বৃহস্পতিবার, ১৮ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

অনলাইনে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং বাণিজ্য রমরমা

আকতারুজ্জামান

এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশের প্রায় দুই মাস পর শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজগুলোতে ভর্তি প্রক্রিয়া। করোনাভাইরাসের কারণে এইচএসসি পরীক্ষা কবে অনুষ্ঠিত হবে এ ব্যাপারে কোনো খবর না থাকলেও কোচিং ব্যবসায়ীদের কোচিং বাণিজ্য থেমে নেই। ছাত্র-ছাত্রীরা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসার অনেক আগেই তাদের নিয়ে ব্যবসায় মেতে উঠেছে তারা। ভর্তির জন্য প্রস্তুতি কোচিং নামে তারা হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। জুম অ্যাপসহ বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে অনলাইনেই এসব কোচিং চলছে বলে জানা গেছে। শিক্ষাবিদরা বলছেন, কোচিং বাণিজ্য অনলাইনে হচ্ছে, এটি দুঃখজনক। অনলাইনে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির কোচিং কার্যক্রম চালু রেখেছে ইউসিসি, উদ্ভাস-উন্মেষ, মেডিকো, ফোকাস, রেটিনাসহ বেশকিছু কোচিং সেন্টার। ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করা এ কোচিং সেন্টারগুলো করোনাকালীন সময়ে চালু রেখেছে অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়াও। আগামী ২৫ জুন থেকে ইউসিসির অনলাইন কোচিং শুরু হচ্ছে। এ কোচিং সেন্টারটি ২ হাজার টাকা রেজিস্ট্রেশন ফিসহ বিজ্ঞান বিভাগের কোচিংয়ের জন্য নিচ্ছে ১৭ হাজার টাকা। উদ্ভাস কোচিং সেন্টার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের কোচিংয়ের জন্য ফি নিচ্ছে ১৯ হাজার টাকা। এছাড়া বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি কোচিংয়ের জন্য নিচ্ছে ১৭ হাজার টাকা। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং ছাড়াও অনলাইনে অষ্টম, নবম, দশম শ্রেণির কোচিং চালু রেখেছে উদ্ভাস।

 মেডিকেল কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে উন্মেষ কোচিং সেন্টার শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিচ্ছে ১৮ হাজার টাকা। গত ৬ জুন থেকে মেডিকেলে ভর্তির কোচিং শুরু হয়েছে। চলতি মাসেই এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের মেডিকেলে ভর্তি কোচিং শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।  

কোচিং মালিকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব শ্যাডো এডুকেশন বাংলাদেশের আহ্বায়ক ইমাদুল হকের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য দফায় দফায় মোবাইলে কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সৈয়দ মন্জুরুল ইসলাম বলেন, শিক্ষাব্যবস্থার দুর্গতির প্রতিফলন হচ্ছে এসব বাণিজ্যিক কোচিং ব্যবস্থা। এইচএসসি পরীক্ষা না দিয়েই যদি ছাত্র-ছাত্রীরা কোচিং শুরু করে তবে এটি হবে দুঃখজনক।  কোচিংকে বৈধতা দিয়ে এটিকে সমান্তরাল শিক্ষা মনে করা হচ্ছে, এটি আরও দুঃখজনক। এসব কোচিংব্যবসা নিষিদ্ধ করে শিক্ষা আইন করতে হবে। কোচিং থাকতে পারে অনগ্রসর ও বিশেষ শিক্ষার্থীদের জন্য। এটি স্কুলের শিক্ষকরাই বিশেষ দিনে করতে পারবেন। কিন্তু শিক্ষা নিয়ে কেউ ব্যবসা করতে পারবেন না, এটি সরকারকেই নিশ্চিত করতে হবে।

শিক্ষাবিদদের এমন নেতিবাচক মন্তব্যেও পরিপ্রেক্ষিতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সঙ্গে। দফায় দফায় মোবাইলে কল দিয়ে ও মেসেজ পাঠিয়েও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে ভর্তি প্রস্তুতির জন্য কোচিং কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে দেশে। সরকারি ও বেসরকারি চাকরির জন্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য রয়েছে প্রস্তুতিমূলক কোচিং। কিন্তু এসব কোচিং সেন্টারের জন্য কোনো নীতিমালাই নেই সরকারের।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর