শনিবার, ২৭ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

ঘুরে দাঁড়াচ্ছে নারায়ণগঞ্জ

রোমান চৌধুরী সুমন, নারায়ণগঞ্জ

ঘুরে দাঁড়াচ্ছে নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জ করোনার হটস্পট, এপি সেন্টার ও রেড জোন। নারায়ণগঞ্জ জেলার কোনো মানুষ অন্য কোনো জেলায় প্রবেশ করেছে এটা শুনলেই শুরু হয় আতঙ্ক। কারণ শুরুতেই অভিযোগ রয়েছে, নারায়ণগঞ্জ দেশের প্রায় ৩২টি জেলায় করোনার বিস্তার ঘটিয়েছে। কিন্তু সেই নারায়ণগঞ্জ এখন ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। করোনায় এখানে মৃত্যুর সংখ্যা ঢাকার পর দ্বিতীয়। কিন্তু সুখবর হলো জেলায় আক্রান্তের অর্ধেক অর্থাৎ ৫০ ভাগই এখন করোনামুক্ত। আর করোনামুক্ত হয়েছেন বেশির ভাগ ঘরে আইসোলেশনে থেকেই। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গতকাল পর্যন্ত জেলায় চার হাজার ৯২৫ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে জেলায় মোট মৃত্যু হলো ১১০ জন আর সুস্থ হয়েছেন দুই হাজার ৪৭১ জন। এতে দেখা যায় আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হওয়ার সংখ্যা পুরো আক্রান্তের প্রায় ৫০ শতাংশ। সুস্থরা এখন স্বাভাবিক জীবনযাপন করছে। জানা যায়, আক্রান্তের দিক থেকে জেলাটি ঢাকার পরই শীর্ষ স্থানে। করোনার হটস্পট বলে খ্যাত হয়ে উঠেছিল নারায়ণগঞ্জ। কিন্তু সুস্থ হওয়ার দিক থেকে সবার আগে এগিয়ে এ জেলাটি। ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছে জেলার আক্রান্তরা। তবে এর মধ্যে চলে গেছে ১১০ জন। এ ছাড়াও অনেক ব্যক্তি করোনার উপসর্গে মারা গেছেন জেলায়, যাদের পরবর্তীতে আর টেস্ট করানো হয়নি। কিন্তু কীভাবে সুস্থ হচ্ছেন করোনা আক্রান্তরা : এ বিষয়ে প্রায় ১৮৫ জন করোনা আক্রান্তের সংস্পর্শে যাওয়া নারায়ণগঞ্জ জেলা মানবতার সংগঠন ‘এহসান পরিবার’ জানিয়েছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। এই পরিবারটি জেলায় এ পর্যন্ত করোনা রোগীসহ ৮৩টি লাশ দাফন করেছে। সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন থেকে এহসান পরিবারকে দায়িত্ব দেওয়া হয় করোনায় আক্রান্তদের ৩ হাজার ও মৃতদের ৫ হাজার টাকা স্বজনদের সামনে গিয়ে দিয়ে আসতে। সাহসী এই পদক্ষেপটি বাস্তবায়ন করেছে পরিবারটি। এহসান পরিবারের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ওয়াহিদ এ বিষয়ে বলেন, জেলা প্রশাসনের দায়িত্বটি ছিল করোনা রোগীর কাছে অনুদানের টাকা পৌঁছে দিয়ে তার স্বাক্ষর নিয়ে আসা। আমরা এ পর্যন্ত ১৮৭ জনের সংস্পর্শে গিয়েছিলাম। তারা কীভাবে সুস্থ হয়েছেন তা জানতে চাইলে বেশির ভাগ রোগী জানিয়েছেন, গরম পানির গারগিল। আদা লবঙ্গ লেবু দিয়ে প্রচুর গরম পানি পান, পানি গরম করে ভাপ ও সাধারণ জ্বর ঠান্ডা কাশির ওষুধ সেবন। আর অবশ্যই পরিবারের অন্য কেউ যেন আক্রান্ত না হয় সে লক্ষ্যে সদস্যদের কাছ থেকে নিজেকে আলাদা রাখা। জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইমতিয়াজ জানান, করোনায় জেলায় মোট আক্রান্তের প্রায় অর্ধেক মানুষ ইতিমধ্যেই সুস্থ হয়েছেন। তাদের সিংহভাগই বাড়িতে অবস্থান করে চিকিৎসাসেবা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন। তবে যাদের শ্বাসকষ্ট বা নানা জটিল উপসর্গ ছিল তারা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর