মঙ্গলবার, ১৪ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

দ্বিতীয় সপ্তাহে কমতে শুরু করেছে সংক্রমণ

লকডাউন ওয়ারী

নিজস্ব প্রতিবেদক

দ্বিতীয় সপ্তাহে কমতে শুরু করেছে সংক্রমণ

সরকারি নির্দেশ না মেনে নানা অজুহাতে প্রবেশ ও বের হওয়ার চেষ্টা করে এলাকাবাসী। এতে সংক্রমিত হচ্ছেন বাসিন্দারা। ছবিটি গতকাল রাজধানীর লকডাউন এলাকা ওয়ারী থেকে তোলা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

লকডাউনের দ্বিতীয় সপ্তাহে পুরান ঢাকার ওয়ারীতে কমতে শুরু করেছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। গত তিন দিনে নমুনা দেওয়া এবং আক্রান্তের সংখ্যার হার কমেছে। এখন সংক্রমণের হার প্রায় ৩৩ শতাংশ। এতে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে অনেকটা আশা ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রতিদিনের মতো গতকালও সকাল থেকে ওয়ার্ড কাউন্সিলরের উদ্যোগে স্বেচ্ছাসেবকরা মাইকে প্রচার করতে থাকেন, জরুরি কাজ ছাড়া কেউ যেন বাইরে বের না হন এবং মুখে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। প্রথম দিকে বাসিন্দারা মানতে চাইছিলেন না। তবে এখন তাদের মধ্যে অনেকটা সচেতনতা সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন সকালে সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে অন্তত তিনটি মিনি ট্রাকে শাকসবজি, তরিতরকারি বিক্রি করা হয়। বাসার লোকজনকে লাইন ধরে যথাযথ দূরত্ব বজায় রেখে কেনাকাটা করতে দেখা যায়। কয়েকটি সুপার শপও খোলা ছিল। কেউ কেউ সেখান থেকে হোম সার্ভিসে জিনিসপত্র কিনেছেন। মুদিদোকান সব বন্ধ ছিল। শুধু ওষুধের দোকান খোলা রাখতে দেখা গেছে। এটিএম বুথ ও দু-একটি ব্যাংকের ফাস্ট ট্র্যাক খোলা ছিল, প্রয়োজনে যেন মানুষ টাকা তুলতে পারেন। করোনা পরীক্ষার জন্য ওয়ারী বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অস্থায়ী বুথে গতকাল আরও ১০ জনের নমুনা নেওয়া হয়েছে। আগের দিন রবিবার দেওয়া ১৩ জনের নমুনার ফল গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা    প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) থেকে আসেনি বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অঞ্চল-৫-এর সমাজকল্যাণ দফতরের প্রশিক্ষক নূরুল ইসলাম। তিনি লকডাউন এলাকার কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বে রয়েছেন। এ পর্যন্ত নমুনা দিয়েছেন ১৫৭ জন। এর মধ্যে করোনা পজিটিভ হয়েছে ৫৪ জনের।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, ৪ জুলাই করোনা পরীক্ষায় নমুনা দিয়েছিলেন ১৬ জন। এর মধ্যে সাতজন করোনা পজিটিভ। ৫ জুলাই ১৯ জনের মধ্যে ১০ জন, ৬ জুলাই ১৬ জনের মধ্যে ৭ জন, ৭ জুলাই ১৮ জনের মধ্যে ৭ জন, ৮ জুলাই ২৬ জনের মধ্যে ১২ জন এবং ৯ জুলাই ১০ জনের মধ্যে ৫ জন সংক্রমিত হয়েছেন। তবে দ্বিতীয় সপ্তাহে ১০ জুলাই ১৫ জনে সংক্রমিত হয়েছেন ৩ জন এবং ১১ জুলাই ১৪ জনে সংক্রমিত হয়েছেন ৩ জন।

করোনায় আক্রান্ত ৪৭ জনকে নিয়ে ৪ জুলাই ভোর ৬টা থেকে ওয়ারীর টিপু সুলতান রোড, যোগীনগর রোড ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক (জয়কালী মন্দির থেকে বলধা গার্ডেন), লারমিনি স্ট্রিট, হেয়ার স্ট্রিট, ওয়্যার স্ট্রিট, র‌্যাংকিন স্ট্রিট ও নবাব স্ট্রিট এলাকায় লকডাউন শুরু হয়। করোনা প্রতিরোধে আগামী ২৫ জুলাই পর্যন্ত এখানে লকডাউন চলবে।

স্বেচ্ছাসেবীরা জানান, একেকজন একেক রকম অজুহাত দেন। কেউ বলেন, তার মা হাসপাতালে; তাকে হাসপাতালে যেতে হবে। আসলে তেমন কিছুই নয়। তারা যাবেন তাদের ব্যবসায়িক কাজে। লকডাউন হওয়া রাস্তাগুলোতে মানুষের চলাচল কম। কিন্তু উল্টো দিকের রাস্তা লকডাউন মুক্ত থাকায় সেখানে আড্ডা চলে বাধাহীন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর