বুধবার, ১৭ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামের প্রথম রেড জোন

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের প্রথম রেড জোন

কোনো রকম প্রস্তুতি ছাড়াই মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে চট্টগ্রামে রেড জোন হিসেবে ১০ নং উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ড লকডাউন শুরু হয় -দিদারুল আলম

করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি বিবেচনায় চট্টগ্রামে ঘোষিত প্রথম রেড জোন এলাকায় চলাচল নিয়ন্ত্রণ এবং বিধিনিষেধ পালন নিশ্চিতে মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী। তাছাড়া রেড জোন এলাকায় মানুষদের সীমিত ও নির্ধারিত পথেই চলাচল করতে হবে। চট্টগ্রামে রেড জোন হিসেবে ১০ নং উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ড লকডাউন শুরু হয় গতকাল মঙ্গলবার রাত ১২টার পর থেকে। লকডাউন বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। গত মঙ্গলবার রাতে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) এক বার্তায় জানানো হয়, ‘রেড জোন এলাকায় সরকারি নির্দেশনাবলি যথাযথ পালনের উদ্দেশ্যে সেনা টহল জোরদার করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়। সরকারের অন্যান্য প্রশাসনের সঙ্গে সমম্বয় করে এবং জনগণকে সঙ্গে সেনাবাহিনী কাজ করছে। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ২৪ মার্চ থেকে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা মাঠে আছেন।’

সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘চট্টগ্রাম নগরের ১০ নং ওয়ার্ডকে রেড জোন ঘোষণা করা হয়েছে। অধিক আক্রান্ত লাল চিহ্নিত এলাকাগুলোর ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য বিভাগকে জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত আসেনি।’

চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী বলেন, ‘ওয়ার্ডটি প্রাথমিকভাবে ২১ দিনের জন্য লকডাউন কার্যকর হচ্ছে। এ সময় স্বাস্থ্যকর্মীসহ জরুরি সেবায় যারা নিয়োজিতরা তারা চলাচল করতে পারবেন। এ ব্যাপারে চসিক ও জেলা প্রশাসন প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিচ্ছে। সাধারণ মানুষকে প্রয়োজনীয় সহায়তায় খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম।’

জানা যায়, চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় করোনাভাইরাস প্রতিরোধে গঠিত কেন্দ্রীয় টেকনিক্যাল কমিটির কাছে চট্টগ্রাম নগরীর ১০টি ওয়ার্ড এবং চট্টগ্রামের ৯টি উপজেলাকে রেড জোন হিসেবে ঘোষণার প্রস্তাব করে। এর মধ্যে প্রথম দফায় নগরের ১০ নং উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডকে রেড জোন ঘোষণা করে মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে লকডাউন কার্যকর শুরু হয়। লকডাউন চলাকালে ঘোষিত এলাকায় প্রবেশ-বাহির সম্পূর্ণ নিষেধ। এ লক্ষ্যে কাট্টলী ওয়ার্ডের ২০টি প্রবেশপথ চিহ্নিত করে বন্ধ করা হয়। প্রবেশপথগুলোর মধ্যে আছে, কর্নেল টোল রোড, ঈশান মহাজন রোড, মোস্তাফা হাকিম কলেজ রোড, সাগরিকা বিটেক রোড, কৈবল্যধাম রোড, নিউ মনছুরাবাদ রোড, সিডিএ আবাসিক রোড, সাগরিকা আলিফ রোড। তাছাড়া প্রধান সড়কে যাত্রী ওঠানামা বন্ধ থাকবে। তবে রাত ১২টার পর পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল করতে পারবে। সাধারণ মানুষকে প্রয়োজনীয় সহায়তায় খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। কন্ট্রোল রুমের নম্বরগুলো হলো- ০৩১-৪৩১৫১৩৬৮, ০৩১-৪৩১৫১৩৬৯, ০৩১-৪৩১৫১৩৭০, ০৩১-৪৩১৫১৩৭১, ০৩১-৪৩১৫১৩৭২, ০১৮১৯০৫৬৮৪৪, ০১৮১১৮৮৭০৮৪।

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, করোনা আক্রান্ত বিবেচনায় চট্টগ্রামের ১৪ উপজেলাকে লাল, হলুদ ও সবুজ জোনে চিহ্নিত করা হয়। লাল জোনে আছে হাটহাজারী, পটিয়া, বোয়ালখালী, চন্দনাইশ, সীতাকুন্ড, আনোয়ারা, বাঁশখালী রাঙ্গুনিয়া ও রাউজান। হলুদ জোনে আছে সাতকানিয়া, লোহাগাড়া ও ফটিকছড়ি। সবুজ জোনে আছে মীরসরাই ও সন্দ্বীপ। অন্যদিকে নগরের ১০টি ওয়ার্ডকে রেড জোনে চিহ্নিত করা হয়। এর মধ্যে আছে, ১০ নং উত্তর কাট্টলী, বন্দর এলাকার ৩৭ ও ৩৮ নং ওয়ার্ড, পতেঙ্গার ৩৯ নং, কোতোয়ালির ১৬, ২০, ২১ ও ২২ নং, খুলশীর ১৪ নং ও হালিশহর এলাকার ২৬ নং ওয়ার্ড। তবে নগর ও উপজেলার মধ্যে সরকারিভাবে কেবলমাত্র ১০ নং উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডকেই রেড জোন হিসেবে ঘোষণা করা হয়। বাকিগুলোর ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদফতর বরাবরে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর