বৃহস্পতিবার, ২৭ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

স্বল্পমেয়াদি ভিসায় এসে প্রতারণা করত ওরা

চার বিদেশি গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফেসবুকে বন্ধুত্ব তৈরি করে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তারা হলেন- ঘানার নাগরিক সিসম ও অ্যান্থনি এবং নাইজেরিয়ার নাগরিক মরো মহাম্মদ ও মরিসন। গত মঙ্গলবার রাজধানীর দক্ষিণখান ও ভাটারা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ৬টি ল্যাপটপ, বেশ কিছু সিম এবং ৬টি বিভিন্ন মডেলের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। সিআইডি বলছে, খেলোয়াড় ও স্টুডেন্ট ভিসার মতো স্বল্পমেয়াদি ভিসায় এসে অবৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থান করে ফেসবুকে প্রতারণা করে আসছিল চক্রটি। গতকাল দুপুরে সিআইডি সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির এসপি সৈয়দা জান্নাত আরা জানান, প্রতারণার শিকার একজন ভিকটিমের অভিযোগের সূত্র ধরে ওই চার বিদেশি নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ৮ বছর আগে খেলোয়াড় হিসেবে বাংলাদেশে আসেন মরো মহাম্মদ ও মরিসন। বাকি দুই ঘানার নাগরিক সিসম ও অ্যান্থনি এসেছিলেন চার বছরের স্টুডেন্ট ভিসায়। তাদের কেউই ভিসার মেয়াদ বাড়াননি। তারা অভিনব কায়দায় বিপরীত লিঙ্গের মানুষদের সঙ্গে প্রথমে ফেসবুকে বন্ধুত্ব তৈরি করে। বন্ধুত্বের এক পর্যায়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টসহ পার্সেল উপহার পাঠানোর প্রস্তাব দেয়। এমনকি এসব মূল্যবান সামগ্রী এয়ারলাইন বুকিং দেওয়ার একটি ভুয়া ডকুমেন্টও পাঠায়। মিলিয়ন ডলারের মূল্যবান সামগ্রীর প্রলোভন দেখিয়ে টার্গেটকৃত ব্যক্তিকে তা কাস্টমস থেকে গ্রহণ করতে বলে। এ সময় তাদের অন্য সহযোগীরা নিজেদের কাস্টমস কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ভিকটিমকে উপহার সামগ্রী নেওয়ার জন্য শুল্ক পরিশোধের জন্য মোটা অঙ্কের অর্থ দাবি করে।

 ভিকটিম উপহার গ্রহণ করতে না চাইলে আইনি জটিলতার ভয় দেখায়। ফলে অভিযোগকারী ভিকটিম তাদের বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে ৫৫ হাজার টাকা দিতে বাধ্য হয়।

একইভাবে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণার মাধ্যমে সারা দেশে অসংখ্য ভিকটিমের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা গত কয়েক মাসের মধ্যে হাতিয়ে নিয়েছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

সিআইডি কর্মকর্তা জান্নাত আরা আরও জানান, বিদেশিদের বেশ কয়েকটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে অবস্থান করে এ ধরনের প্রতারণা করে এলেও গ্রেফতারের পর এদেশে তাদের অবস্থানের বৈধ কোনো কাগজপত্র এবং পাসপোর্ট দেখাতে পারেনি। মূলতো তারা ট্যুরিস্ট, খেলোয়াড়, বিজনেস ও স্টুডেন্ট ভিসায় বাংলাদেশে প্রবেশ করে পরে স্থানীয় কিছু এজেন্টের সহায়তায় এ ধরনের প্রতারণা করে আসছিলেন।

ইতিমধ্যে বাংলাদেশে স্বল্পমেয়াদি ভিসায় আসা আফ্রিকানদের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। ভিসার মেয়াদ শেষ হলেও তারা কী করে বাংলাদেশে অবস্থান করছিল তা খতিয়ে দেখা হবে। সিআইডি এ বিষয়ে এসবির (পুলিশের বিশেষ শাখা) সঙ্গে আলোচনা করবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর