শনিবার, ২৯ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনাকালে পাট ও পাট খড়িতে কৃষকের সুদিন

উৎপাদন বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

রংপুরের পীরগাছা উপজেলার কল্যাণী ইউনিয়নের নজরুল ইসলাম বুলবুল ২ একর জমিতে পাট আবাদ করে ফলন পেয়েছেন ৩৬ মণ। প্রতি মণ ২ হাজার টাকা দরে বিক্রি করে পেয়েছেন ৭২ হাজার টাকা। এ পরিমাণ জমি থেকে পাটখড়ি পেয়েছেন ৭০ মণ। পাটখড়ি বিক্রি করে তার ঘরে এসেছে আরও ৩২ হাজার টাকার ওপরে। এ টাকা তিনি মেয়ের বিয়ের জন্য রেখে দিয়েছেন। বুলবুলের মতো রংপুর বিভাগের কয়েক লাখ পাটচাষি তাদের উৎপাদিত ফসলের ভালো দাম পাওয়ায় তারা বেশ খুশি। করোনাকালে পাট ও পাটখড়িতে কৃষকের সুদিন বিরাজ করছে। রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত গত ১২ বছরে উত্তরাঞ্চলে পাটের আবাদ বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। এ মৌসুমে রংপুর জেলায় পাট আবাদ হয়েছে প্রায় ১ লাখ হেক্টরের ওপর। যা গত ১০ বছরের  তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। ২০০৮ সালের আগে এ অঞ্চলে পাটের আবাদ হয়েছে এর অর্ধেক।  কৃষি অফিস সূত্রে, প্রতি হেক্টরে পাটের উৎপাদন হয়েছে ৫৫-৬০ মণ। প্রতি মণ পাট বিক্রি হয়েছে সর্বনিম্ন ১ হাজার ৮০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত। সে হিসাবে পাট বিক্রি হয়েছে ২০০ কোটি টাকার।

অপরদিকে প্রতি মণ পাটখড়ি বিক্রি হয়েছে গড়ে সাড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। প্রতি হেক্টর জমির পাটখড়ি বিক্রি হয়েছে ২৫ হাজার টাকায়। সে হিসাবে এ অঞ্চলের চাষিরা পাটখড়ি বিক্রি করেছেন ৫ কোটি টাকার ওপর। পাট ও পাটখড়ি বিক্রি করে চাষিদের আয় হয়েছে ২০০ কোটি টাকার ওপরে। চাষি আফজাল জানান, পাট আবাদ করে তারা দুই ধরনের লাভ পাচ্ছেন। তা হলো ভালো দামে পাট বিক্রি করা এবং পাটখড়ির বেশ চাহিদা থাকায় তা বিক্রি করেও লাভবান হচ্ছেন।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, গত কয়েক মৌসুম থেকে পাটের বাজারদর বৃদ্ধি পাওয়ায় এ অঞ্চলে সোনালি আশ পাটের সুদিন ফিরে আসতে শুরু করেছে। চাষিরা এখন পাটের ওপর নির্ভরশীল। অনেক চাষি পাট ঘরে তোলার পর তা বিক্রি করে ছেলেমেয়ের বিয়ে, ধারদেনা শোধ অথবা অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করতে পারছেন। এ ছাড়া গত কয়েক মৌসুম থেকে সরকার কৃষকদের পাটচাষে ভর্তুকি দিচ্ছে। এতে অনেক চাষির মধ্যে পাটের ওপর আস্থা ফিরে এসেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর