বুধবার, ২৪ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

চ্যালেঞ্জের মুখে চিকিৎসকরা

করোনা আক্রান্ত এবং উপসর্গ মিলে চিকিৎসক মৃত্যু হার ৩ দশমিক ৯০ শতাংশ

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন সরকারি-বেসরকারি আটজন চিকিৎসক। ইতিমধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ২৪৩ জন। তদুপরি দেশে করোনা আক্রান্ত বিবেচনায় মৃত্যুর ১ দশমিক ২৯ শতাংশ। এককভাবে করোনা আক্রান্ত চিকিৎসক মৃত্যুর হার ৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ। আবার করোনা আক্রান্ত এবং উপসর্গ মিলে চিকিৎসক মৃত্যুর হার ৩ দশমিক ৯০ শতাংশ। করোনাযুদ্ধের প্রথমসারির যোদ্ধা-খ্যাত চিকিৎসকরা এখন চ্যালেঞ্জের মুখে। করোনার চিকিৎসা দেওয়াটাই চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়িয়েছে। আক্রান্তদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে প্রতিনিয়ত ঝুঁকিতে পড়তে হচ্ছে চিকিৎসকদের। ফলে আক্রান্তের হার বাড়ছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।        চিকিৎসকদের অভিযোগ, ত্রুটিপূর্ণ নিরাপত্তা সামগ্রী, কর্তব্যরত চিকিৎসকদের জরুরি এন-৯৫ মাস্ক না দেওয়া, প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ছাড়া রোগীদের চলাচল, চিকিৎসকদের হাসপাতালের ভিতরে-বাইরে চলফেরা ও মানহীন সুরক্ষা সামগ্রী ব্যবহারের কারণে ঝুঁকি বাড়ছে চিকিৎসকদের। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের নিউরো-মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক ডা. সীমান্ত ওয়াদ্দেদার বলেন, ‘বাংলাদেশ ডক্টরস ফাউন্ডেশনের হিসাবে দেশে করোনা  আক্রান্ত বিবেচনায় মৃত্যুহার ১ দশমিক ২৯ শতাংশ। এককভাবে চিকিৎসক মৃত্যুহার ৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ। করোনা আক্রান্ত এবং উপসর্গ মিলে চিকিৎসক মৃত্যু হার ৩ দশমিক ৯০ শতাংশ। চট্টগ্রামে আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন আটজন চিকিৎসক, আক্রান্ত হয়েছেন ২৪৩ জন। ফলে করোনা আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিয়ে চিকিৎসকরা এখন প্রতিনিয়তই চ্যালেঞ্জ এবং ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। রোগীদের এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা এবং সচেতন থাকা উচিত।’ স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) চট্টগ্রাম বিভাগের করোনাবিষয়ক সমন্বয়ক ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমান বলেন, ‘চিকিৎসকরা সম্মুখসারির যোদ্ধা। তাই আমাদের ঝুঁকিটাও বেশি। সরকারিভাবে প্রয়োজনীয়সংখ্যক নিরাপত্তা সামগ্রী সরবরাহ করে হলেও এসবের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তা ছাড়া কিছু রোগীর স্বাভাবিক চলাফেরা চিকিৎসকদের জন্য ঝুঁকিটা বাড়ায়।’   বিএমএ চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি ডা. মুজিবুল হক খান বলেন, ‘চট্টগ্রামে ২৪৩ জন চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত এবং মারা যান আটজন। করোনাকালের প্রথম সারির যোদ্ধা খ্যাত চিকিৎসকরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। সরকারের কাছে দাবি, যেন সব চিকিৎসকের জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সামগ্রী সরবরাহ করা হয়। না হয় চিকিৎসকরা অতিমাত্রায় আক্রান্ত হলে চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার শঙ্কা তৈরি হবে।’ সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘সরকারি চিকিৎসকদের জন্য প্রণোদনা ও স্বাস্থ্যবীমা ঘোষণা করা হয়েছে। তবে বেসরকারি চিকিৎসকদের জন্য এখনো পর্যন্ত কোনো ঘোষণা আসেনি। এ ব্যাপারে আমরা একটা প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি।’  বিএমএ ও সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামে মোট চিকিৎসক আছে সাত হাজার।

এর মধ্যে সরকারি প্রায় দুই হাজার ও বেসরকারি পাঁচ হাজার। এদের মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২৪২ জন এবং মারা গেছেন আটজন। তা ছাড়া চট্টগ্রামের ১৪ উপজেলায় আছে ৭০৯ জন চিকিৎসক।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর