বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, ত্রুটিপূর্ণ বিল দ্রুত সংশোধনসহ বকেয়া বিদ্যুৎ বিল আদায়ে ছয় দফা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এজন্য বকেয়া বিল আদায়ে মাসভিত্তিক পৃথক পৃথক বিদ্যুৎ বিল তৈরি করে মোবাইল, বিকাশ, জি-পে, রবিক্যাশ, অনলাইনে ঘরে বসে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বাজেট অধিবেশনে গতকাল প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ তথ্য জানান। চট্টগ্রাম-৩ আসনের সদস্য মাহফুজুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশে কভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হওয়ায় সরকার করোনা সংক্রমণ রোধে ২৬ মার্চ থেকে দেশব্যাপী সাধারণ ছুটি ঘোষণা এবং এলাকাভিত্তিক লকডাউন কার্যকর করায় গ্রাহকদের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে আবাসিক গ্রাহকদের ফেব্রুয়ারি, মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসের বিদ্যুৎ বিল সারচার্জ ছাড়া ৩০ জুনের মধ্যে পরিশোধের সুযোগ দেওয়া হয়। ফলে অধিকাংশ গ্রাহক বিল পরিশোধ থেকে বিরত থাকায় বিপুল পরিমাণে বকেয়া সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, বকেয়া বিল আদায়ের লক্ষ্যে যেসব কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে তা হলো, কয়েক মাসের ইউনিট একত্র করে একসঙ্গে অধিক ইউনিটের বিল না করা, মাসভিত্তিক পৃথক পৃথক বিদ্যুৎ বিল তৈরি করা, একসঙ্গে অধিক ইউনিটের বিল করে উচ্চ ট্যারিফ চার্জ না করা, ত্রুটিপূর্ণ বা অতিরিক্ত বিল দ্রুত সংশোধনের ব্যবস্থা করা, মে মাসের বিদ্যুৎ বিল (যা জুন মাসে তৈরি হচ্ছে) মিটার দেখে সঠিকভাবে প্রস্তুত করা এবং মোবাইল, বিকাশ, জি-পে, রবিক্যাশ, অনলাইনে ঘরে বসে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের সুযোগ সৃষ্টি করা। ২০টি ফিল্ড থেকে গ্যাস উত্তোলন হবে সরকারি দলের এমপি নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, দেশে এ পর্যন্ত ২৭টি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে ২০টি থেকে গ্যাস উত্তোলন করা হবে। ভোলা নর্থ গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন করা যাবে। রূপগঞ্জ ও সাঙ্গু গ্যাসক্ষেত্রের গ্যাস নিঃশেষ হয়ে যাওয়ায় উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। বাকি ৪টি গ্যাসক্ষেত্রের সীমিত গ্যাস মজুদ, বাণিজ্যিক সম্ভাব্যতা আইনগত জটিলতা ইত্যাদি বিবেচনায় গ্যাস উত্তোলনের বিষয়টি পুনঃমূল্যায়ন প্রয়োজন। এ সময় মন্ত্রী আরও জানান, বিগত ৫ বছরে (২০১৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত) খননকৃত নতুন কূপের সংখ্যা ২৫টি।

কিশোরগঞ্জে বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের বিল সংসদে উত্থাপন : কিশোরগঞ্জে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নামে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের লক্ষ্যে জাতীয় সংসদে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় বিল-২০২০’ বিল উত্থাপিত হয়েছে। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে চলমান বাজেট অধিবেশনে গতকাল বিলটি উত্থাপন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। পরে বিলটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে প্রেরণ করা হয়। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপনের খসড়া আইনের অনুমোদন দেওয়া হয়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় বিলে ৫৫টি ধারা রয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর, ভাইস-চ্যান্সেলর, কোষাধ্যক্ষ নিয়োগ, সিন্ডিকেট গঠন, অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল ও অর্থ কমিটি গঠন বিন্যাস, দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে বিধানাবলি রয়েছে।

ভার্চুয়াল আদালত বিল প্রতিবেদন পেশ : এ ছাড়া গতকাল আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে অনলাইন ভার্চুয়াল আদালত সম্পর্কে ‘আদালত কর্তৃক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার বিল-২০২০’-এর প্রতিবেদন সংসদে পেশ করেছে। কমিটির সভাপতি আবদুল মতিন খসরু প্রতিবেদনটি সংসদে উপস্থাপন করেন। এতে সংশোধিত আকারে বিলটি পাসের সুপারিশ করা হয়।