শিরোনাম
শনিবার, ৪ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

অ্যান্টিবডি কিটের কার্যকারিতা খুব সহজে প্রমাণ হবে

- -গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র

নিজস্ব প্রতিবেদক

যুক্তরাষ্ট্রের ঔষধ প্রশাসনের (এফডিএ) আমব্রেলা গাইডলাইন অনুসরণ করে নিজেদের উদ্ভাবিত অ্যান্টিবডি কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষা করেছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। এতে দেখা গেছে, কিটটির সংবেদনশীলতা (সেনসিটিভিটি) ৯৭ দশমিক ৭ শতাংশ ও নির্দিষ্টতা (স্পেসিফিসিটি) ৯৬ শতাংশ। কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পরীক্ষায় কিটটির সর্বোচ্চ সংবেদনশীলতা পাওয়া গিয়েছিল ৬৯ দশমিক ৭ শতাংশ ও নির্দিষ্টতা ৯৬ শতাংশ। ঔষধ প্রশাসন জানিয়েছিল, এফডিএ’র আমব্রেলা গাইডলাইনের আলোকে কিটের সর্বনিম্ন সংবেদনশীলতা ৯০ শতাংশ ও নির্দিষ্টতা ৯৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এফডিএ’র আমব্রেলা গাইডলাইন অনুসরণ করে গণস্বাস্থ্য কর্তৃক কিটটির কার্যকারিতা পরীক্ষার বিষয়টি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র নিশ্চিত করেছে।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অ্যান্টিবডি কিটের সংবেদনশীলতার মাত্রা এর ন্যূনতম গ্রহণযোগ্যতার মাত্রা ৯০ শতাংশের কম হওয়ায় এটির অনুমোদন দেয়নি ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর। তবে, পরবর্তীতে কিটটির উন্নয়নের বিষয়ে প্রয়োজনীয় টেকনিক্যাল সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিল ঔষধ প্রশাসন।

সূত্র জানায়, গণস্বাস্থ্য তাদের কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য আরটি-পিসিআর পরীক্ষায় ‘পজিটিভ’ এমন ৪৫ জন রোগীকে নির্ধারণ করেছে। তাদের মধ্যে উপসর্গ দেখা দেওয়ার বা পরীক্ষার ফল পজিটিভ আসার ১৪ থেকে ২১ দিনের মধ্যে তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রত্যেকটি নমুনা এনজাইম লিঙ্কড ইমিউনো সরবেন্ট অ্যাসে (এলিসা) পদ্ধতিতে পরীক্ষা করে কিটের কার্যকারিতা নির্ধারণে ৪৩টি নমুনা ব্যবহার করা হয়েছে। পরীক্ষায় এর মধ্যে ৪২টির ফল ‘পজিটিভ’ ও একটির ‘নেগেটিভ’ এসেছে। অর্থাৎ কিটের সংবেদনশীলতার হার ৯৭ দশমিক ৭ শতাংশ। এ ছাড়াও, ‘নেগেটিভ স্যাম্পল’ হিসেবে ধরে তারা আরও ১০০টি নমুনা পরীক্ষা করেছে, যেগুলো করোনা মহামারী শুরু হওয়ার দুই বছর আগে সংগ্রহ করে সঠিকভাবে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। সেই নমুনাগুলোর মধ্যে দেখা গেছে, ৯৬টি নমুনার ফল ‘পজিটিভ’ এবং চারটি নমুনার ফল ‘নেগেটিভ’।

বিএসএমএমইউর পরীক্ষায় দেখা গেছে, অন্তত ১৪ দিন ধরে উপসর্গ নেই, এমন ১০৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করার পর ৭৬ জনের শরীরে অ্যান্টিবডি শনাক্ত করতে পারে এই কিট। তার মানে আক্রান্ত হয়ে সুস্থতার পথে আছেন, এমন ব্যক্তিদের শনাক্তে এই কিটের সেনসিটিভিটি প্রায় ৭০ শতাংশ।

কিটের কার্যকারিতার ব্যাপারে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আগামী ৫ জুলাই ঔষধ প্রশাসনের সঙ্গে আমরা বসে আলোচনা করব। আমরা নিশ্চিত হয়েছি, এফডিএ’র গাইডলাইন অনুসরণ করলে আমাদের অ্যান্টিবডি কিটের কার্যকারিতা খুব সহজে প্রমাণ হবে। অ্যান্টিজেন কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষার ক্ষেত্রে কোন গাইডলাইন অনুসরণ করা হবে, তাও আগে নির্ধারণ করে দেওয়ার অনুরোধ করব। একটি সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন থাকলে আমরাও সেই অনুযায়ী

প্রস্তুতি নিতে পারব। যেহেতু অনুমোদন না দিলেও কিটের পরবর্তী উন্নয়নে তারা (ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর) আমাদের সহযোগিতা করতে চেয়েছে। তাই আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনা করব এবং এসব বিষয়ে জানতে চাইব।’

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কিটের উদ্ভাবক বিজ্ঞানী- গবেষক ড. বিজন কুমার শীল বলেন, ‘আমরা আমাদের কিটের ব্যাপারে আগেও কনফিডেন্ট ছিলাম, এখন আরও বেশি কনফিডেন্ট। এফডিএ সম্প্রতি অ্যান্টিবডি কিটের গাইডলাইন প্রকাশ করেছে। এফডিএ’র আমব্রেলা গাইডলাইন অনুসরণ করে যদি আমাদের কিটের কার্যকারিতা যাচাই করা হয়, তাহলে খুব সহজে আমাদের কিটের কার্যকারিতা প্রমাণ হবে। আমরা নিজেরা পরীক্ষা করে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি।

গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের রিসার্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্টের প্রধান ডা. আসিফ মাহমুদ প্রজেক্টরের মাধ্যমে এই ভ্যাকসিন সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা করোনার ভ্যাকসিনে সফল হয়েছি। প্রাণীদেহে এটা সফল হয়েছে। এখন আমরা আশা করছি, মানবদেহেও সফলভাবে কাজ করবে আমাদের ভ্যাকসিন।

তিনি বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে এখন সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে যাব। এরপর আমরা তাদের দেওয়া গাইডলাইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করব। এনসিবিআই ভাইরাস ডেটাবেজ অনুযায়ী গত মঙ্গলবার পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী পাঁচ হাজার ৭৪৩টি সম্পূর্ণ জিনোম সিকোয়েন্স জমা হয়েছে যার মধ্যে বাংলাদেশ থেকে জমা হয়েছে ৭৬টি। ওই সিকোয়েন্স বায়োইনফরম্যাটিক্স টুলের মাধ্যমে পরীক্ষা করে গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড তাদের টিকার টার্গেট নিশ্চিত করে। যা যৌক্তিকভাবে এই ভৌগোলিক অঞ্চলে অধিকতর কার্যকরী হবে। ওই টার্গেটের সম্পূর্ণ কোডিং সিকোয়েন্স যুক্তরাষ্ট্রের এনসিবিআই ভাইরাস ডাটাবেজে জমা দিয়েছি যা ইতিমধ্যেই এনসিবিআই কর্তৃক স্বীকৃত ও প্রকাশিত হয়েছে।

সর্বশেষ খবর