বৃহস্পতিবার, ২৭ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

উত্তরায় প্রিমিয়ার সুইটসের শোরুম উচ্ছেদ ভাঙচুরের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনা মহামারী চলাকালে রাজধানীর উত্তরায় আদালতের নিষেধাজ্ঞার পরও ভাড়াটিয়াকে উচ্ছেদ করলেন বাড়িওয়ালা। শুধু তাই নয়, ১০ বছরের চুক্তি থাকার পরও উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর রোডের ১৩ নম্বর বাড়ির দুটি ফ্লোরে থাকা ‘প্রিমিয়ার সুইটস্’-এর শোরুমের সব সরঞ্জাম লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। দফায় দফায় উত্তরা পূর্ব থানায় এ ব্যাপারে সাধারণ ডায়েরির (জিডি) পরও বাড়িওয়ালা তানভীর আহমেদের এমন কর্মকান্ডে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ভুক্তভোগী। প্রকাশ্যে মন্তব্য না করলেও এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আশপাশের ব্যবসায়ীরা। জানা গেছে, আবিন্তা হাইটসের প্রথম ও দ্বিতীয় তলা ১০ বছরের জন্য অগ্রিম ১৮ লাখ টাকা জমা সাপেক্ষে মাসিক ৩ লাখ টাকা ভাড়ায় ২০১৮ সালের ১ এপ্রিল তানভীর আহমেদের সঙ্গে চুক্তি করেন প্রিমিয়ার সুইটস্ কর্তৃপক্ষ। তবে করোনা মহামারীতে সরকার নির্দেশিত লকডাউনের কারণে এপ্রিলের ভাড়া না দেওয়ায় ওই প্রতিষ্ঠানে তালা মেরে দেন বাড়িওয়ালা। প্রিমিয়াম সুইটস্্ কর্তৃপক্ষ দফায় দফায় বাড়িওয়ালাকে অনুরোধ করলেও কোনো সাড়া মেলেনি। উল্টো বাড়িওয়ালা তাদের বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার নোটিস দেন। এ বিষয়ে প্রথমে ২৫ জুলাই উত্তরা পূর্ব থানায় একটি জিডি করেন প্রিমিয়াম সুইটস্ বাই সেন্ট্রালের অপারেশন ম্যানেজার নুরুজ্জামান খান। জিডিতে উল্লেখ করেন, করোনাভাইরাসের প্রভাবে ব্যবসা-বাণিজ্যে ব্যাপক ধস নামার কারণে তাদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। এ কারণে তারা চুক্তি অনুযায়ী শুধু এপ্রিলের ভাড়া পরিশোধের বিষয়ে ১২ এপ্রিল আবিন্তা হাইটস কর্তৃপক্ষকে একটি চিঠি পাঠান। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী লকডাউন-পরবর্তী তাদের অফিস ও অ্যাকাউন্টস বিভাগ চালু হলে তারা নিয়মিত ভাড়া পরিশোধ করবেন বলে চিঠিতে জানান। এ চিঠি পাওয়ার পর আবিন্তা হাইটস পাল্টা আরেকটি চিঠি দিয়ে তিন কর্মদিবসের মধ্যে এপ্রিলের ভাড়াসহ অন্যান্য চার্জ দেওয়ার জন্য চাপ দেন। শুধু এক মাসের ভাড়া না দেওয়ায় তাদের শাখাটি তালাবদ্ধ করে দেন। যদিও শাখাটি ভাড়া নেওয়ার সময় অগ্রিম ও সিকিউরিটি বাবদ ১৮ লাখ টাকা জমা ছিল।

জিডিতে আরও উল্লেখ ছিল, ২৭ এপ্রিল ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার লকডাউন শিথিল করে হোটেল, রেস্তোরাঁ ও দোকানপাট সন্ধ্যা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে মর্মে আদেশ জারি করলে প্রিমিয়াম সুইটস্ কর্তৃপক্ষ ওই শাখাটি খুলতে চাইলেও তাতে সাড়া দেননি আবিন্তা হাইটস কর্তৃপক্ষ। উল্টো গেট ও বিল্ডিংয়ের মূল গেট তালাবদ্ধ করে রেখে তাদের বিল্ডিং ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। এদিকে, দুই দফা জিডি করার পরও আবিন্তা হাইটস কোনো সাড়া না দিলে ২৬ জুলাই জেলা জজ আদালতে মিস কেস মামলা (আরবিট্রেশন মিস কেস ১৮৩/২০২০) করেন। আদালত ২৭ জুলাই শুনানি শেষে জোরপূর্বক উচ্ছেদ না করার জন্য উভয় পক্ষের মধ্যে (ঝঃধঃঁং-য়ঁড়) ও ১ নম্বর আসামি তানভীর আহমেদ (৪৮)-কে ঝযড়ি ঈধঁংব জারি করে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী প্রিমিয়াম সুইটসের হেড অব করপোরেট অ্যাফেয়ার্স মাহবুবুর রহমান বকুল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘দফায় দফায় আমরা পুলিশকে অবহিত করার পরও কোনো উপায় না পেয়ে আদালতের আশ্রয় নিতে বাধ্য হই।’ এ বিষয়ে মন্তব্য চাইতে আবিন্তা হাইটসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর আহমেদ ও নির্বাহী পরিচালক রাশেদ মোস্তফাকে দফায় দফায় ফোন ও খুদে বার্তা পাঠিয়েও কথা বলা সম্ভব হয়নি। জানতে চাইলে উত্তরা পূর্ব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আদিল হোসেন এ বিষয়ে মামলা হয়েছে জানিয়ে তদন্তাধীন বিষয়ে মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর