তারা সিটি করপোরেশনের নিয়োগপ্রাপ্ত নমুনা সংগ্রহকারীকে পাওয়ার জন্য বেশ কয়েকদিন স্থানীয় কাউন্সিলরকে মোবাইল ফোন করেও পাননি। পরে ওই রোগী রমেক হাসাপাতালে ভর্তি হয়। দুদিন আগে তার দেহের নমুনা সংগ্রহ করা হলেও এখন পর্যন্ত ফলাফল পাওয়া যায়নি। অপরদিকে গত কয়েকদিনে নগরীর পাড়া-মহল্লায় প্রায় শতাধিক করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে।  ওইসব রোগীর ৯৫ শতাংশই বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ওইসব আক্রান্ত ব্যক্তির অনেকের বাড়ি কিংবা প্রতিষ্ঠানে এখনো লকডাউন করা হয়নি।

ফলে আক্রান্ত এলাকায় করোনা ঝুঁকি বাড়ছে। বর্তমানে রংপুর জেলায় মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় ৬০০ জনে দাঁড়িয়েছে। যা রংপুর বিভাগের আট জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি।

যার মধ্যে রংপুর মহানগর এলাকায় সংক্রমিত রোগী মারাত্মকভাবে বেড়ে চলছে।

করোনা প্রতিরোধ নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক ফখরুল আলম বেঞ্জু জানান, গত চার দিনে যেসব রোগী ডা. আহসান হাবীবের সংস্পর্শে এসেছে তাদের খুঁজে বের করে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা দরকার।

 তা না হলে ওই রোগীদের মাধ্যমে তাদের পরিবারে করোনা ছড়িয়ে পড়বে। তিনি আরও বলেন, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, সিভিল সার্জন ও সিটি করপোরেশন যৌথভাবে সময়মতো লকডাউন করলে ডাক্তারের চেম্বারে আসা অনেক রোগী হয়তোবা করোনার হাত থেকে রক্ষা পেত।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. হিরন্ব কুমার রায় লকডাউন প্রসঙ্গে বলেন, রংপুরে অনেক রোগী। সবার বাড়ি লকডাউন করতে স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ হিমশিম খাচ্ছে। তাই অনেকের বাড়ি কিংবা প্রতিষ্ঠানে সময়মতো লকডাউন করা সম্ভব হচ্ছে না।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর