করোনা সংক্রমণের কারণে পশ্চিমাঞ্চল রেলের বেদখলে থাকা প্রায় তিন হাজার একর জমি উদ্ধারে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। এসব জমি উদ্ধারে দুই হাজারের বেশি মামলা হলেও করোনার কারণে আদালত বন্ধ থাকা, সম্পত্তি উদ্ধারে আইনি জটিলতা ও কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় কোটি কোটি টাকার সম্পদ বেহাত হতে বসেছে। তবে রেলের ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা বলেছেন আদালত খুলেছে। এখন বেহাত হওয়া জমি উদ্ধারে গতি আসবে।
পশ্চিমাঞ্চলীয় রেল সূত্রে জানা গেছে, পশ্চিমাঞ্চলে ৩৭ হাজার ৭০৫ একর জমি রয়েছে। এর মধ্যে রেলের কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য ২১ হাজার ৬৮১ একর ব্যবহার হচ্ছে। কিছু জমি হয় বৈধভাবে লিজ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া তিন হাজার একরের বেশি জমি অবৈধ দখলে রয়েছে। রংপুর, লালমনিরহাট, দিনাজপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়াসহ বিভিন্ন জেলার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এসব জমি দখল করে ভোগ করছেন। অনেক সময় সম্পত্তি উদ্ধার করতে গিয়ে নাজেহাল হচ্ছেন রেলকর্মীরা। করোনা এবং নানা জটিলতার কারণে সম্পত্তি উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না। দখল হওয়া জমি উদ্ধারের জন্য রেলওয়ে দুই হাজারের বেশি মামলা করেছে। করোনায় আদালত বন্ধ থাকায় মামলাগুলোও গতিহীন হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া অনেক ক্ষেত্রে হাই কোর্টের নিষেধাজ্ঞার কারণে উচ্ছেদ করা সম্ভব হচ্ছে না। রাজনৈতিক প্রভাব, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা, সুষ্ঠু নীতিমালার অভাব, আইন সংক্রান্ত জটিলতা, উচ্ছেদ অভিযানে সময়মতো পুলিশ না পাওয়ার করণে রেলওয়ের কোটি কোটি টাকা মূল্যের সম্পত্তি বেহাত হওয়ার পথে। অথচ রেলের সম্পদ উদ্ধার করে রেলের ব্যাপক উন্নয়ন করা সম্ভব বলে মনে করছেন অভিজ্ঞ মহল।
এ ছাড়া রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চল লালমনিরহাট ও পাকশি বিভাগের অধীনে ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা কর্মচারীদের অবৈধ পন্থায় লিজ প্রদান করায় সরকারের কোটি কোটি টাকার সম্পদ বেহাত হতে বসেছে। পাকশী, পার্বতীপুর ও লালমনিরহাটে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্মচারীদের যোগসাজশে রেলওয়ে বাণিজ্যিক ভূমিগুলো কৃষি শ্রেণি দেখিয়ে লিজ দিয়েছে। লিজ গ্রহীতারা কৃষি শ্রেণি হিসেবে লিজ গ্রহণ করে কাঁচাপাকা ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ আবাসস্থল নির্মাণ করে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। পশ্চিমাঞ্চলীয় রেলের চিফ স্টেট অফিসার রেজাউল করিম জানান, উচ্ছেদ অভিযান চলমান প্রক্রিয়া। করোনার কারণে জমি উদ্ধার অভিযান কিছুটা বিঘ্ন ঘটেছে। তিনি জানান, জমি উদ্ধারে প্রায় ২ হাজারের ওপর মামলা দীর্ঘদিন ধরে আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। করোনার কারণে আদালত বন্ধ থাকায় কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এখন আদালত খুলেছে বিচারাধীন মামলা এবং জমি উদ্ধারে গতি আসবে।