বুধবার, ১ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

স্বাস্থ্য খাতে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ চায় বাংলাদেশ

দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোনালাপ : করোনার জন্য বরাদ্দ ৪৩ মিলিয়ন ডলার

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

যুক্তরাষ্ট্রকে আইডিএফসি ফান্ডের আওতায় বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর সঙ্গে এক ফোনালাপে এ আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। এ সময় মাইক পম্পেও জানান, যুক্তরাষ্ট্র করোনা মহামারী মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সাহায্যের জন্য ৪৩ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করেছে। তিনি করোনা মহামারী মোকাবিলায় বাংলাদেশের উদ্যোগের প্রশংসা করেন। গতকাল ঢাকা ও ওয়াশিংটনের পররাষ্ট্র দফতর থেকে আলাদা আলাদা বিবৃতিতে এ ফোনালাপের তথ্য জানানো হয়েছে।

ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বাংলাদেশ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বৈচিত্র্য আনতে চায় উল্লেখ করে ড. মোমেন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক জোনে যুক্তরাষ্ট্রকে বিনিয়োগেরও অনুরোধ করেন। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের হাইটেক পার্ক, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দক্ষ জনবল এবং বিপুল সংখ্যক শ্রমিকের সহজলভ্যতার কারণে এ দেশে বিনিয়োগ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য লাভজনক হবে। ড. মোমেন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে দুই বছর শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদানের জন্য অনুরোধ করেন। তিনি উল্লেখ করেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের ক্রেতারা ক্রয়াদেশ বাতিল করায় এ খাতে কর্মরত শ্রমিকরা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে যার অধিকাংশ নারী। মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রত্যাবাসনে যুক্তরাষ্ট্রকে আরও দৃঢ় ভূমিকা রাখার অনুরোধ করেন ড. মোমেন। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে চুক্তির বাস্তবায়নে মিয়ানমার সময় ক্ষেপণ করছে। সম্প্রতি রাখাইন প্রদেশে মিয়ানমারের সামরিক অভিযানের বিষয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা হিসেবে ৮২০ মিলিয়ন ডলার প্রদান করেছে। মানব পাচার রোধে টিআইপি রিপোর্টে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ধাপে উন্নয়নের প্রশংসা করেন মাইক পম্পেও। এ বিষয়ে ড. মোমেন যুক্তরাষ্ট্রেকে ধন্যবাদ জানান। যুক্তরাষ্ট্রে বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে বাংলাদেশে ফেরত এনে তার শাস্তি নিশ্চিত করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মাইক পম্পেওকে অনুরোধ করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।  টেলিফোনে আলাপকালে উভয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের ওপর জোর দেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে, মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কভিড-১৯ মহামারী মোকাবিলায় পরস্পরের সহযোগী হয়ে কাজ অব্যাহত রাখবে দুই দেশ। একই সঙ্গে ইউএস-বাংলাদেশের মধ্যকার বিদ্যমান সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে বলেও উল্লেখ করা হয়। করোনা পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে এ যাবৎ ৪৩ মিলিয়ন ডলার যুক্তরাষ্ট্র প্রদান করেছে বাংলাদেশকে-এ প্রসঙ্গ উল্লেখ করে পম্পেও বলেছেন, করোনা রোধে চলমান ভ্যাকসিন উদ্ভাবন বা আবিষ্কারের জন্য আন্তর্জাতিক উদ্যোগে বাংলাদেশের সাড়া এবং চিকিৎসকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা-সরঞ্জাম প্রদানের ব্যাপারটিও সর্বত্র প্রশংসিত হচ্ছে। এ সময় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ঠাঁই দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের উদারতার প্রশংসাও করেন।

উভয় নেতা রোহিঙ্গাদের নিজ বসতভিটায় সম্মানের সঙ্গে নিরাপদে মিয়ানমারে ফিরতে সক্ষম হন এমন চেষ্টায় ত্রুটি করবেন না বলেও একমত পোষণ করেন। টেকসই উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক স্থিতিকে স্থায়ী করতে তথ্য প্রবাহ অবাধ এবং সব কাজে স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতার গুরুত্ব অপরিসীম বলে মন্তব্য করা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর