বৃহস্পতিবার, ১৮ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

রাজশাহীতে স্বস্তি কেড়ে নিচ্ছে অসচেতনতা

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

রাজশাহীতে স্বস্তি কেড়ে নিচ্ছে অসচেতনতা

করোনার মধ্যেও রাজশাহী মহানগরীতে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে এভাবেই চলছে -বাংলাদেশ প্রতিদিন

দেশে যখন করোনা রোগী পাওয়া যায়, তখন রাজশাহী মহানগরী ছিল শূন্য। উপজেলায় রোগী পাওয়া গেলেও দুই মাসের বেশি সময় মহানগরীর মানুষ ছিলেন স্বস্তিতে। কিন্তু লকডাউন ঢিলেঢালা হওয়ার পর সাধারণ মানুষের অসচেতনতার কারণে সেই স্বস্তি এখন আর নেই। রাজশাহী মহানগরীতে এখন ৫০ জন করোনা রোগী আইসোলেশনে আছেন। তাই পদ্মাপাড়ের এই নগরী পড়েছে ইয়েলো জোনে। শহরটিতে এ পর্যন্ত ৫৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। তবে সুস্থ হয়ে গেছেন ৮ জন। জেলার সিভিল সার্জন ডা. এনামুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। শহরে শনাক্ত ৫৮ জনের মধ্যে অনেকেরই বাড়ি রাজশাহীর বিভিন্ন উপজেলা কিংবা অন্য জেলায়। শহরে ভাড়া থাকেন অথবা উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসা করাতে এসে শনাক্ত হয়েছেন। তারপরও যেহেতু তারা রাজশাহী শহরে এসেছেন বা থাকছেন তাই সংক্রমণটা শহরের হিসেবেই গণ্য করা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কোনো এলাকায় যদি এক লাখে ৩ থেকে ৯ জন করোনা পজিটিভ রোগী থাকে তাহলে সেই এলাকা থাকবে ইয়েলো জোনের আওতায়। আর কোনো এলাকায় যদি এক লাখে ১০ জনের ওপরে করোনা পজিটিভ রোগী থাকে তবে সেই এলাকা থাকবে রেড জোনের আওতায়।

এখন পর্যন্ত রাজশাহী জেলা ও মহানগরে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৫৬ জন। এর মধ্যে মোহনপুর উপজেলায় সর্বোচ্চ ১৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ ছাড়া রাজশাহীর তানোর উপজেলায় ১৭, চারঘাটে ১৪, বাঘায় ১২, পুঠিয়ায় ১১, বাগমারায় ১১, পবায় ৮, দুর্গাপুরে ৫ এবং গোদাগাড়ী উপজেলায় ১ জন শনাক্ত হয়েছেন।

জেলা ও মহানগরে শনাক্ত মোট ১৫৬ জনের মধ্যে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৪৯ জন। আর চিকিৎসাধীন আছেন ১০৪ জন। এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৩ জন। গত ১২ এপ্রিল রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছিল। নগরীতে প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে গত ১৫ মে।

সিভিল সার্জন ডা. এনামুল হক জানান, প্রথমদিকে শুধু রাজশাহীর বাইরে থেকে আসা লোকজনের মধ্যেই করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ে। কিন্তু এখন অনেকেই শনাক্ত হচ্ছেন, যার কোনো ভ্রমণ ইতিহাস নেই। তারা স্থানীয়ভাবেই আক্রান্ত হচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে করোনার সংক্রমণ শুরু হলেও রাজশাহীতে মানুষের মাঝে কমছে সচেতনতা। রাজশাহী মহানগরীতে লোকজন মাস্ক পরলেও অনেকেই নাক-মুখের নিচে নামিয়ে রাখছেন। সামাজিক দূরত্ব দূরে ঠেলে গাদাগাদি করে উঠছেন অটোরিকশায়। পুরো শহরই এখন থাকছে লোকে-লোকারণ্য। আর গ্রামের মোড়ে মোড়ে মানুষের সচেতনতা আরও কম। মাস্ক ছাড়াই ঘুরে বেড়াচ্ছেন অনেকে।

সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন জানান, শুরুতে তারা যে পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়েছিলেন, আর কয়েকটা দিন সেভাবে রাখা গেলে নগরীকে হয়তো করোনামুক্ত রাখা যেত। কিন্তু ঈদের সময় মার্কেট খুলে দেওয়া ও গাড়ি চলাচলের কারণে সেটি এখন আর সম্ভব হয়ে উঠছে না। তারপরও কীভাবে নগরীতে সংক্রমণ কমানো যায়, সেজন্য স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করছেন বলে জানান।

জেলা প্রশাসক হামিদুল হক জানিয়েছেন, মানুষের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে মোবাইল কোর্টের তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে প্রশাসন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর