সেবা প্রকাশনীর জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘মাসুদ রানা’র লেখক হিসেবে কাজী আনোয়ার হোসেনের নাম থাকলেও সবগুলো বইয়ের লেখক তিনি নন। এ সিরিজের শুধু প্রথম ১৮টি বই লিখেছেন কাজী আনোয়ার হোসেন। বাকি ১৬০টি বইয়ের আসল লেখক শেখ আবদুল হাকিম। অথচ প্রতিটি বইয়েই কাজী আনোয়ার হোসেনের নাম রয়েছে। একইভাবে সেবা প্রকাশনীর আরেক জনপ্রিয় থ্রিলার সিরিজ ‘কুয়াশা’র ৫০টি বইয়েরও ৩ লেখক শেখ আবদুল হাকিম। সেখানেও নাম রয়েছে কাজী আনোয়ার হোসেনের। একটি বই বাদে কোনোটিতেই কপিরাইট স্বত্ব নেই আসল লেখক শেখ আবদুল হাকিমের। রবিবার এই রায় ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ কপিরাইট রেজিস্ট্রার অফিস। এর ফলে ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের ২৬০টি এবং ‘কুয়াশা’ সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখক হিসেবে স্বত্ব পেতে যাচ্ছেন শেখ আবদুল হাকিম। ‘মাসুদ রানা’ ও ‘কুয়াশা’ সিরিজের লেখক হিসেবে স্বীকৃতিতে শেখ আবদুল হাকিম বলেন, মহামারীর দুর্যোগের সময় এ স্বীকৃতিতে আমি খুশি ও আনন্দিত। জানা যায়, ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের ২৬০টি এবং ‘কুয়াশা’ সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখক হিসেবে স্বত্ব বা মালিকানা দাবি করে সেবা প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী কাজী আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে গত বছরের ২৯ জুলাই অভিযোগ দাখিল করেন শেখ আবদুল হাকিম। প্রায় বছরব্যাপী শুনানি শেষে দেওয়া হয় এই রায়। শুনানিতে আবদুল হাকিম লিখিতভাবে নিজেই তার যুক্তি তুলে ধরেন। কাজী আনোয়ার হোসেনের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন তার আইনজীবী। এখন কাজী আনোয়ার হোসেন চাইলে ৯০ দিনের মধ্যে এ রায়ের বিরুদ্ধে কপিরাইট রেজিস্ট্রার অফিসে আবেদন করতে পারবেন। সেখানে হারলে হাই কোর্টে আপিল করতে পারবেন কাজী আনোয়ার হোসেন। কপিরাইট অফিসের রায়ে বলা হয়, সুষ্ঠু সমাধান ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে কপিরাইট বোর্ড বা বিজ্ঞ আদালত থেকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগ পর্যন্ত আবেদনকারীর দাবি করা ও তালিকাভুক্ত বইগুলোর প্রকাশ বা বাণিজ্যিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য প্রতিপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া হলো। এ ছাড়া প্রতিপক্ষকে আবেদনকারীর কপিরাইট রেজিস্ট্রেশন করা প্রকাশিত বইগুলোর সংস্করণ ও বিক্রীত কপির সংখ্যা এবং বিক্রয়মূল্যের হিসাব বিবরণী এ আদেশ জারির পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসে দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের রেজিস্ট্রার জাফর রাজা চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, যেহেতু সিরিজের প্রথম থেকে ১৮টি বইয়ের লেখক কাজী আনোয়ার হোসেন, তাই বলা যায় ‘মাসুদ রানা’র আবিষ্কারক কাজী আনোয়ার হোসেন। তবে বাকি বইগুলোর লেখক আবদুল হাকিম।