রবিবার, ১৪ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

২৩ হাজার টাকায় অ্যান্টি ভাইরাস ইনজেকশন

নজরুল মৃধা, রংপুর

২৩ হাজার টাকায় অ্যান্টি ভাইরাস ইনজেকশন

রংপুরে করোনা মোকাবিলায় অ্যান্টি ভাইরাস ইনজেকশনের সরকারিভাবে সরবরাহ নেই। আক্রান্ত রোগীদের এই ইনজেকশনের  কোর্স বাজার থেকে কিনতে ২৩ হাজার টাকা লাগছে। সরকারিভাবে সরবরাহ না থাকায় বাজার থেকে অনেকেই উচ্চমূল্যে ওষুধ কিনে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছেন। তবে গরিব মানুষের কাছে তা সোনার হরিণ। টাকার অভাবে গরিব অনেক করোনা আক্রান্ত রোগী উচ্চমূল্যের এসব ওষুধ কিনতে না পেরে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হবেন, এমনটাই  শঙ্কা করা হচ্ছে। অন্যদিকে সিটি করপোরেশনের নমুনা সংগ্রহের সক্ষমতা না বাড়ালে অনেক আক্রান্ত রোগী শনাক্তের আগেই মারা যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নগরীর সাতমাথা এলাকার করোনা আক্রান্ত এক রোগী শুক্রবার রংপুর ডেডিকেডেট করোনা হাসপাতালে ভর্তি হন। ওই রোগীর সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, ভর্তি হওয়ার পর কিছু ট্যাবলেট হাসপাতাল থেকে দেওয়ার পর তাকে একটি প্রেসক্রিপশন ধরিয়ে দিয়ে বলা হয় ইনজেকশনসহ এসব ওষুধ বাজার থেকে কিনতে হবে। ওই রোগীর স্বজনরা ওষুধের দোকানে প্রেসক্রিপশন নিয়ে গেলে ফার্মেসি থেকে বলা হয় সব ওষুধ নিতে গেলে ২৩ হাজার টাকার মতো লাগবে। এত টাকার কথা শুনে ওই রোগীর স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরে জরুরি ভিত্তিতে সাড়ে ৩ হাজার টাকার ওষুধ কেনেন। রংপুরে অ্যান্টি ভাইরাস ইনজেকশনসহ বেশ কিছু ওষুধের সরবরাহ না থাকার বিষয়টি স্বাস্থ্য বিভাগ স্বীকার করেছে।  এদিকে জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সকাল পর্যন্ত জেলায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৫৩৮ জন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশই সিটি করপোরেশন এলাকার। এর মধ্যে ডাক্তার, নার্স, পুলিশ, র‌্যাব, সাংবাদিকসহ সাধারণ মানুষও রয়েছেন। বর্তমানে রংপুর ডেডিকেডেটে করোনা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৪১ জন।  দেখা গেছে ১৫ ভাগের এক ভাগ রোগী মাত্র ডেডিকেডেট হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার সুয়োগ পাচ্ছেন। এদিকে সিটি করপোরেশন এলাকায় হু-হু করে রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় সিটি করপোরেশনের সক্ষমতা কমে গেছে। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ৬ জন টেকনিশিয়ান নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রতিদিন ৪০ জনের নমুনা সংগ্রহ করছেন। রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিদিন নমুনা সংগ্রহের চাহিদা দাঁড়িয়েছে একশরও বেশি।

কিন্তু অর্থ ও জনবল সংকটের কারণে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নমুনা সংগ্রহের সংখ্যা বাড়ানো যাচ্ছে না। অ্যান্টি ভাইরাস ইনজেকশন সরবরাহ না থাকা প্রসঙ্গে জেলা সিভিল সার্জন ডা. হিরন্ব কুমার রায় বলেন, সরকারিভাবে এটি সরবরাহ নেই। তাই রোগীদের এই ইনজেকশন বাইরে থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য বিভাগের আপাতত করণীয় কিছু নেই বলে তিনি জানান।

অন্যদিকে সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, গত ৩ মাসের বেশি সময় ধরে সিটি করপোরেশনের এক টাকাও আয় নেই। করোনা নমুনা সংগ্রহে প্রতিদিন ২০ হাজার টাকার ওপর খরচ হচ্ছে। এ ছাড়া করোনা আক্রান্ত মৃত ব্যক্তিদের লাশও সিটি করপোরেশনের ফ্রিজিং অ্যাম্বুলেন্সে করে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। তবে নমুনা সংগ্রহ বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর