শুক্রবার, ১৯ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

৪০২ কোটি টাকার কাজ চ্যালেঞ্জে

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

৪০২ কোটি টাকার কাজ চ্যালেঞ্জে

বর্ষা শুরুর দিনই ভারি বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় খুলনা মহানগরীর অধিকাংশ রাস্তাঘাট। এতে ফের থমকে গেছে সীমিত পরিসরে চলমান সড়ক সম্প্রসারণ ও ড্রেন সংস্কার কাজ। এর আগে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে প্রায় দুই মাস বন্ধ ছিল এসব উন্নয়ন কাজ। ফলে এবার সরকারি-বেসরকারি প্রকল্পের প্রায় ৪০২ কোটি টাকার কাজ সময়মতো শেষ করা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে সিটি করপোরেশন। বিশ্লেষকরা বলছেন, যথা সময়ে কাজ শেষ না হলে প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধির পাশাপাশি বাড়বে জনদুর্ভোগও। জানা যায়, খুলনা মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন ও সড়ক সংস্কারের বড় দুই প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। এ খাতে সরকারি বরাদ্দ প্রায় ৪০২ কোটি টাকা হাতে পাওয়ার পরই কনসালটেন্ট নিয়োগ, ফিজিবিলিটি স্টাডি ও বিকিউ (বিল অব কোয়ান্টিটি) প্রস্তুত করা হয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি শুরু হলে সব কিছুই স্থবির হয়ে যায়। ড্রেন নির্মাণ ও সড়ক সংস্কার কাজের দরপত্র আহ্বান প্রক্রিয়াও আটকে যায়। কেসিসির প্রধান পরিকল্পনাবিদ আবির-উল-জব্বার বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে উন্নয়ন কাজ শেষ করাটাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। সংক্রমণ এড়াতে খুলনার বাইরের কোনো শ্রমিককে কাজে লাগানো হচ্ছে না। পাশাপাশি নির্মাণ উপকরণ পাওয়া যাচ্ছে না। তারপরও সময় মতো কাজ শেষ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জানা যায়, জলাবদ্ধতা নিরসনে ভৈরব নদ কেন্দ্রিক খানজাহান আলী রোড, কেডি ঘোষ রোড, আহসান আহমেদ রোড, সাউথ সেন্টাল রোড, গগণ বাবু রোডের দুই পাশের ড্রেনসহ প্রায় ৩০ কিলোমিটার ড্রেনের নকশা চূড়ান্ত করা হয়েছে। বৃষ্টির সময় এসব এলাকার পানি নগরীর কাস্টম ঘাট ও রূপসা ঘাট দিয়ে পাম্পের মাধ্যমে ভৈরব নদে অপসারণ করা হবে। ৩০ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণের দরপত্র শিগগিরই আহ্বান করা হচ্ছে। তবে দুই পাম্প হাউস নির্মাণে সময় লাগবে। সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানান, বৃষ্টি ও জোয়ারের সময় এখানে পানির চাপ কী পরিমাণ থাকবে তা নির্ধারণের পরই পাম্প হাউসের নকশা চূড়ান্ত করা হবে। এদিকে মিউনিসিপ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ডের আওতায় আলাদাভাবে খুলনা মহানগরীতে সড়ক ও ড্রেন নির্মাণের আরও ৬৩ কোটি টাকার কাজ চলমান রয়েছে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে সময় মতো কাজ শেষ না হওয়ায় দুর্ভোগ বাড়ছে। সরেজমিন দেখা গেছে, গতকাল সকালে নগরীর শেখপাড়া খলিল চেম্বার মোড়ে ড্রেন নির্মাণের জন্য বিদ্যুৎ স্টাফ কোয়ার্টার সড়কে বিশাল গর্ত করা হয়েছে। কিন্তু দুপুরের পর ভারি বৃষ্টির পানিতে ওই গর্ত সয়লাব হয়ে গেলে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এখানে কেডিএ এভিনিউ সড়কে তিনটি স্পটে দুই মাস ধরে কালভার্ট নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকায় চলাচলে বিঘœ ঘটছে। বৃৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির মহাসচিব শেখ আশরাফ-উজ্জামান বলেন, বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ায় ড্রেন ও সড়ক সংস্কার কাজে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এর আগে নগরীর বিভিন্ন স্থানে ড্রেনের নির্মাণ কাজ শুরুর পর তা বন্ধ হয়ে গেছে। সময় মতো এসব কাজ শেষ না হলে উন্মুক্ত ড্রেনে লোহার রড ও সড়কে খানাখন্দে ভোগান্তি বাড়বে। তবে খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, চলমান কাজ আর বন্ধ হবে না। করোনার কারণে এ অচলাবস্থা হয়েছে। সময় মতো কিছুটা দিতে হবে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে খুলনা শহরের মধ্যে থাকা শ্রমিকদের দিয়ে উন্নয়ন কাজ চালিয়ে নেওয়া হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর