বুধবার, ৮ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

বেইজ পেপার কারখানায় ব্যাপক অনিয়ম

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকার ধামরাইয়ে বেইজ পেপারস লিমিটেডের কারখানায় নানা ধরনের অনিয়ম পেয়েছে পরিবেশ অধিদফতর। গতকাল অধিদফতরের মনিটরিং অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট বিভাগের একটি দল পরিদর্শনকালে দেখতে পায় কারখানাটিতে তরল বর্জ্য শোধনাগার (ইটিপি) রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পরিবেশসম্মত ব্যবস্থা নেই। এ ছাড়া নিয়ম বহির্ভূতভাবে বাইপাস লাইনের মাধ্যমে কারখানার দূষিত বর্জ্য পাশের কৃষি জমিতে ফেলে পরিবেশের ক্ষতি করছে। ইটিপির গুরুত্বপূর্ণ ইনলেট ও আউটলেট ফ্লু মিটার নেই। এমনকি পরিদর্শন দলকে কারখানার প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও দেখাতে পারেনি। এ ছাড়া পরিবেশের ছাড়পত্র মেয়াদোত্তীর্ণসহ বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম পেয়েছে পরিদর্শন দলটি। মূলত সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে মনগড়াভাবে পরিচালিত হচ্ছে এ কারখানাটি। এ দলটিতে ছিলেন পরিবেশ অধিদফতরের ঢাকার সহকারী পরিচালক এ কে এম হাসানুর রহমান পলাশ, পরিদর্শক মির্জা আসাদুল কিবরিয়া ও নমুনা সংগ্রহকারী কামাল উদ্দিন। পরিদর্শন দলটি সাংবাদিকদের জানায়, পরিদর্শনকালে ইটিপি বন্ধ পান তারা। পরিদর্শন দলের উপস্থিতি টের পেয়ে কারখানার ইটিপির অপারেটর আবু সাইদ দৌড়ে গিয়ে সেটি চালু করেন। পরিদর্শনকালে তারা দেখতে পান অতিরিক্ত বাইপাস পাইপ লাইন দিয়ে কারখানার দক্ষিণ পাশে খোলা জায়গার একটি পুকুরে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। এ বর্জ্য ফসলি জমিতে গিয়ে জমির উর্বরা শক্তি বিনষ্ট করছে। এ বর্জ্যরে দূষিত পানি বিলের পানির সঙ্গে মিশে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি করছে। এ ছাড়া পরিদর্শন দলের কাছে কারখানার মহাব্যবস্থাপক নজরুল ইসলাম স্বীকার করেছেন তাদের বর্জ্য ফেলা হয় গাজীখালীর নদীর শাখা নদীতে। সহকারী পরিচালক এ কে এম হাসানুর রহমান বলেন, পরিদর্শনকালে বিভিন্ন অনিয়মের মধ্যে বাইপাস লাইন তৈরি করেছে কর্তৃপক্ষ। যা দিয়ে ইটিপির তরল বর্জ্য পার্শ্ববর্তী কৃষি জমিতে ফেলে পরিবেশের ক্ষতি করছে। ইটিপির ইনলেট ও আউটলেট ফ্লু মিটার নেই। প্রকৃতপক্ষে বেইজ পেপারস মিলের ইটিপি অকার্যকর। তিনি আরও বলেন, পরিদর্শনকালে কারখানার সংশ্লিষ্ট প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কর্তৃপক্ষ দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। তরল বর্জ্যরে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরবর্তীতে কারখানার কর্তৃপক্ষকে শুনানির জন্য ডাকা হবে। তাদের ব্যাখ্যা নেওয়ার পর জরিমানা ধার্য করা হবে। এদিকে স্থানীয়রা জানান, বেইজ পেপারস মিলের বর্জ্যরে দূষিত পানির উৎকট গন্ধে নদীপাড়ের বসবাসকারীদের ভীষণ অসুবিধা হয়। এ ছাড়া শুষ্ক মৌসুমে নদীপাড়ে গোপালকৃষ্ণপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা নাক চেপে ক্লাস করেন বলে জানান ভুক্তভোগীরা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর