শনিবার, ১৩ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

গ্রামীণ কৃষি অর্থনীতি চ্যালেঞ্জে

খুলনায় দুর্যোগে সবজি ও মাছে ক্ষতি শত কোটি টাকার

সামছ্জ্জুামান শাহীন, খুলনা

করোনার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়তে শুরু করেছে খুলনার গ্রামীণ অর্থনীতিতে। পণ্য পরিবহনে সুব্যবস্থা না থাকায় উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করতে পারছে না কৃষক। সেই সঙ্গে চাহিদা না থাকায় কমছে ফসলের দাম। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষক, খেতের ফসল নষ্ট হচ্ছে খেতেই। তবে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে কৃষিতে ভর্তুকি, সহজ শর্তে ঋণসহ কৃষি খাতে বিশাল বরাদ্দে আশার সঞ্চার হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, বাজেট বাস্তবায়ন ও ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিপণনে টেকসই বাজার ব্যবস্থা গড়তে পারলে লাভবান হবেন প্রান্তিক কৃষক। খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার কাঁঠালতলা এলাকার কৃষক রইজ উদ্দিন। পরের বর্গা নেওয়া জমিতে সবজি উৎপাদন করে বাজারে বিক্রি করেন। কিন্তু করোনার কারণে প্রায় তিন মাস ধরে আয় রোজগার বন্ধ। ঘরে খাবার নেই, চরম অভাবে দিন কাটছে এই পরিবারের। গ্রামে রইজ উদ্দিন একা নয়, করোনা পরিস্থিতিতে এভাবে কর্মহীন নিঃস্ব হয়ে পড়েছে অসংখ্য পরিবার। খুলনা চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মফিদুল ইসলাম টুটুল বলেন, দীর্ঘমেয়াদি করোনা ও ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের কারণে এ অঞ্চলের কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি ধসে পড়েছে। করোনার কারণে চিংড়ি রপ্তানি বন্ধ হয়ে গেছে। বেকার হয়ে পড়েছেন কয়েক হাজার শ্রমিক। সেই সঙ্গে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েক লাখ প্রান্তিক কৃষক। শুধু ঘূর্ণিঝড়ে সবজিতেই ক্ষতি হয়েছে ৫৬ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে ক্ষতি শত কোটি টাকার ওপরে।

 খুলনার ডুমুরিয়ার সবজি চাষি আলী হোসেন বলেন, করোনার কারণে ঢাকা-বরিশালসহ অন্য অঞ্চলে সবজি পাঠানো যাচ্ছে না। সবজির দাম অর্ধেকের নিচে নেমেছে। চলতি সপ্তাহে বেগুনের কেজি ৩-৪ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এতে উৎপাদন খরচ, শ্রমিকের মজুরি মিলিয়ে চরম দুর্দশায় পড়েছেন কৃষক।

 

এদিকে করোনার প্রভাব মোকাবিলায় প্রস্তাবিত বাজেটে কৃষককে টিকিয়ে রাখতে ২৯ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়ায় আশাবাদী অর্থনীতিবিদরা। তাদের মতে, কৃষিতে ভর্তুকি, সার-বীজসহ পুনর্বাসন সহায়তা, সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা অব্যাহত থাকলে কৃষিনির্ভর অর্থনীতি ফের ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। তবে কৃষি শ্রমিক ও সংশ্লিষ্টদের জীবন-জীবিকা নিশ্চিত করাই এখন অন্যতম চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজনের জেলা সম্পাদক অ্যাডভোকেট কুদরত-ই খুদা। তিনি বলেন, গ্রামীণ কৃষি অর্থনীতি টিকিয়ে টেকসই বাজার অবকাঠামো গড়ে তুলতে হবে, যেখানে কৃষক প্রয়োজনে পণ্য মজুদ রাখতে পারবে। যেখানে ঋণের ব্যবস্থা থাকবে, ন্যায্যমূল্যে সরাসরি ক্রেতার কাছে পণ্য বিক্রি করতে পারবে। এতে লাভবান হবেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষক।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর