রংপুরে করোনা আক্রান্তের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে তরুণরা। তরুণদের ফ্রিস্টাইল চলাফেরায় উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা। উৎকণ্ঠায় স্বাস্থ্য বিভাগ। মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হলেও তা মানছে না ৯৫ শতাংশ তরুণ। এ বিষয়ে প্রশাসনের নজরদারি জোরদার করার দাবি জানান অভিভাবকরা। এদিকে রংপুরের ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক গতকাল নীলফামারীতে সরকারি কাজে গেলে তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেছেন, ‘এক স্থানে দাঁড়ালাম। সেখানে এক শ জনের মধ্যে মাত্র তিনজনের মুখে মাস্ক দেখলাম। এ অবস্থা চলতে থাকলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’ রংপুর সিভিল সার্জনের তথ্যমতে করোনা আক্রান্ত হয়ে জেলায় এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৪১ জন। বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ৬০৫। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ১৫২ জন। রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে প্রতিদিন ১৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে গড়ে ৩০-৪০ জন করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হচ্ছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, তুলনামূলক বয়স্করা কিছুটা মানলেও তরুণদের স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বালাই নেই। অধিকাংশ তরুণ মাস্ক ছাড়া পাড়া-মহল্লায় দল বেঁধে আড্ডা দিচ্ছে। একসঙ্গে তিন-চার জন মোটরসাইকেলে ঘুরে বেড়াচ্ছে। মহানগরের পায়রা চত্বর, জাহাজ কোম্পানির মোড়, সেন্ট্রাল রোড, সাত মাথা, মডার্ন মোড়সহ বিভিন্ন মোড়ের চায়ের দোকানগুলো সন্ধ্যার পরও তরুণ ও যুবকদের পদচারণে মুখর থাকে। কামলাকাছনার অভিভাবক সামছুল হুদা, মজনু মিয়া, মকসুদ হোসেনসহ অনেকেই অভিযোগ করলেন ছেলেরা যে ভাবে চলাফেরা করছে এতে রংপুরে করোনা সংক্রমণের হার বাড়বে। এদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে বাধ্য করা না হলে খুব কম সময়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুন হয়ে যেতে পারে। তারা স্বাস্থ্যবিধি মানতে বাধ্য করার জন্য প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা জোরদার করার আহবান জানান। বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. সুলতান আহমেদ বলেন, ‘বাজারে গেলে মনে হয় দেশে করোনা নেই। অধিকাংশ মানুষের মুখে মাস্ক নেই। মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করতে না পারলে সংক্রমণের হার বেড়ে যাবে।’ তিনি তরুণদের উদ্দেশে বলেন, ‘বেপরোয়া চলাফেরার কারণে তরুণরা আক্রান্ত হলে সংক্রমণ অভিভাবকদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই অভিভাবকদের নিরাপত্তার জন্য হলেও তরুণদের মাস্ক পরা উচিত।’
