বুধবার, ১৭ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

‘রেড জোনে’ সিলেট নগরীর সাড়ে ৭ লাখ মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

সিলেটে অপ্রতিরোধ্যভাবে বেড়েই চলছে করোনা সংক্রমণ। শহর থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে জীবনঘাতী এই ভাইরাস। প্রতিদিনই লম্বা হচ্ছে আক্রান্তের তালিকা ও মৃত্যুর মিছিল। করোনা সংক্রমণ ঠেকানোর সর্বশেষ পন্থা হিসেবে সারা দেশের মতো সিলেট নগরীকেও তিনটি জোনে ভাগ করা হয়েছে। আক্রান্ত বিবেচনায় সিটি করপোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৪টিকে ‘রেড জোন’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। নগরীর ৮ লাখ ৬০ হাজার ৪৪৫ জন মানুষের মধ্যে এই জোনের আওতায় রয়েছেন ৭ লাখ ৬৮ হাজার ৭২৪ জন। আর বাকি তিন ওয়ার্ডের ৯২ হাজার ১২১ জন মানুষকে রাখা হয়েছে গ্রিন জোনে। সিলেট নগরীকে দুই ভাগে ভাগ করায় হলুদ বা ইয়েলো জোনে রাখা হয়নি কোনো ওয়ার্ডকে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে জোনভিত্তিক নতুন লকডাউন কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। গতকাল সিলেট সার্কিট হাউসে মাল্টিসেক্টরাল সভায় সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে জনসংখ্যা ও আক্রান্তের হিসাব তুলে ধরা হয়। সিটি করপোরেশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সিলেট নগরীতে ৮ লাখ ৬০ হাজার ৪৪৫ জন নাগরিকের বসবাস। গত ১৪ দিনের আক্রান্ত বিবেচনায় প্রথমে সিটি করপোরেশনের ১৯টি ওয়ার্ডকে ‘রেড জোন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। কিন্তু লকডাউনের সুবিধার্থে গতকালের সভায় ১৯টি থেকে বাড়িয়ে ২৪টি ওয়ার্ডকে ‘রেড জোন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। সুরমা নদীর উত্তরপাড়ের ২৪টি ওয়ার্ডকে ‘রেড জোন’ আর দক্ষিণ পাড়ের ৩টি ওয়ার্ডকে গ্রিন জোন হিসেবেই চিহ্নিত করে লকডাউনের রূপরেখা তৈরি করা হয়। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোনো নির্দিষ্ট এলাকায় গড়ে প্রতি লাখে ১০ জন করোনা আক্রান্ত হলে সেই এলাকাকে ‘রেড জোন’ হিসেবে চিহ্নিত করার কথা বলা হয়েছে। বর্তমানে সিটি করপোরেশনের জনসংখ্যা অনুপাতে আক্রান্তের হার প্রতি লাখে ২৮ দশমিক ৪৭ জন। 

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম সুমন জানান, মাল্টিসেক্টরাল সভায় সুরমা নদীর উত্তরপাড়ের ২৪টি ওয়ার্ডকে ‘রেড জোন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে ‘রেড জোনে’ নতুন করে লকডাউন কার্যকর হবে। ‘রেড জোনে’ সিএনজি অটোরিকশা, লেগুনা ও টাউনবাসসহ কোনো ধরনের গণপরিবহন চলবে না। নিত্যপ্রয়োজনীয় তথা মুদি দোকান বিকাল ৪টা পর্যন্ত ও ফার্মেসি খোলা রাখা যাবে ২৪ ঘণ্টা।

এদিকে, সিলেট নগরীর মতো জেলার প্রতিটি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা রেড, গ্রিন ও ইয়েলো জোনে ভাগ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন থেকে একটি তালিকা সিভিল সার্জনের কাছে দেওয়া হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে জানতে সিভিল সার্জনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

জেলা প্রশাসক এম. কাজী এমদাদুল ইসলাম জানান, সিলেটের বেশি আক্রান্ত ইউনিয়ন, ওয়ার্ড বা নির্দিষ্ট এলাকাগুলো ‘রেড জোন’র আওতাভুক্ত করা হচ্ছে। বুধবার সিভিল সার্জন জোনভিত্তিক এলাকাগুলো ঘোষণা করবেন। স্বাস্থ্য অধিদফতর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান জানান, সিলেট জেলার কোনো উপজেলাকেই পুরোপুরি লকডাউন করা হবে না। উপজেলাগুলোতে রেড জোন চিহ্নিত করে নির্দিষ্ট এলাকাকে নতুন লকডাউন নীতিমালার আওতায় আনা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর