বৃহস্পতিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

৩০ বছরে দেড় হাজার কোটি টাকার তার-ট্রান্সফরমার চুরি

পল্লী বিদ্যুতের দেড় হাজার মামলা গতিহীন

নজরুল মৃধা, রংপুর

বিগত ৩০ বছরে উত্তরাঞ্চলের ১৮টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি বৈদ্যুতিক তার ও ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। এসব চুরির ঘটনায় মামলা হলেও আইনের ফাঁক-ফোকর গলিয়ে বেরিয়ে গেছেন আসামিরা। পাশাপাশি দেড় হাজারের বেশি মামলা গতিহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সূত্রে জানা গেছে, রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলে ১৮টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতায় ৬ হাজার কিলোমিটারের বেশি বৈদ্যুতিক লাইন রয়েছে। কার্যকর পদক্ষেপ না থাকায় গত ৩০ বছরে ফ্রি স্টাইলে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির  বৈদ্যুতিক তার ও ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। এসব ঘটনায় মাঝে মধ্যে দুয়েকটি মামলা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় বেশিরভাগ মামলা ঝুলে থাকে। আর আসামিরা পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করে অব্যাহতি নেয়। সম্প্রতি পাগলাপীর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির দুটি ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। সূত্রমতে, উত্তরাঞ্চলে পল্লী বিদ্যুতের যাত্রা শুরু হয় ১৯৮৬ সালে। প্রথম অবস্থায় কিছুটা ভালোভাবে চললেও ১৯৯০ সালের পর থেকে শুরু হয় ফ্রি স্টাইলে তার ও ট্রান্সফরমার চুরি। গত ৩০ বছরে উত্তরাঞ্চলের ১৮টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৫২ হাজার কিলোমিটার তার চুরি হয়েছে। চোরাই এসব তারের আনুমানিক বাজারমূল্য ৫০০ কোটি টাকার বেশি। এ ছাড়া ট্রান্সফরমারও চুরি হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার। যার মূল্য হাজার কোটি টাকার বেশি। ট্রান্সফরমার ও তার চুরি হয়েছে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। সেই হিসাবে প্রতিটি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গড়ে দুই থেকে আড়াই হাজার ট্রান্সফরমার ও তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার তার চুরি হয়। এসব চুরির ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানাগুলোতে দেড় হাজারের বেশি ফৌজদারি মামলা হয়েছে। তবে, এসব মামলার বেশিরভাগই সাক্ষী-সাবুদ না থাকার অজুহাতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে বলে সমিতির অভিযোগ রয়েছে।

 এ ছাড়া সাক্ষ্য প্রমাণ ও সুষ্ঠু মনিটরিং না থাকায় ৮০ ভাগ মামলাই রয়ে গেছে ডিপ ফ্রিজে। পাগলাপীর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জি এম হারুন অর রশিদ জানান, চুরি ঠেকাতে মামলা করায় আগের চেয়ে এ জাতীয় ঘটনা অনেক কমেছে। এখন আগের মতো চুরি হয় না। মামলাগুলো কী অবস্থায় রয়েছে তা ফাইল না দেখলে বলতে পারব না বলে তিনি জানান।

শঠিবাড়ি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার নুরুর রহমান জানান, এ সময় তার ও ট্রন্সফরমার চুরি হলেও এখন ওই প্রবণতা কমে গেছে।  তিনি বলেন, থানায় মামলা করা হলে আসামিরা পুলিশকে ম্যানেজ করে অব্যাহতি পেয়ে যাচ্ছেন। তবে এখনো অনেক মামলা চলমান রয়েছে।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর