বুধবার, ১ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে হাই ফ্লো ন্যাসাল ক্যানোলা মাত্র ছয়টি!

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সংকটাপন্ন রোগীর চিকিৎসায় অতি জরুরি সেবা ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ)। বর্তমানে চট্টগ্রামে সরকারি দুই হাসপাতালে আইসিইউ আছে মাত্র ১৬টি। এগুলোই সংকটাপন্ন রোগীর ভরসা। পক্ষান্তরে মুমূর্ষু রোগীর সেবায় আইসিইউর পরিপূরক হিসেবে গুরুত্ব পাচ্ছে হাই ফ্লো ন্যাসাল ক্যানোলা। কিন্তু চট্টগ্রামে এটিরও সংকট। করোনার প্রকোপ দেখা দেওয়ার পর প্রায় চার মাস পার হয়েছে। অথচ চট্টগ্রামে কেবল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালেই ছয়টি হাই ফ্লো ন্যাসাল ক্যানোলা আছে। চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে অনুদানের তিনটি থাকলেও সেন্ট্রাল অক্সিজেনের অভাবে সেগুলো চালু করা যায়নি। অন্যদিকে বিআইটিআইডি হাসপাতাল, রেলওয়ে হাসপাতাল ও হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতাল সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হলেও এখানেও নেই হাই ফ্লো ন্যাসাল ক্যানোলা।   বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা মনে করছেন, মুমূর্ষু রোগীদের তাৎক্ষণিক সেবায় আইসিইউর সংকটের এই সময়ে পরিপূরক হিসেবে হাই ফ্লো ন্যাসাল ক্যানোলা খুবই কার্যকর। করোনা আক্রান্ত রোগীর অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৮০-এর নিচে কমতে থাকলে তখন আইসিইউ ভেন্টিলেটর সাপোর্ট প্রয়োজন হয়। কিন্তু ভেন্টিলেটরের মাধ্যমে রোগীর শরীরে চাহিদামতো দ্রুত অক্সিজেন সরবরাহ করা সম্ভব হয় না। এমতাবস্থায় হাই ফ্লো ন্যাসাল ক্যানোলা অক্সিজেন সরবরাহ বেশি কার্যকর। এটি দিয়ে রোগীকে এক মিনিটে ৬০-৭০ লিটার অক্সিজেন দেওয়া সম্ভব। রোগীর অক্সিজেন স্যাচুরেশন বেশি কমে গেলে তখন অক্সিজেন সরবরাহটা দ্রুত দিতে হয়। তবে এর জন্য অবশ্যই হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা দরকার। বর্তমান পরিস্থিতিতে চট্টগ্রামে অন্তত ৫০টি হাই ফ্লো ন্যাসাল ক্যানোলা দরকার। চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার (আইসিইউ ওয়ার্ড) ডা. রাশেদুল হাসান বলেন, ‘শ্বাসকষ্টের করোনা রোগীদের হাই ফ্লো ন্যাসাল ক্যানোলা দিয়ে সেবা দেওয়াটা খুবই কার্যকর। এটি দিয়ে অনেক রোগীকে বাঁচানো সম্ভব। তবে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ ছাড়া সেবাটা দেওয়া যায় না। জেনারেল হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহে কাজ এখন চলমান। এর মাধ্যমে আইসিইউর চাপ কমবে।’

সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘আইসিইউ’র পরিপূরক হিসেবে হাই ফ্লো ন্যাসাল ক্যানোলা খুব কার্যকর একটি সেবা। সরকারিভাবে চট্টগ্রামে এখনো না আসলেও আসার প্রক্রিয়া চলছে। এটা যত বেশি থাকবে, রোগী তত বেশি সেবা পাবে। তবে এটি স্থাপনের পূর্বশর্ত হলো সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা থাকা। শ্বাসকষ্টের রোগীর জন্য ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৫টা সিলিন্ডার লাগবে, যা সেন্ট্রাল অক্সিজেন ছাড়া সম্ভব নয়।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেশে করোনা সংক্রমণের চার মাস পার হচ্ছে। এখনো চট্টগ্রামের সরকারি হাসপাতালগুলোতে হাই ফ্লো ন্যাসাল ক্যানোলা দেওয়া হয়নি। 

বর্তমানে চমেক হাসপাতালের ছয়টি থাকলেও এগুলো অনেক রোগীকে ভাগাভাগি করে দিতে হয়। তাছাড়া বেসরকারি হাসপাতালে আছে ১১টি। কিন্তু সাধারণ গরিব-অসহায় রোগীদের পক্ষে বেসরকারি অভিজাত হাসপাতালের ব্যয় বহন করা সম্ভব হয় না। ফলে গরিব রোগীরা জরুরি এ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর