বেনাপোল কাস্টমস হাউসে ২০১৯-২০ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ে বড় ধরনের ধস নেমেছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে তিন হাজার ৩৯২ কোটি ২২ লাখ টাকা কম রাজস্ব আদায় হয়েছে। এ সময় রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ছয় হাজার ২৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ২ হাজার ৬৩৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। বেনাপোল কাস্টমসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সরোয়ার হোসেন এই ঘাটতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রাজস্ব কম আদায়ের জন্য কাস্টম কর্মকর্তারা করোনাভাইরাসের সংক্রমণকে দায়ী করেন। তবে বন্দর সংশ্লিষ্টরা দিচ্ছেন ভিন্ন তথ্য। তাদের মতে, বন্দর ও কাস্টমসের বিভিন্ন অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, শুল্ক ফাঁকি ও পণ্য খালাসে মাত্রাতিরিক্ত হয়রানি রাজস্ব ঘাটতির মূল কারণ। এছাড়া তদারকি সংস্থাগুলোর সমন্বয়ের অভাবের কারণে ব্যবসায়ীরা এ বন্দর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ায় রাজস্ব আদায় কম হয়েছে। তাদের দাবি, বৈধ সুবিধা নিশ্চিত হলে বেনাপোল বন্দরে গতি ফিরবে আমদানি-বাণিজ্যে। বেনাপোল কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে আমদানি হওয়া পণ্যের ওপর ৬ হাজার ২৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। এ সময় ভারত থেকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি হয়েছে ১৯ লাখ ৭৮ হাজার ৭৫ মে.টন। বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে বিপুল পরিমাণ পণ্য আমদানি হলেও উচ্চ শুল্ক হারের পণ্য আমদানি কমেছে। উচ্চ শুল্কের পণ্য আমদানি হলে ৬ হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আদায় হতো। পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ব্যাপক কড়াকড়ি আরোপ এবং উচ্চ শুল্কযুক্ত পণ্য আমদানি কমে যাওয়া ও বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন না হওয়া রাজস্ব ঘাটতির অন্যতম কারণ বলে মনে করেন তিনি। বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনার বেলাল হোসেন চৌধুরী বলেন, করোনার প্রভাবে আড়াই মাস ধরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ।
যার প্রভাব পড়েছে রাজস্ব আদায়ে। এছাড়া বেনাপোল বন্দর দিয়ে উচ্চ শুল্কযুক্ত পণ্যে আমদানি কমে গেছে। পাশাপাশি পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে সীমান্তের ওপারে পেট্রাপোল বন্দর এলাকায় একটি চক্র ট্রাক আটকিয়ে বড় ধরনের চাঁদাবাজি করছে। ফলে আমদানিকারকদের মোটা অঙ্কের আর্থিক লোকসান গুনতে হয়। বর্তমানে বেনাপোল বন্দর দিয়ে রেলপথে বিপুল পরিমাণ পণ্য আমাদনি হচ্ছে। করোনার প্রভাব না থাকলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত রাজস্ব আয় করা সম্ভব ছিল।