করোনা আক্রান্তের সংখ্যা যখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, তখন বাদ পড়ছেন না স্বাস্থ্যকর্মীরাও। প্রতিদিনই রাজশাহীর আক্রান্তের তালিকায় মিলছে চিকিৎসক, নার্সসহ স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে জড়িতদের নাম। গত ১৫ দিনে অর্ধশত চিকিৎসক আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তের তালিকায় আছেন শতাধিক স্বাস্থ্যকর্মী। চিকিৎসক নেতারা বলছেন, স্বাস্থ্যকর্মীরা চিকিৎসা দিতে রোগীর কাছাকাছি যান। ফলে তাদের ঝুঁকি বেশি। কিন্তু নকল সুরক্ষাসামগ্রীর কারণেই আক্রান্তের হার বাড়ছে। স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের নেতৃবৃন্দের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, গত ২৮ জুন পর্যন্ত রাজশাহীর ২৫ জন চিকিৎসক সংক্রমিত হয়েছেন। ২৮ জুনই সংক্রমিত হয়েছেন ১৩ জন। এর বাইরে ২৫ জুন পর্যন্ত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১৯ জন নার্স আক্রান্ত হয়েছেন। একই সঙ্গে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ওয়ার্ডবয় ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের একটা অংশও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। চিকিৎসক নেতা ডা. মাহাবুবুর রহমান খান বাদশা জানান, দেশের বাজারে কম দামে স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী আসছে। এগুলোর মান নিয়ে সংশয় আছে। চীনের ৯০ থেকে ৯২টি প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী প্রস্তুত করছে। তারা বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে ওই সব পণ্য সরবরাহ করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এসব প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্য নকল বলে জানিয়েছে। সেই পণ্যগুলো এখনো বাজারে থেকে গেছে। তিনি আরও জানান, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে বিভিন্ন সংগঠন ও রাজনৈতিক নেতারা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী প্রদান করেছেন। এগুলোর মান নিয়েও সংশয় আছে। মানুষ জাকাতে দেওয়া পণ্য কখনো ভালো দেয় না। দানে পাওয়া স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রীগুলোর ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। দেশের বাজারে যেসব মাস্ক, গ্লাভস ও পিপিই বিক্রি করা হচ্ছে তার অধিকাংশই মানহীন ও নকল। যা ব্যবহার করে চিকিৎসকরা সংক্রমিত হচ্ছেন। স্বাধীনতা চিকিৎসক জেলা কমিটির সভাপতি ডা. চিন্ময় কান্তি জানান, শুধু সুরক্ষাসামগ্রীগুলো নিম্নমানের হওয়ায় বেশির ভাগ স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। এভাবে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা আক্রান্ত হতে শুরু করলে পরে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য আর চিকিৎসক পাওয়া যাবে না। তিনি বলেন, ‘একজন চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হলে তার সংস্পর্শে আসা অন্যদের আইসোলেশনে যেতে হয়। তিনি বলেন, সুরক্ষাসামগ্রীগুলো যেন মানসম্মত দেওয়া হয়।’