রবিবার, ২১ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

আতঙ্কিত নগরে উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি

ময়মনসিংহে দুই দিনে মৃত্যু আট

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার এই দুদিনে ময়মনসিংহে করোনাভাইরাসের থাবায় প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচজন। আরও এক স্কুলশিক্ষিকা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ঢাকায়। অপরদিকে ওই দুই দিনে উপসর্গ নিয়ে প্রাণ হারান আরও দুইজন। অর্থাৎ, মাত্র দুই দিনেই প্রাণঘাতী করোনা কেড়ে নিয়েছে আটটি প্রাণ।  জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, গত বুধবার পর্যন্ত জেলায় ১২ জনের মৃত্যু হলেও শনিবার বিকাল পর্যন্ত এই সংখ্যা গিয়ে ঠেকেছে ১৬তে। আর গত মঙ্গল ও বুধবার টানা দুই দিন রেকর্ডসংখ্যক মানুষ শনাক্ত হয়েছেন করোনাভাইরাসে। প্রথম ৫০০ রোগী শনাক্ত হতে ৫৪ দিন সময় লাগলেও পরের ৫০০ শনাক্ত হয়েছে চলতি মাসের ১৫ দিনেই। ইতিমধ্যে জেলায় ১২০০ ছাড়িয়ে গেছে শনাক্তের সংখ্যা। আর সিটি করপোশেন এবং সদর উপজেলায়ই এর সংখ্যা ৬৩৪। এমন পরিসংখ্যানে আতঙ্কিত নগরবাসী। কিন্তু উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি। বাড়ছে সামাজিক দূরত্ব না মানার প্রতিযোগিতা। রাস্তাঘাট, দোকানপাট, পাড়া, মহল্লার মানুষের মধ্যে বালাই নেই স্বাস্থ্যবিধির মেনে চলার। অনেকেই নিজেকে ছেড়ে দিয়েছেন ভাগ্যের হাতে। কিন্তু বিপাকে পড়েছেন স্বাস্থ্যসচেতন মানুষ। তারা চাইলেও মানুষের ভিড় এড়িয়ে চলতে পারছেন না। তাই সচেতন নগরবাসী বলছেন, অসচেতনতার কারণেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ এবং মৃতের সংখ্যা। জেলা নাগরিক আন্দোলনের সভাপতি অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান খান উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘ইতিমধ্যে ময়নসিংহের চারটি এলাকা রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেসব এলাকায় নিয়ন্ত্রণের কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি।’ শনিবার দিনভর নগরীর দূর্গাবাড়ি, গাঙ্গিনারপাড় ও পাটগুদাম ব্রিজ মোড় ঘুরে দেখা যায়, অপেক্ষাকৃত কম বয়সের তরুণরা দলবেঁধে চলাফেরা করছেন। সর্বত্রই যেন আইন না মানার একটি প্রবণতা। দোকানগুলোতে ভিড় বাড়লেও ব্যবসায়ীরা সামাজিক দূরত্ব মানার কোন তাগিদ দিচ্ছেন না। হাতে নেই গ্লাভস, এমনকি মুখে মাস্কও নেই অনেকের। বাজারগুলোতেও যাচ্ছেতাই অবস্থা। ময়মনসিংহ মেডিকেল ও চরপাড়া এলাকা আক্রান্তের সংখ্যার দিক থেকে এগিয়ে। ক্লিনিক-ডায়াগনোস্টিককে কেন্দ্র করে ওই এলাকার স্টলগুলোতে জমে উঠেছে আড্ডা।

এই এলাকায় করোনা নিয়ে নানা আলোচনা হলেও স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব না মানার বিষয়টা চোখে পড়ার মতো। অটো ও রিকশা জটও লেগে থাকে সারা বেলা।

জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান বলেন, ‘রেড জোন চিহ্নিত এলাকা নিয়ে আমরা ইতিমধ্যে একটি কমিটি করেছি। আজ (গতকাল শনিবার) সিটি করপোরেশনে একটি সভাও হয়েছে। খুব দ্রুতই সব মহলের সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর