মঙ্গলবার, ১৬ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

অবিক্রীত থেকে যাচ্ছে অধিকাংশ ট্রেনের টিকিট

অনলাইনে বিড়ম্বনা

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

করোনা পরিস্থিতির কারণে যাত্রীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে শুধু অনলাইনে টিকিট কাটার বিষয়টি সহজ হলেও বিভিন্ন রুটের হাজার হাজার নিম্ন-মধ্যবিত্ত যাত্রীদের ট্রেন ভ্রমন নিদারুণ কষ্টের হয়ে পড়েছে। এদের মধ্যে একটি বিরাট অংশ জানে না অনলাইনে কীভাবে টিকিট কাটতে হবে, জানেন না অ্যাপসটা কী, আর্থিক অবস্থার কারণে বা ব্যবহারও করতে জানেন না দামি বা অ্যান্ড্রয়েট মোবাইলও। করোনা পরিস্থিতিতে রেলওয়ের অনলাইনে টিকিট কাটার সিস্টেমে বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়েছে সাধারণ যাত্রীদের। এসবের কারণেই অনলাইনেই প্রতিদিন থেকে যাচ্ছে শত শত অবিক্রীত টিকিট। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট রেল কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও ক্ষুব্ধ।  রেলওয়ে ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতিতে যাত্রীদের সুরক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ প্রতিটি ট্রেনের অর্ধেক টিকিট অনলাইনে বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে। প্রতিটি  ট্রেনের অর্ধেক টিকিটের পুরোটাই (শতভাগ) অনলাইনে দিয়ে দেওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন অসংখ্য যাত্রী। অনেক যাত্রী অনলাইনে টিকিট কেটে স্বাচ্ছন্দ্যে ভ্রমণ করলেও অর্ধেকেরও বেশি আসন প্রতিদিন খালি যাচ্ছে। প্রতিটি ট্রেনেই চার ভাগের তিন ভাগ আসন খালি যাচ্ছে প্রতিদিন। রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন সাবেক ও বর্তমান বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, ট্রেনে বেশির ভাগ আসন খালি যাচ্ছে। যাত্রীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে কাউন্টারে টিকিট দেওয়া উচিত। কাউন্টারে তিন ফুট অন্তর গোলবৃত্ত করে দিয়ে টিকিট বিক্রি করলে সামাজিক দূরত্ব শতভাগ নিশ্চিত হবে।

করোনা পরিস্থিতিতে যে অর্ধেক টিকিট থেকে যাচ্ছে সেগুলোও বিক্রি হয়ে যাবে। তবে শুধু অনলাইনে টিকিটের বিষয়ে যারা মন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন দায়িত্বশীলদের বুঝাচ্ছেন, তারা নিজেরাই এসব বিষয়ে জ্ঞানহীন। এসব কাজ ধীরে ধীরেই করতে হবে। তাছাড়া ট্রেনের যাত্রীরা কেমন তাও বিবেচনা করতে হবে বলে জানান তারা।

চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার রতন কুমার চৌধুরী বলেন, রেলসেবা অ্যাপস থেকে কীভাবে টিকিট কাটতে হয় তা জানেন না অধিকাংশ যাত্রী। স্টেশনে এসেই অনেক যাত্রী টিকিটের জন্য কান্নাকাটিও শুরু করে। সিস্টেম বলে দিলেও বুঝে না, বুঝতে চান না যাত্রীরা। তিনি বলেন, বিশেষ করে নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষগুলোর মধ্যেই এসব সমস্যা দেখা গেছে। বুঝে না বিকাশ এবং রকেট অ্যাকাউন্ট কী। যার কারণে অনলাইনে টিকিট কাটতে না পেরে প্রতিদিন শত শত যাত্রী চট্টগ্রাম রেলস্টেশন কাউন্টারে গিয়ে ভিড় করছেন। ট্রেনের অধিকাংশ যাত্রী বলেন, অনলাইনের পাশাপাশি কিছু টিকিট কাউন্টারে দিলে অন্তত কিছু যাত্রী টিকিট কাটতে পারবেন। ট্রেনে এখনো যাত্রী চাহিদা রয়েছে। বর্তমান ট্রেন ভ্রমণ করছেন যারা অ্যাপস বুঝেন বা শিক্ষিত কিছু মানুষ। এতেও কালোবাজারি হচ্ছে। যা কয়েকদিন আগে চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে টিকিটসহ আটক হয়েছে। শুধু অনলাইনে থাকলে সাধারণ যাত্রীরা ট্রেন ভ্রমণ থেকে বঞ্চিত হবে বলেও জানান তারা।

গত শনিবার সোনার বাংলায় মোট ৫৮৫ টিকিটের মধ্যে বিক্রি হয়েছে মাত্র ১৫২টি। গত ১২ জুন বিক্রি হয়েছে ১১২টি এবং ১১ জুন বিক্রি হয়েছে ১৫১টি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর