রবিবার, ৫ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

তদবিরে বদলি নয়

--- আইজিপি

নিজস্ব প্রতিবেদক

পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, তদবিরে আর কোনো বদলি নয়। পুলিশ কর্মকর্তা এবং ফোর্সের জন্য বাস্তবসম্মত বদলি ও পদায়নের নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে বদলির তদবির কালচারকে চিরতরে বিদায় করা হবে। সন্তানদের লেখাপড়ার কথা বলে যারা ঢাকার বাইরে যেতে চান না, তাদের জন্য বিভাগীয় শহরগুলোতেও মানসম্মত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। গতকাল বিকালে রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটরিয়ামে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) আয়োজিত বিশেষ অপরাধ ও আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আইজিপি। ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ডিএমপির সব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আইজিপি বলেন, চলমান করোনাকালে গত তিন মাসে পুলিশ বদলে  গেছে। পুলিশ জনগণের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে।

 

 জনগণের আকুণ্ঠ সমর্থন ও বিশ্বাস অর্জন করেছে। এই সময়ে জনগণের পাশে গিয়ে পুলিশ যেভাবে সেবা দিয়েছে, এর বেশির ভাগই পুলিশের কাজ ছিল না। কিন্তু পুলিশ এ কাজটি করেছে একান্তই নিজের দায়িত্ববোধ থেকে। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর পুলিশ এত সম্মান, এত মর্যাদা আর কখনো পায়নি, যা গত তিন মাসে পেয়েছে। এখন জনগণ পুলিশের পক্ষে কথা বলছে, পুলিশের জন্য লিখছে, যারা কথায় কথায় পুলিশের সমালোচনা করতেন, তারাও আজ পুলিশের পক্ষে হৃদয় উজাড় করে বলছেন, পুলিশকে সমর্থন করেছেন। যে সম্মান মর্যাদা আমরা গত তিন মাসে পেয়েছি তা টাকা দিয়ে কেনা যায় না, মানুষের ভালোবাসা পেতে হলে মানুষের সঙ্গে থাকতে হয়, তাদের কাছে যেতে হয়, মানুষকে ভালোবাসতে হয়।

আইজিপি প্রশ্ন রেখে বলেন, এক দিন করোনা চলে যাবে। এরপর কি আমরা আবারও আমাদের আগের স্বরূপে আবির্ভূত হব? না, দেশ পুলিশ আর পেছনে ফিরে যাবে না। জনগণের সম্মান ও ভালোবাসা নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। জনগণের পুলিশ হতে হলে পুলিশকে সব ধরনের দুর্নীতিমুক্ত হতে হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান ‘জিরো টলারেন্স’। পুলিশে কোনো দুর্নীতিবাজের ঠাঁই নেই। মাদকের সঙ্গে কোনো পুলিশ সদস্যের সম্পর্ক থাকবে না। পুলিশকে হতে হবে মাদকমুক্ত। পুলিশের নিষ্ঠুরতা বন্ধ করে আইনি সক্ষমতাকে কাজে লাগাতে হবে। পুলিশকে যেতে হবে জনগণের দোরগোড়ায়। পুলিশ অফিসার এবং ফোর্সের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করা হবে।

করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের সর্বোচ্চ চিকিৎসায় গৃহীত পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালকে মাত্র দুই সপ্তাহে ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল থেকে ৫০০ শয্যার কভিড হাসপাতালে রূপান্তর করা হয়েছে। করোনা পরীক্ষার জন্য মাত্র ১২ দিনে পিসিআর মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। ঢাকায় একটি হাসপাতাল ভাড়া করা হয়েছে। ঢাকার বাইরে বিভাগীয় হাসপাতাল আধুনিকায়ন করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, পুলিশ সদস্যদের সংক্রমণের ঝুঁকি এড়ানোর জন্য আবাসন ব্যবস্থা এবং ডিউটিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর ফলে পুলিশ সদস্যদের আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা কমেছে এবং মৃত্যুহার হ্রাস পেয়েছে। তিনি বলেন, আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকলে, ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলে আরও ভালো কিছু করা সম্ভব। আসুন, আমরা পরিবর্তিত হই, দেশকে পরিবর্তন করি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আগামী প্রজন্মের জন্য একটি উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তুলি।

আইজিপি তার বক্তব্যের শুরুতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে জনগণকে সুরক্ষিত রাখতে গিয়ে দায়িত্ব পালনকালে জীবন উৎসর্গকারী ৪৫ জন শহীদ পুলিশ সদস্যের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানান। এসব পরিবারের অংশ হিসেবে সুখে-দুঃখে তাদের সঙ্গে থাকার দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর