শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ৩০ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

শতভাগ বোনাস ও জুলাই মাসের বেতন দাবিতে বিক্ষোভ, অবরোধ

গাজীপুর প্রতিনিধি

গাজীপুরে শতভাগ ঈদ বোনাস ও বেতন পরিশোধের দাবিতে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা কর্মবিরতি, বিক্ষোভ ও ভাঙচুর করেছেন। এ সময় শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক প্রায় আধা ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন। এ নিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশের দুই সদস্যসহ অন্তত সাতজন আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ১০ রাউন্ড টিয়ার শেল ও দুই রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়েছে। গাজীপুর শিল্পপুলিশের ইন্সপেক্টর ইসলাম হোসেন ও স্থানীয়রা জানান, গাজীপুরের দক্ষিণ সালনার অক্সফোর্ড সার্ট লিমিটেড কারখানার শ্রমিকদের চলতি জুলাই মাসের ১৫ দিনের বেতন পরিশোধের পূর্বনির্ধারিত তারিখ ছিল বুধবার। পরদিন বৃহস্পতিবার বোনাস পরিশোধের কথা। বুধবার সকালে কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বেতন পরিশোধের উদ্যোগ নেয়। এ সময় শ্রমিকরা ঈদুল আজহার শতভাগ এবং গত ঈদুল ফিতরের বকেয়া ৫০ ভাগসহ মোট দেড়শ ভাগ ঈদ বোনাস ও চলতি জুলাইয়ের পুরো মাসের বেতন পরিশোধের দাবি জানান। তারা কর্তৃপক্ষের আশ্বাস না পেয়ে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ শুরু করেন। তাছাড়া শ্রমিকদের কয়েকজন কারখানার দরজা জানালার কাচসহ বিভিন্ন মালামাল ভাঙচুর করেন। একপর্যায়ে সকাল পৌনে ৯টার দিকে শ্রমিকরা কারখানা থেকে বের হয়ে পার্শ্ববর্তী ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ওপর অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এতে মহাসড়কের উভয় দিকে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। গাজীপুর শিল্পপুলিশের ইন্সপেক্টর ইস্কান্দর হাবিব জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দেয়।

এ সময় পুলিশ মহাসড়কের ওপর থেকে অবরোধকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাথর ছুড়তে থাকে। এতে পুলিশের দুই সদস্যসহ অন্তত ৭ জন আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে শ্রমিকদের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হয়। একপর্যায়ে পুলিশ ১০ রাউন্ড টিয়ার শেল (লং শেল) ও দুটি সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়লে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। প্রায় আধা ঘণ্টা পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে ওই মহাসড়কে পুনরায় যান চলাচল শুরু হয়। পরে শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা শেষে কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের জুলাই মাসের ২০ দিনের বেতন ও ঈদুল আজহার শতভাগ এবং গত ঈদুল ফিতরের বকেয়া ৫০ ভাগ বোনাস পরিশোধের ঘোষণা দেয়।

কারখানার ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আবদুল্লাহ আল ফারুক জানান, কারখানার শ্রমিকদের কোনো বকেয়া পাওনা নেই। তাদের সব পাওনাদি নির্ধারিত সময়েই পরিশোধ করা হয়েছে। সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী ঈদুল ফিতরের ৫০ ভাগ বোনাস শ্রমিকদের পরিশোধ করা হয়েছে। সরকার এবারের ঈদে শ্রমিকদের চলতি জুলাই মাসের বেতন পরিশোধের ঘোষণা দেয়। অথচ শ্রমিকরা ঈদুল ফিতরের অবশিষ্ট ৫০ ভাগ ও আসন্ন ঈদুল আজহার শতভাগসহ মোট দেড়শ ভাগ ঈদ বোনাস এবং চলতি জুলাইয়ের পুরো মাসের বেতনের টাকা পরিশোধের অযৌক্তিভাবে দাবি জানিয়ে আসছিল। তারা কারখানায় ভাঙচুর করেছে। শ্রমিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কারখানা কর্তৃপক্ষ আসন্ন ঈদুল আজহার শতভাগ বোনাস ও জুলাই মাসের ২০ দিনের টাকা পরিশোধের আশ্বাস দেয়। ঈদুল ফিতরের বকেয়া ৫০ ভাগ বোনাস ঈদুল আজহার পর পরিশোধ করা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর