সোমবার, ২৯ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

মামলা তদন্তে বাধা করোনা

অস্বস্তিতে সংশ্লিষ্টরা

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

মামলা তদন্তে বাধা করোনা

করোনা প্রাদুর্ভাব পরিস্থিতিতে থমকে আছে বিভিন্ন মামলার তদন্তের গতি। ফলে চার্জশিট ও চূড়ান্ত প্রতিবেদনের হার নেমে এসেছে স্বাভাবিক সময়ের অর্ধেকে। এরই মধ্যে মামলার তদন্তের গতি বাড়াতে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি) এবং জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সিএমপির কমিশনার মাহাবুবর রহমান বলেন, ‘করোনা প্রাদুর্ভাব পরিস্থিতির মধ্যে মামলার তদন্তের গতি কিছুটা স্লো হয়েছে। আগামী দু-এক দিনের মধ্যে সিএমপির সিনিয়র কর্মকর্তা ও ওসিদের সঙ্গে বৈঠক করে মামলার তদন্তের গতি বাড়াতে নির্দেশনা দেওয়া হবে।’ চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক বলেন, ‘করোনা প্রাদুর্ভাব পরিস্থিতির প্রভাব সব সেক্টরের মতো পুলিশ বিভাগেও পড়েছে। তাই মামলার তদন্তের গতি কিছুটা কমেছে। মামলার তদন্তের গতি বাড়াতে এরই মধ্যে উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ।’ জানা যায়, স্বাভাবিক সময়ে সিএমপি ও জেলার পুলিশের প্রতিটি থানা মাসে গড়ে ২৫ থেকে ৫০টি মামলা তদন্ত করে চার্জশিট কিংবা চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে পাঠানো হতো। কিন্তু করোনাকালে এ হার নেমে আসে ১৫ থেকে ২০টির মধ্যে। কোনো কোনো থানায় এ হার আরও কম। মামলার তদন্ত শেষ করার হার কমে যাওয়ার জন্য তদন্ত কর্মকর্তারা দায়ী করেছেন করোনা প্রাদুর্ভাব পরিস্থিতির প্রতিকূল পরিবেশকে। বিভিন্ন মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের দাবি- করোনা প্রাদুর্ভাব পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পর থেকে মামলার তদন্তে প্রতিকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। মামলার তদন্তের স্বার্থে অনেক বাদীর সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তাদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। মামলার সাক্ষীও তদন্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করতে অনীহা প্রকাশ করছে। তথ্য ও ডকুমেন্ট পাওয়া যাচ্ছে না সংশ্লিষ্ট দফতর ও সংস্থার কাছ থেকে। ঘটনার স্পটে গেলেও অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে লোকজন ঘরবন্দী থাকার কারণে প্রত্যক্ষদর্শী ও ওই এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলতে পারছেন না তদন্ত কর্মকর্তারা। ফলে সব মিলিয়ে মামলার তদন্ত থমকে আছে। নগর ও জেলা পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মাদক মামলা তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশকে সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে। মাদক উদ্ধারের সঙ্গে আসামি গ্রেফতার হলে ওই মামলার তদন্ত ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে শেষ করতে হয়। তবে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুমতি নিয়ে আরও কিছু দিন বাড়ানো যায়। লকডাউন ও করোনা প্রাদুর্ভাব পরিস্থিতি দীর্ঘ হওয়ায় অনেক মামলার তদন্ত বাড়তি সময়েও শেষ করা যাচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে নানামুখী চাপে পড়তে হয়। তাই মাদক মামলা নিয়ে অস্বস্তিতে রয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, ‘কোনো মামলা তদন্ত করতে গেলে বাদী, বিবাদী, সাক্ষীসহ বিভিন্নজনের সঙ্গে কথা বলতে হয়। নানান জায়গায় গিয়ে তথ্য ও ডকুমেন্ট সংগ্রহ করতে হয়। কিন্তু করোনা প্রাদুর্ভাব পরিস্থিতির মধ্যে এসবের কোনোটাই স্বাভাবিক সময়ের মতো হচ্ছে না। তাই প্রায় সব মামলার তদন্ত ধীরগতিতে চলছে।’

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর