বৃহস্পতিবার, ২৩ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা
আওয়ামী লীগের ওয়েবিনার

দুর্যোগেও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা ধরে রেখেছে বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুর্যোগ মোকাবিলা করেও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। এই মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ বিশেষ ওয়েবিনার ‘বিয়ন্ড দ্য প্যানডেমিক’ এর দ্বাদশ পর্বের বক্তারা। মঙ্গলবার রাতে আওয়ামী লীগের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলে সরাসরি প্রচারিত এই ওয়েবিনারে বলা হয়, দেশে কৃষি উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। তাই, স্বাধীনতার পর জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে দ্বিগুণ হলেও খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে প্রায় চারগুণ। ফলে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব, সুপার সাইক্লোন আম্ফান ও সাম্প্রতিক বন্যাসহ নানা দুর্যোগ মোকাবিলা করে বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশ এখন- ইলিশ উৎপাদনে প্রথম, মাছ উৎপাদনে দ্বিতীয়, পাট উৎপাদনে তৃতীয়, ধান উৎপাদনে তৃতীয়, সবজি উৎপাদনে তৃতীয়, আলু উৎপাদনে সপ্তম এবং আম উৎপাদনে সপ্তম। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার শাহ আলী ফরহাদের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, প্রফেসর ইমেরিটাস বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সাবেক উপাচার্য ড. এম এ সাত্তার ম-ল, বাকৃবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান, বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতির সভাপতি ও সাবেক সিনিয়র সচিব সাজ্জাদুল হাসান এবং আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী। কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, করোনা মহামারীতে সারা দেশের মানুষ একটা সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। মানুষ অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে বিপর্যস্ত। এরই মধ্যে দেশে বন্যার ভয়াবহতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বন্যার ভয়াবহতায় কৃষি খাত যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, এ জন্য আমরা বন্যা উপদ্রুত ৩৩টা জেলার কৃষিবিষয়ক কর্মকর্তা, মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা, পর্যালোচনা করেছি, দিকনির্দেশনা দিয়েছি। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনার সংকটে জাতির উদ্দেশে যতগুলো ভাষণ দিয়েছেন, ভিডিও কনফারেন্স করেছেন প্রতিটি জায়গায় তিনি স্বাস্থ্যের পরই কৃষিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘এক ইঞ্চি জমিও খালি রাখা যাবে না। যে পরিস্থিতি, যে ভয়াবহতা এখন কোনোভাবেই খাদ্য সংকট রাখা যাবে না।’ এটা বিবেচনায় নিয়ে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। তিনি আওয়ামী লীগসহ সব অঙ্গ সংগঠনকে কাজ করতে নির্দেশ দেন।’ ড. এম এ সাত্তার ম-ল বলেন, এতকিছুর মধ্যেও ভালো খবর হলো আমাদের কৃষিতে উৎপাদন ব্যবস্থায় একটা লক্ষণীয় পরিবর্তন এসেছে।

এই পরিবর্তনটা হলো এক কোটি ৬৫ লাখ কৃষক পরিবার যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আঙ্গিকে চাষাবাদ করত তা এখনো আক্ষরিক অর্থে আছে। কিন্তু কার্যত একটি ঘটনা ঘটে গেছে যে ব্যক্তি পর্যায় থেকে একটি সার্ভিস প্রোভাইডার বা মার্কেট- লেড একটি উৎপাদন ব্যবস্থা কিন্তু ধীরে ধীরে বাংলাদেশে এসেছে। যা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। এটা বাণিজ্যিক কৃষির সঙ্গে খুব সংগতিপূর্ণ।

অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর জাতির পিতা কৃষির ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন। এ ছাড়া ১৯৭৩ সালের ১৩ ফেব্র“য়ারি বঙ্গবন্ধু এই সবুজ চত্বরে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশে কৃষিকে আরও উন্নত করার জন্য এবং কৃষি শিক্ষা ও গবেষণা আরও এগিয়ে নেওয়ার জন্য কৃষি গ্র্যাজুয়েটদের প্রথম শ্রেণির মর্যাদা প্রদান করেন। সেই থেকে কৃষি গতি পেয়েছে এবং দুর্বার গতিতে এগিয়ে গিয়েছে দেশ।

সাজ্জাদুল হাসান বলেন, এই যে কভিড-১৯ সারা বিশ্বকে আক্রান্ত করেছে বাংলাদেশও সেটি থেকে বাদ পড়েনি। এই মহামারীতে কি ক্ষতিটা হয়েছে আমরা একটু যদি বিশ্লেষণ করি এটার কিন্তু একটা ইতিবাচক প্রভাবও আছে। যেমন মৎস্য। এরা যে সব জায়গায় বিচরণ করে যে প্রজনন কেন্দ্র সে মাছগুলো তুলে আনতে পারেনি। কারণ সাপ্লাই চেইনটা ভালো ছিল না। ফলে সেখানে মৎস্য প্রজননটা বৃদ্ধি পেয়েছে। একইভাবে যদি উন্মুক্ত জলাশয়গুলোর কথা বলা হয়- সেখানে কিন্তু শিল্পকারখানা বন্ধ থাকা বা বেপরোয়াভাবে যে মাছ ধরে ফেলা বা পোনা মাছ ধরে ফেলা এগুলো এবার হয়নি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর