সোমবার, ১৩ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে দীর্ঘ হচ্ছে শিশু লাশের সারি

নৈতিকতার অবক্ষয়, পারিবারিক বিরোধ ও সচেতনতার অভাবই প্রধান কারণ

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে বড়দের ক্ষোভের বলি হচ্ছে শিশুরা। কখনো বাবা-মায়ের হাতে সন্তান, কখনো চাচা-চাচির হাতে ভাতিজা কিংবা প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে শিকার বানানো হচ্ছে শিশুদের। ফলে প্রতিনিয়তই দীর্ঘ হচ্ছে নিরাপরাধ শিশুর লাশের সারি। সর্বশেষ গত নয় দিনে চট্টগ্রামে খুন হয়েছে চার শিশু। একের পর এক শিশু খুন হওয়ায় নড়েচড়ে বসেছে চট্টগ্রামের প্রশাসন।  

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ ও পুলিশ সাইন্স বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘নৈতিকতার অবক্ষয়, পারিবারিক বিরোধ এবং সচেতনতার অভাবেই ডমেস্টিক ভায়োলেন্সগুলো  হচ্ছে। ঘটনায় দেখা যাচ্ছে, এসব ঘটনার বলি হচ্ছে নিরপরাধ শিশু।  অপরাধীদের দ্রুত শাস্তি নিশ্চিতের পাশাপাশি সমাজ সচেতনতাই জরুরি।’

চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক বলেন, ‘চট্টগ্রাম জেলায় যেসব শিশু খুন হয়েছে তার নেপথ্য কারণ ছিল পরিবারিক বিরোধ ও সামাজিক অবক্ষয়। এসব অপরাধ নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন সামাজিক সচেতনতা। তাই সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়েছে পুলিশ।’

জানা যায়, চট্টগ্রামের বড়দের দ্বন্দ্বের কারণে একের পর এক খুন হচ্ছে শিশু। কখনো বাবা কিংবা মায়ের পরকীয়ার দ্বন্দ্বের বলি, কখনো ঝগড়া কখনো প্রতিক্ষকে ঘায়েল করতে খুন করা হচ্ছে শিশুকে। শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করে খুনি হিসেবে আবির্ভাব হচ্ছে কখনো বাবা-মা, চাচা-চাচি, ভাই কিংবা প্রতিবেশী। ৯ জুলাই নগরীর ডবলমুরিং থানাধীন দেওয়ানহাট থেকে ইকরা নামে এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

ধারণা করা হচ্ছে, তাকে হত্যার পর লাশ ওড়নায় পেঁচিয়ে ঘরের জানালার সঙ্গে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। নিহত ইকরার নানার অভিযোগ, সৎ মা শিরিন আকতার পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে তাকে। ৭ জুলাই নগরীর ডবলমুরিং থানা এলাকায় মায়ের সঙ্গে ঝগড়ার জের ধরে হত্যা করা হয় তিন বছরের শিশু মেহরাবকে। কয়েক ঘণ্টা পর পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন খুনের অভিযুক্ত নিহতের চাচা জসিম উদ্দিন। ১ জুলাই নগরীর পটিয়া থানাধীন কাশিয়াইশ ইউনিয়নে দুই শিশু টুকু বড়–য়া এবং নিশু বড়–য়াকে গলা টিপে হত্যার পর নিজেই আত্মহত্যা করেছে মোখেন্দু বড়–য়া নামে এক ব্যক্তি।

পুলিশ ধারণা করছে, পারিবারিক কলহের জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে। ৭ জুন নগরীর বাকলিয়া থানা এলাকায় বাড়িওয়ালাকে ফাঁসাতে পানির ট্যাংকিতে ফেলে হত্যা করা হয় দুই বছরের শিশু আবদুর রহমান আরাফকে। ফটিকছড়ি থানা এলাকায় নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয় চার বছরের শিশু আবদুল্লাহ আল দিহানকে। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে শিশুর চাচি রেশমা আকতারকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর