শনিবার, ১১ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনায় তছনছ চসিকের আয় অনিশ্চয়তায় উন্নয়ন প্রকল্প

নানা সমস্যার মুখোমুখি সংস্থাটি

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

করোনায় তছনছ চসিকের আয় অনিশ্চয়তায় উন্নয়ন প্রকল্প

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) রাজস্ব বিভাগে ২০১৯-২০ অর্থবছরের এপ্রিল-১৯ থেকে জুন-১৯ পর্যন্ত সামগ্রিক আয় ছিল প্রায় ৬৫ কোটি ৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা। কিন্তু চলতি অর্থবছরের এই সময়ে রাজস্ব আদায় হয়েছে প্রায় ৩৫ কোটি ৭৪ লাখ ৫৭ হাজার টাকা। গত বছরের ওই সময়ের তুলনায় চলতি বছর রাজস্ব আদায় কম হয়েছে প্রায় ২৯ কোটি ১৪ লাখ ৮৭ হাজার টাকা। একইভাবে গত অর্থবছরে এ সময়ে পৌরকর আদায় হয়েছিল প্রায় ৩৮ কোটি ৮৭ লাখ ১৭ হাজার টাকা। চলতি অর্থবছরে এ তিন মাসে আদায় হয়েছে প্রায় ২৭ কোটি ২ লাখ ১৭ হাজার টাকা। গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরে আদায় কম হয়েছে প্রায় ১১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। চট্টগ্রাম নগরের উন্নয়নের প্রধান সংস্থা চসিক। উন্নয়নে চসিকের আয়ের অন্যতম উৎস রাজস্ব খাত। কিন্তু এটি এখন করোনায় বিপর্যস্ত। রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে চসিক। ফলে নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে সংস্থাটিকে। বিলম্ব হয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন প্রদান। কার্যত অর্থবছরের শেষ তিন মাস- এপ্রিল-জুন মাসে রাজস্ব আদায় বেশি হয়ে থাকে। কিন্তু চলতি অর্থবছরের এই তিন মাস করোনার থাবায় পড়ায় কাক্সিক্ষত রাজস্ব আদায় হয়নি বলে জানা যায়। অভিযোগ আছে, চসিক এখন রাজস্ব আদায় নির্ভর সংস্থা। নতুন করে বাস্তবায়ন করা হয় কোনো আয়বর্ধক প্রকল্প। তাছাড়া ঝিমিয়ে পড়েছে অতীতের কয়েকটি আয়বর্ধক প্রকল্প। ফলে রাজস্ব আদায়ের অর্থ দিয়ে প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় হিমসিম খেতে হয় এ সেবা সংস্থাটিকে। করোনাকালে রাজস্ব আদায় কম হওয়ায় আয়বর্ধক প্রকল্পের বিষয়টিও সামনে আসে। চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সামসুদ্দোহা বলেন, ‘করোনাভাইরাস মহামারীর ধাক্কা প্রায়ই প্রতিটি খাতেই লেগেছে। চসিক তার বাইরে নয়। গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরে অনেক কম রাজস্ব আদায় হয়েছে। প্রতি মাসে কর্মকর্তাদের বেতন প্রদানে হিমসিম খেতে হচ্ছে। তবে আমাদের কার্যক্রম থেমে নেই। উন্নয়ন ও নাগরিক সমস্যা নিরসনের কাজ চলমান আছে।’

 রাজস্ব বিভাগ সূত্রে জানা যায়, করোনাকালে রাজস্ব বিভাগে প্রায় সব খাতে আয় কম হয়েছে। এর মধ্যে ভূমি হস্তান্তর খাতে কম আয় হয়েছে প্রায় ৯ কোটি ১৯ লাখ ৫১ হাজার টাকা, এস্টেট খাতে প্রায় ৬ কোটি ১৩ লাখ ২১ হাজার টাকা, ট্রেড লাইসেন্স খাতে ১ কোটি ৬৭ লাখ ৪ হাজার টাকা, বিজ্ঞাপন কর খাতে প্রায় ২৪ লাখ ৭৩ হাজার টাকা এবং যানবাহন (যান্ত্রিক) খাতে ১৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকা। গত অর্থবছরের শেষ তিন মাসের তুলনায় চলতি অর্থবছরের শেষ তিন মাস রাজস্ব বিভাগের বিভিন্ন খাতে দুই থেকে তিনগুণ পর্যন্ত অর্থ কম আদায় হয়েছে। তাছাড়া রাজস্ব আদায়ের অন্যতম তিনটি খাত (প্রমোদ কর, যানবাহন অযান্ত্রিক খাত ও রিকশার লাইসেন্স) থেকে করোনাকালীন সময়ে আয় হয়নি কোনো অর্থ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর