রাজধানীর তেজগাঁওয়ের রেললাইন বস্তিতে মাদক সেবন, ক্রয়-বিক্রয় অনেকটা ওপেন সিক্রেট ছিল এত দিন। ওই রেললাইন দিয়ে হেঁটে গেলেই একসময় প্রকাশ্যেই চোখে পড়ত মাদকের পসড়া। বর্তমানেও রেললাইনের পাশের ঝুপড়ি ঘরগুলোতে হাট বসার মতো হাঁকডাক দিয়েই বিক্রি হতো মাদক। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বহুবার অভিযান চালালেও অবস্থার উন্নতি হয়নি। অবশেষে তেজগাঁও রেললাইন সংলগ্ন ওই ঝুপড়ি ঘরগুলো উচ্ছেদ করেছে পুলিশ। গতকাল এ অভিযানে বস্তির শতাধিক ঘর উচ্ছেদ করা হয়েছে। ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের ডিসি মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, এফডিসি সংলগ্ন রেললাইনের পাশ থেকে তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ড পর্যন্ত ঘরগুলো উচ্ছেদ করা হয়েছে। এসব ঘরে মাদক সেবনের আড্ডা বসত এবং মাদক বিক্রি করা হতো।
এ ছাড়া কিছুদিন আগেই আমরা এখান থেকে বেশ কয়েকজনকে মাদকসহ গ্রেফতার করি। সার্বিক বিবেচনায় অভিযান চালিয়ে আনুমানিক ১০০টি বস্তি ঘর ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আমরা কিছু পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। তাদের বিষয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। পুলিশসহ মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তেজগাঁও বিভাগে কোনো মাদকের আড্ডা থাকতে দেব না। মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। মাদক নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত এ ধরনের অভিযান চলবে।ঢাকা রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিব উল হোসেন বলেন, গতকাল স্থানীয় থানা পুলিশের সঙ্গে রেলওয়ে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী মিলে এ অভিযান চালানো হয়।
রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সহকারি কমান্ডার মো. শহীদুল্লাহ বলেন, বছরের পর বছর ধরে রেললাইন দখল করে ঘর বানিয়ে রাখা হয়। এ কারণে রেল চলাচলে মারাত্মক বিঘœ ঘটছে। এর আগে অভিযান চালিয়ে সেগুলো ভেঙে ফেলাও হয়। কিন্তু আবার তারা চলে আসে। তবে এবার অভিযানের সঙ্গে এখানে সার্বক্ষণিক বাহিনীর লোকজন থাকবে।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে ডিএমপির মাসিক অপরাধ সভায় পুলিশের সংশ্লিষ্টতায় তেজগাঁও কেন্দ্রিক মাদক কারবারের বিষয়টি উঠে আসে। তেজগাঁও ও তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ২০ পুলিশ সদস্যসহ বেশ কয়েকজন মাদক কারবারির নাম উঠে আসে। এর একদিন পরেই ওই বস্তিতে অভিযান চালায় পুলিশ।