শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ১৮ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা
রেড জোন নিয়ে হচ্ছেটা কী

সিলেটে লকডাউন নিয়ে ইঁদুর বিড়াল খেলা

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সিলেটে লকডাউন নিয়ে ইঁদুর বিড়াল খেলা

করোনা সংক্রমণ বিবেচনায় সারা দেশে যেসব জেলাকে ‘রেড জোন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে তার মধ্যে সিলেটও রয়েছে। ‘রেড জোন’ সিলেটে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে গত কয়েক দিন থেকে দফায় দফায় সমন্বয় সভা করছে প্রশাসন। সভায় রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত সিলেট সিটি করপোরেশনের ২৪টি ওয়ার্ডে বৃহস্পতিবার থেকে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও তা থেকে সরে এসেছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে এ নিয়ে জেলা প্রশাসন, সিটি করপোরেশন ও সিভিল সার্জন অফিস থেকে পাওয়া গেছে ভিন্ন ব্যাখ্যা। অর্থ বছরের শেষ হিসেবে ব্যাংকিং লেনদেনের সুবিধার্থে লকডাউনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসা হয়েছে বলে জানিয়েছে সিভিল সার্জন অফিস।

 লকডাউন নিয়ে প্রশাসনের এমন ইঁদুর বিড়াল খেলায় ক্ষুব্ধ নগরবাসী। এরকম সিদ্ধান্তহীনতা ও সমন্বয়হীনতা করোনা সংক্রমণরোধ নয়, বরং বিস্তার ঘটাতে সহায়ক হবে বলে মন্তব্য করছেন অনেকে।

সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সিলেটে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। আক্রান্ত বিবেচনায় দেশের বিভিন্ন জেলার সঙ্গে সিলেটকেও রাখা হয়েছে রেড জোনে। সূত্র জানায়, করোনা সংক্রমণ রোধ ও রেড জোনে করণীয় নিয়ে গত কয়েক দিন থেকে দফায় দফায় প্রশাসনের মাল্টিসেক্টরাল সভা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। গত মঙ্গলবার মাল্টিসেক্টরাল সভায় সিটি করপোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৪টিকে রেড জোন বিবেচনায় নিয়ে ‘লকডাউনের’ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একই সঙ্গে উপজেলা পর্যায়ে অধিক সংক্রমণ এলাকাগুলোও লকডাউনের আওতায় রাখার সিদ্ধান্ত হয়। বৃহস্পতিবার থেকে নগরীতে লকডাউন কার্যকর করার প্রস্তাব দেওয়া হলে সিটি করপোরেশন দুই দিন সময় নিয়ে শনিবার থেকে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সিভিল সার্জনের কাছে সুপারিশ করে। কিন্তু মঙ্গলবার নেওয়া লকডাউনের সিদ্ধান্ত পাল্টে যায় পরদিন বুধবার। লকডাউনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে প্রশাসন। জানানো হয় রেড জোন সিলেটে এখনই লকডাউন নয়। লকডাউনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসা নিয়ে জেলা প্রশাসন, সিভিল সার্জন ও সিটি করপোরেশন  থেকে পাওয়া গেছে ভিন্ন বক্তব্য।

সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী জানান, ‘বৃহস্পতিবার থেকে সিলেট নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৪টিতে লকডাউনের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু নগরবাসীর সুবিধার্থে সময় আরও দুই দিন বৃদ্ধি করে শনিবার থেকে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিতে সিভিল সার্জনের কাছে সুপারিশ করা হয়। সিভিল সার্জন অফিস থেকে সিদ্ধান্ত জানানো হলে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের কাছে চিঠি পাঠানো হবে। লকডাউন বাস্তবায়নেও সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

তবে লকডাউনের ব্যাপারে কিছুই জানেন না জেলা প্রশাসক এম. কাজী এমদাদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘লকডাউনের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এখনো জোনিং নিয়ে কাজ চলছে। জোনিংয়ের কাজ শেষ হলে তা সিভিল সার্জনের মাধ্যমে ঢাকায় পাঠানো হবে। টেকনিক্যাল টিম তা দেখে অনুমোদন দেবে। এরপর রেড জোনে করণীয় নির্ধারণ করা হবে। রেড জোনে লকডাউন দিতেই হবে এমন কোনো কথা কোথাও উল্লেখ নেই। তবে জনসাধারণের চলাচলে কড়াকড়ি আরোপ হতে পারে।’

 জেলা প্রশাসক লকডাউনের ব্যাপারে কিছু না জানলেও সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ ম ল বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি জানান, ‘এখন অর্থবছরের শেষ সময়। এখন ব্যাংকিং কার্যক্রম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাংকিং লেনদেনের কথা চিন্তা করে এই মুহূর্তে লকডাউন দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসা হয়েছে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর