রবিবার, ২১ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

হাসপাতালে চিকিৎসা পেতে রেফারেন্স

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

হাসপাতালে চিকিৎসা পেতে রেফারেন্স

রাজশাহীতে করোনার উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন নওগাঁর সোনাদীঘি এলাকার আবদুল হামিদের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন (৩৫)। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। দুদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। এই দুই দিনে চিকিৎসকরা একবারও তার কাছে যাননি। পবা উপজেলার দর্শনপাড়া ইউনিয়নের করোনা আক্রান্ত যুবক শাওন (২০) হাসপাতালে গিয়েছিলেন চিকিৎসার জন্য। কিন্তু অন্য যারা সেখানে আগে থেকে আছেন, তাদের অবস্থা দেখে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান শাওন। পরে বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রধান ফটকের বাইরে ব্যানার টানানো হয়েছে, করোনা উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের সরাসরি খ্রিস্টান মিশন হাসপাতালে যোগাযোগ করতে। হাসপাতালে চিকিৎসা নেই। আবার যে হাসপাতালটি শুধু করোনা রোগীদের জন্য নির্ধারণ করা সেখানেও যান না চিকিৎসকরা। ফলে বাড়িতে থেকেই অনেকে করোনা জয়ে নেমেছেন। রাজশাহীতে করোনা আক্রান্তদের বেশির ভাগ রোগীকে বাসায় রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এতে রোগীদের পরিবারের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতেও সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এদিকে শনাক্ত হওয়ার পর রোগীর স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রশাসন ওই বাড়ি লকডাউন করে দিলেও তা পরবর্তীতে পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে না। রাজশাহী সিভিল সার্জনের হিসাবে রাজশাহী জেলায় শনিবার সকাল পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে ২১২ জন। এদের মধ্যে নগরীতেই ১০১ জন। এ ছাড়া মোহনপুরে ২৩, তানোরে ১৭, বাঘায় ১২, চারঘাটে ১৫, পুঠিয়ায় ১২, দুর্গাপুরে ৬, বাগমারায় ১২, পবায় ১২ ও গোদাগাড়ীতে একজন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৫৬ জন ও মারা গেছেন চারজন।  রোগী ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের হাসপাতালে না গিয়ে বাড়িতে থেকেই নিয়ম মেনে চলতে পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসক। আবার হাসপাতালে তারা পর্যাপ্ত সেবা না পাওয়ার শঙ্কায় বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে তাদের পরিবারের অন্য সদস্যরা আক্রান্ত হচ্ছেন। এদিকে হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ, রেফারেন্স ছাড়া রোগী ভর্তি নেওয়া হচ্ছে না। বিশেষ করে কোনো রোগীর করোনা উপসর্গ থাকলে হাসপাতালে তার চিকিৎসা পেতে পদে পদে বিপত্তিতে পড়তে হচ্ছে। হাসপাতালে আসা যে কোনো রোগীর অন্যান্য গুরুতর রোগের সঙ্গে শ্বাসকষ্ট বা জ্বর থাকলে করোনা টেস্ট না করিয়েই তাকে আগেই করোনা ওয়ার্ডে পাঠানো হচ্ছে। সেখানে অন্যান্য করোনা আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে আসার কারণে নতুন রোগীর করোনা না থাকলেও তার সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে। তবে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস জানান, হাসপাতালে আসা কোনো রোগীকে চিকিৎসা না দিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে না। হাসপাতালে নতুন রোগী এলে তাদের আগে জরুরি ওয়ার্ডে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। চিকিৎসক প্রয়োজন মনে করলে রোগীকে ভর্তি করা হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর