করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে হুমকির মুখে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার ৬০ কোটি শিশু। কয়েক দশকজুড়ে দক্ষিণ এশিয়ায় শিশুর স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে যে অগ্রগতি হয়েছে, তা ম্লান করে দিচ্ছে এই করোনা মহামারী। এই অঞ্চলের লাখ লাখ পরিবার পুনরায় দারিদ্র্যে নিপতিত হওয়া ঠেকাতে সরকারগুলোকে অবশ্যই জরুরিভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে হবে। গতকাল প্রকাশিত জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থার ইউনিসেফের পাঠানো এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। বিশ্বের এক-চতুর্থাংশ মানুষের বসবাস এ অঞ্চলে। মহামারীটি এখানে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় তা ৬০ কোটি শিশুর জীবনের ওপর যে ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে তা তুলে ধরা হয় ‘লাইভস অব এন্ডেড’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে। ইউনিসেফ দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিচালক জ্যাঁ গফ বলেন, লকডাউন এবং অন্যান্য পদক্ষেপসহ দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে মহামারীর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নানাভাবে শিশুদের জন্য ক্ষতির কারণ হচ্ছে। তবে শিশুদের ওপর অর্থনৈতিক সংকটের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব হবে সম্পূর্ণভাবে ভিন্ন মাত্রায়। এখনই জরুরি পদক্ষেপ না নিলে কভিড-১৯ পুরো একটি প্রজন্মের আশা ও ভবিষ্যৎকে ধ্বংস করে দিতে পারে। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, টিকাদান, পুষ্টি এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে, যা পরবর্তী ছয় মাসে চার লাখ ৫৯ হাজার শিশু ও মায়ের জীবন হুমকির মুখে ফেলেছে। ইউনিসেফ বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচিতে দৃঢ়ভাবে সমর্থন দেয়, তা সত্ত্বেও লকডাউনের সময় পরিসেবা প্রাপ্তির সীমিত সুযোগ এবং অভিভাবকদের সংক্রমণের আশঙ্কার কারণে এপ্রিল মাসে কেবল অর্ধেক শিশু তাদের নিয়মিত টিকা নিতে পেরেছে।
জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটি ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলথে মে মাসে প্রকাশিত একটি স্ট্যাডি অনুযায়ী মহামারীর পরোক্ষ কারণে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে আগামী ছয় মাসে বাংলাদেশে পাঁচ বছরের কম বয়সী ২৮ হাজারেরও বেশি শিশুর মৃত্যু হতে পারে।
