শনিবার, ১১ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনা পরীক্ষায় নমুনা সংকট!

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

পরীক্ষার ফি নির্ধারণ, আকস্মিক বন্যাসহ নানা কারণে হঠাৎ করে সিলেটে পাল্টে গেছে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার চিত্র। শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে নমুনা দিতে আসা রোগীর সেই ভিড় আর নেই। এমনকি নমুনা পরীক্ষার ফল পেতে এখন অপেক্ষা করতে হয় না দিনের পর দিন। এত দিন যেখানে নমুনা সংগ্রহ নিয়ে টেকনিশিয়ান আর পরীক্ষা নিয়ে ল্যাব কর্তৃপক্ষ হিমশিম খেত। এখন অনেকটা অলস সময় পার করছেন তারা। অবিশ^াস্য মনে হলেও সত্য এখন রীতিমতো নমুনা সংকটে ভুগছে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের করোনাভাইরাস পরীক্ষার ল্যাব। এ ব্যাপারে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও ল্যাব প্রধান অধ্যাপক ডা. ময়নুল হক জানান, হঠাৎ করে নমুনার পরিমাণ অনেক কমে গেছে। আগে যেখানে পরীক্ষা নিয়ে ল্যাবের সবাই হিমশিম খেতে হতো, এখন সেখানে নমুনার জন্য আমাদের পথের দিকে চেয়ে থাকতে হয়।

নমুনা সংকটের কারণে এখন ১-২ রাউন্ডের বেশি পরীক্ষা করাই সম্ভব হচ্ছে না।

জানা যায়, দু-এক সপ্তাহ আগেও করোনার উপসর্গ নিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষ নমুনা দিতে ভিড় করতেন শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে। উপজেলাগুলো থেকেও আসতে থাকে নমুনা। সেই নমুনার চাপে ত্রাহি অবস্থা ওসমানী মেডিকেল কলেজের ল্যাবে দায়িত্বরতদের। কয়েক দিন পর পর কয়েক হাজার নমুনা পাঠাতে হতো ঢাকায়। আর ঢাকা থেকে রিপোর্ট পেতে সময় লাগত প্রায় দুই সপ্তাহ। পজিটিভ রিপোর্ট আসার আগেই অনেকে সুস্থ হয়ে উঠতেন। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভেরও সঞ্চার হয়। দাবি ওঠে সিলেটে ল্যাব বাড়ানোর। এই দাবিতে সিলেটের নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা প্রধানমন্ত্রী বরাবর লিখিত আবেদনও পাঠান।

শুরুতে ওসমানী মেডিকেল কলেজের ল্যাবে প্রতিদিন দুই রাউন্ডে ১৮৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হতো। পরে নমুনার চাপ বেড়ে যাওয়ায় তা বাড়িয়ে ৬ রাউন্ডে ৫৬৪টি পর্যন্ত পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু চলতি মাসের শুরু থেকে কমতে থাকে নমুনার পরিমাণ। এখন প্রতিদিন সিলেট নগরী ও জেলার সবকটি উপজেলা থেকে এক রাউন্ডের ৯৪টি নমুনাও সংগ্রহ করা যাচ্ছে না। নমুনা সংকটের কারণে বৃহস্পতিবার সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের ল্যাবে পুরো রাউন্ড পরীক্ষা করাও সম্ভব হয়নি।

নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, গত মে ও জুন মাসে সিলেটে করোনাভাইরাস পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের পরিমাণ ছিল ২৫-৩০ শতাংশ। জুলাই মাসেও শনাক্তের গড় হার একই আছে। কিন্তু জুলাই মাসের শুরু থেকে হঠাৎ করে নমুনা পরীক্ষাকারীদের সংখ্যা কমতে থাকে। ১ জুলাই থেকে ফি আদায় ও সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায় বন্যা দেখা দেওয়ায় করোনা পরীক্ষা করতে আসা লোকজন কমেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর