বুধবার, ২৪ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনায় এসএমইরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত

রিসারজেন্ট বাংলাদেশের সংলাপে বক্তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক

মহামারী করোনাভাইরাসে বেসরকারি খাতে এসএমই বা ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে জানিয়েছে বেসরকারি খাতের ব্যবসায়ীদের প্ল্যাটফরম রিসারজেন্ট বাংলাদেশ। সংগঠনটি বলেছে, এসএমইদের বর্তমান অবস্থার কোনো পরিবর্তন না হলে বেকারত্ব বেড়ে যাবে। অর্থনীতি আকস্মিক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। কভিড-১৯-এর কারণে ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হিমশিম খাচ্ছেন এসএমইরা। এ খাতের পুনরুদ্ধারে প্রয়োজন একটি সৃষ্টিশীল ও সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি। ফলে একুশ শতকের ব্যবসার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা যাবে। গতকাল রিসারজেন্ট বাংলাদেশ আয়োজিত ‘কভিড-১৯ ইকোনমিক ক্রাইসিস অ্যান্ড এসএমইজ অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক ভার্র্চুয়াল সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন। এসএমই খাতের সংকট মোকাবিলায় মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই), ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্ট (বিল্ড) ও পলিসি এক্সচেঞ্জের যৌথ উদ্যোগে গঠিত একটি প্ল্যাটফরম রিসারজেন্ট বাংলাদেশ। সংলাপে বক্তব্য দেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম, এমসিসিআই সভাপতি নিহাদ কবির, ডিসিসিআই সভাপতি শামস মাহমুদ, সাবেক মুখ্যসচিব আবদুল করিম, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান ড. নাসির উদ্দিন আহমেদ, বিল্ডের চেয়ারপারসন আবুল কাসেম খান, সিইও ফেরদৌস আরা বেগম, এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. মনজুর হোসেন, পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ড. এম মাসরুর রিয়াজ, ক্রিয়েশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশেদুল করিম মুন্না ও তরঙ্গের সিইও কোহিনূর ইয়াসমীন। শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেন, সরকারকে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে প্রণোদনা প্যাকেজের আওতাধীন ঋণসুবিধা পৌঁছাতে সহায়তা করবে একটি পূর্ণাঙ্গ ডেটাবেজ। তিনি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা তৈরিতে সমন্বিত উদ্যোগ, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, এসএমই খাতের পণ্যে বৈচিত্র্যকরণ, ঋণ বিতরণে শক্তিশালী মনিটরিং এসব বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেন।

 

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম বলেন, সরকার তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের মোবাইল ব্যাংকিংয়ে প্রণোদনা প্যাকেজের অর্থ বিতরণের মাধ্যমে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। একই ধরনের উদ্যোগ এসএমই খাতে ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রেও গ্রহণ করা যেতে পারে।

এমসিসিআই সভাপতি নিহাদ কবির বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের আকারের মধ্যকার বড় ধরনের পার্থক্যকে উপেক্ষা করে প্রায় সময় খাত দুটিকে একই শ্রেণিভুক্ত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মাঝারি ও বড় ঋণগ্রহীতারা যে ধরনের রেগুলেশন মেনে চলতে সক্ষম, ক্ষুদ্র ঋণগ্রহীতারা সে ধরনের রেগুলেশন মেনে চলতে সক্ষম নয়। ভবিষ্যতে এ বিষয়টি বিবেচনায় আনতে হবে।

ডিসিসিআই সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, এসএমই খাতের সংকট মোকাবিলায় নতুন সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। তৈরি পোশাকের বাইরের খাতগুলোকে পণ্যের মান উন্নয়ন ও প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের ভিত্তিতে কর ও ভ্যাট-সংক্রান্ত সুবিধা দিতে হবে।

এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, এসএমইদের জন্য করপোরেট ট্যাক্স ও টার্নওভার ট্যাক্স তুলনামূলক বেশি। ব্যাংক ঋণের সুদহারও কমাতে হবে।

বিল্ডের চেয়ারপারসন আবুল কাসেম খান বলেন, মহামারীর কারণে বেসরকারি খাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এসএমইরা। এসএমইদের বর্তমান অবস্থার কোনো পরিবর্তন না হলে বেকারত্ব বেড়ে যাবে এবং অর্থনীতি আকস্মিক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হিমশিম খাচ্ছে এসএমইরা।

এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, করোনায় বাজার সম্প্রসারণ থমকে গেছে। কমে গেছে উৎপাদন। কর্মী ছাঁটাই শুরু হয়ে গেছে। সরকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে তা বাস্তবায়নে ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থাগুলোকে কাজে লাগাতে হবে।

বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. মনজুর হোসেন বলেন, এসএমইরা ব্যবসা থেকে বের হয়ে গেলে তাদের ফিরিয়ে আনা কঠিন হবে। এসএমইদের কোনো ডেটাবেজ নেই, এ বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর